সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জিদানের লম্বা কোচিং ক্যারিয়ারই প্রত্যাশা করছেন ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলা ডমেনেখ। তার বিশ্বাস জিদানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রিয়াল তাদের খেলোয়াড়দের অপসারণ করবে।
গত বছরের জানুয়ারিতে লস ব্লাঙ্কসদের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাতটি শিরোপা জিতেছেন জিদান। তার অধীনে ব্যাক-টু-ব্যাক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের রেকর্ড গড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তৃতীয় মৌসুমে এসে কঠিন সময় পার করছেন ৯৮’র বিশ্বকাপ জয়ী।
এই সিজনের শুরুটা মোটেও ভালো হচ্ছে না ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের। লা লিগায় শিরোপা ধরে রাখার মিশনে ১২ ম্যাচ শেষে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে গেছে জিদানের শিষ্যরা। এতো ব্যবধানে পিছিয়ে কেউই নাম্বার ওয়ান পজিশনে উঠতে পারেনি। ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের আসর চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে গ্যালাকটিকোরা। গ্রুপ পর্বের আর দুই ম্যাচ বাকি। টটেনহামে গিয়ে সবশেষ ম্যাচ হেরে নকআউট পর্ব নিশ্চিতের অপেক্ষাটা দীর্ঘায়িত হয় তাদের।
সব মিলিয়ে চাপের মুখে জিদান। তবে এ নিয়ে খুব বেশি যে উদ্বিগ্ন নন সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে শনিবারের (১৮ নভেম্বর) মাদ্রিদ ডার্বি ড্রয়ের পরও দল সঠিক পথে রয়েছে বলে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন রিয়াল কোচ।
গুঞ্জন উঠে মাদ্রিদের ডাগআউটে জিদানের শক্ত অবস্থান এখন নড়বড়ে। মোটেও তেমনটি ভাবছেন না ৬৫ বছর বয়সী ডমেনেখ। জোর দিয়ে বলছেন, জিদান নয়, খেলোয়াড়দের তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় করা উচিৎ।
গোল ডট কম’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডমেনেখ বলেন, ‘স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দিকে তাকান, তারও সমস্যা ছিল। তিনি হয়তো বরখাস্ত হওয়া থেকে এক বা দুই ম্যাচ দূরে ছিলেন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে তার সময়টায় খারাপ সময় অতিবাহিত করেছিলেন কিন্তু আমরা দেখেছি পরে তিনি কি করেছেন। ’
‘এমনকি বড় বড় কোচদেরও সমস্যা রয়েছে, কিছু সময়ে আপনাকে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনাকে আবারো ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আপনি ইউরোপে প্রতি মৌসুমে জিতবেন না, প্রতি সিজনে স্পেনের চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন না। এটার সঙ্গে বসবাস করাটা কঠিন কিন্তু তাকে এর সঙ্গেই থাকতে হবে। ’-যোগ করেন জিদানের সাবেক কোচ।
রিয়ালে জিদানের একটা আলাদা অবস্থান রয়েছে বলে দৃঢ় বিশ্বাস ডমেনেখের, ‘আমি মনে করি রিয়ালের অন্য কোচদের চেয়ে জিদানের বিষয়টা ভিন্ন। সে মাদ্রিদের গ্রেট খেলোয়াড়। কোচ হিসেবে দু’বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছে। বার্সাকে টপকে লা লিগা জয় করেছে। তাকে ভুলে যেতে সমর্থকদের দীর্ঘ সময় লাগবে। প্রথমে খেলোয়াড়রা অপসারিত হবে, এরপর থাকবে একমাত্র জিদান। ’
ক্লাব ফুটবলে দীর্ঘ সময় এক টিমে থাকা অন্য সফল কোচদের তুলনাও টেনে আনেন ডমেনেখ, ‘সফলতার জন্যই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনাল (আর্সেন ওয়েঙ্গার) কোচদের ব্যাপারে ধৈর্য প্রদর্শন করেছে। মানুষ মনে করে অর্থ দিয়েই রাতারাতি ইউরোপে সেরা দল হওয়া সম্ভব। না, তাদের সময় দরকার। আমি মনে করি না এই মানসিকতাটা পরিবর্তন হবে। ’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য মিডিয়াকেও দুষছেন ডমেনেখ, ‘মিডিয়ায় এখন একটি খারাপ ফলাফল হলেই বলে কোচের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। দু’টি খারাপ ফলাফলও সমস্যা এবং তিনটি খারাপ ফলাফলের পর তারা নতুন একজনকে চায়, এটাই বড় সমস্যা। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ২১ নভেম্বর, ২০১৭
এমআরএম