ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

ফুটবল

একি হাল! দেখার কেউ নেই?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৭
একি হাল! দেখার কেউ নেই? একি হাল! দেখার কেউ নেই?

দিনটি ৩ মে ছিল। এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শ’দুয়েক দর্শকের সমাগম। ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে খেলবে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ক্লাবের খেলা দেখতেই টিকিট কিনে গ্যালারিতে বসে আছেন দর্শকরা। যেখানে এক হয়ে জমাট বেঁধে সমর্থন দেয়ার কথা সেখানে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গ্যালারির বিভিন্ন প্রান্তে বসে আছেন সমর্থকরা।

কারণটা জানতেই ঢুঁ মারা গ্যালারিতে। হাতে গোনা যে শ’দুয়েকের মতো সমর্থক তারপরেও এভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকার কারণ কি? প্রশ্নটা ছুড়ে দেওয়া শেষ হয়নি, তার আগেই এক সমর্থক জানান, ‘এমনিতে দেশের ফুটবলের অবস্থা বেগতিক।

তার উপর যারা ক্লাবের সমর্থনে টাকা দিয়ে টিকিট কেটে খেলা দেখতে এসেছে তারা ঠিকমতো বসতেই পারছে না। বেশিরভাগ আসনই ভাঙা। অনেক দিন ধরেই এরকমটা দেখছি। কোনও সংস্কার হচ্ছে না। ’

দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে এভাবেই বাংলানিউজের প্রতিবেদককে নিজের হতাশার কথাগুলো বলছিলেন এক ফুটবল সমর্থক।

রাজধানীর ভেতরে বলতে যা এক বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। দেশের বিভিন্ন বয়সের টুর্নামেন্টসহ ঘরোয়া ফুটবল লিগের আয়োজন হয় এই স্টেডিয়ামে। সেই ফুটবল স্টেডিয়ামে আসনগুলোর এমন বেহাল অবস্থা!

সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের আসন আছে ঠিকই, তবে সিংহভাগ আসনই ভেঙে গেছে। কোনো আসনের বসার জায়গায় ভাঙা, তো কোনো আসনের হেলান দেয়ার জায়গা দু’ফাঁক। কোথাও কোথাও তো সিটের অস্তিত্বই নেই। আবার কিছু কিছু জায়গায় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ পড়ে রয়েছে। বেশিরভাগ সিটই অপরিস্কার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশের জাতীয় ও প্রধান এই স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতা ৩৬ হাজার। শুধু ভিআইপি সিটগুলোর খুব একটা সংস্কারের প্রয়োজন নেই। বাকী সিটগুলোর সিংহভাগই ভেঙে গেছে।

এই বেহাল অবস্থা সম্পর্কে অবশ্য অবগত দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বাফুফে। বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বাবুল বাংলানিউজকে জানান, ‘এই বিষয় সম্পর্কে আমরা জানি। ক্রীড়া পরিষদকে বলা হয়, চিঠি দেয়া হয়। তারা কখনও কখনও ঠিক করে। কিছু কিছু কাজ কন্ট্রাক্টর করে। অনেক আগে চিঠি দিয়েছি। তারা যথাযথভাবে করছে না। সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। তারা নিজেদের মতো কাজ করে। ’

কত আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, অনেকদিন আগে পাঠিয়েছি। মনে নেই সঠিক তারিখটি।

বহুদিন আগে চিঠি পাওয়া সত্ত্বেও স্টেডিয়ামের এমন বেহাল অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে না। এখনও কাজ শুরু করেনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার বাংলানিউজকে জানান, এর সংস্কার কাজের জন্য আমরা প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। আগামী দশদিনের মধ্যে এই প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো, সেখান থেকে পাশ হলেই টেন্ডার নিয়ে কাজ শুরু করে দেব।

এসব কার্যক্রম শেষ করে সংস্কার কাজ শুরু করতে কতদিন লাগতে পারে সেই বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রস্তাবনা করতে তো অনেক সময় লাগে। সেটি প্রস্তুত হলে মন্ত্রণালয়ে যাবে।

মন্ত্রণালয় থেকে পাশ হলে সেটা আবার টেন্ডার ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ শুরু হবে। এরপর শুরু হবে সংস্কার কাজ। কতদিনে কাজ শুরু হবে তা না জানলেও দুই-তিন দিনের মধ্যে ফেডারেশন কাপ শুরু হতে যাচ্ছে এই স্টেডিয়ামেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, ১১ মে, ২০১৭
জেএইচ/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।