আর এই জয়ে লিভারপুলকে হটিয়ে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা ফের শীর্ষস্থানের ম্যাজিক চেয়ারটা দখলের কাজটাও সেরে নিল। সিটির হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন আলজেরিয়ান মিডফিল্ডার রিয়াদ মাহারেজ।
ম্যাচের স্কোর লাইন আসল চিত্রটা তুলে ধরতে পারবে না। কেননা, একক আধিপত্য কাকে বল ও কত প্রকার সব স্বাগতিকদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আগুয়েরো-মাহারেজরা। ৮৩% বল দখলে রেখেছে সিটিজেনরা। গোলমুখে শট সিটির ৭টি শটের বিপরিতে বোর্নমাউথ কোনো শটই নিতে পারেনি। সিটির ৮১০টি পাসের বিপরীতে বোর্নমাউথের খেলোয়াড়রা পাস দিতে পেরেছেন মাত্র ১৭৬টি। সঠিক পাসের হিসেবে সিটি যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে। আর পুরো ম্যাচে অলস সময় কাটিয়েছেন ম্যানসিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদারসন। বাকিগুলো আর নাই বলি।
প্রতিপক্ষের চেয়ে সবদিক থেকেই এগিয়ে থেকেও অবশ্য পুরো ম্যাচে মাত্র ১টি গোল দিতে পেরেছে সিটি। এর জন্য বোর্নমাউথের অতি রক্ষণাত্মক খেলা আর সিটির ফরোয়ার্ডদের গোল মিসের মহড়াই অনেকাংশে দায়ী। তবে ডেভিড সিলভার পাস থেকে মাহারেজ গোল করায় বিজয়ীর হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়তে পেরেছে সিটি, সঙ্গী হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান দখলের আনন্দ। তবে তাদের এই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে, কারণ রোববার(৩ মার্চ) মাঠে নামবে লিভারপুল।
শনিবার (২ মার্চ) ডিন কোর্টে ম্যাচের ১৯ মিনিটেই গোল পেয়ে যেত ম্যানসিটি। ডানপ্রান্ত থেকে আক্রমণ সাজিয়ে এগিয়ে আসেন কেভিন দে ব্রুইনি। রক্ষণে বাধা পাওয়ার আগেই ব্যাক-পাস করে পেনাল্টি অঞ্চলে বল পাঠিয়ে দেন তিনি। কিন্তু অমন সুযোগ পেয়েও বল পোস্টের বাইরে মেরে বসেন ডেভিড সিলভা।
৩১ মিনিটে সিটির আর্জেন্টাইন তারকা নিকোলাস ওতামেন্দির দুর্দান্ত প্রচেষ্টা বিফলে যায়। দে ব্রুইনির কর্নার কিক থেকে বল ঠাঁই দেয় বোর্নমাউথের ডি-বক্সে। সেখানে অনেকটা ফাঁকায় থাকা সত্ত্বেও হেড করে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে মারেন ওতামেন্দি।
প্রথমার্ধে গোল না পাওয়াতেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দে ব্রুইনিকে তুলে নিয়ে রিয়াদ মাহারেজকে নামান গার্দিওলা। তার এই জুয়া কাজেও লাগে। ৫৫ মিনিটেই দলকে কাঙ্ক্ষিত গোলটি এনে দেন এই আলজেরিয়ান। এবারও আক্রমণের মূল হোতা ডেভিড সিলভা। তার বানিয়ে দেওয়া বলে প্রথমবারেই পা লাগিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন মাহারেজ।
গোল দিয়ে আরও বেশি আক্রমণ শানাতে থাকে সিটি। ৭৭ মিনিটে তো প্রায় ব্যবধান দিগুন হয়েই গিয়েছিল। এবার ইংলিশ তারকা স্টার্লিং প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের ভুলে বল পেয়ে গোলরক্ষককে গোলমুখ থেকে অনেকটা বাইরে বের করে এনেছিলেন। কিন্তু ওই এগিয়ে এসে ডাইভ দিয়ে স্টার্লিংয়ের প্রচেষ্টা রুখে দেন বোর্নমাউথের গোলরক্ষক। অবশ্য তাতেও তার হাত ফসকে বল চলে যায় মাহারেজের পায়ে। কিন্তু দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েও বল ক্রসবারের বাইরে মেরে বসেন তিনি।
ম্যাচে এভাবে ৭বার সরাসরি কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয় বোর্নমাউথের গোলরক্ষককে। কিন্তু মাহারেজের ওই এক গোল ছাড়া আর কোনো সুযোগ দেননি তিনি। এক্ষেত্রে কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা থাকলেও বোর্নমাউথের হয়ে যে একমাত্র তিনিই বীরত্ব দেখিছেন একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শীর্ষে থাকা ম্যানসিটির পয়েন্ট এখন ২৯ ম্যাচে ৭১। একধাপ নীচে নেমে যাওয়া লিভারপুল (৬৯ পয়েন্ট) অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে। ৬১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে টটেনহাম হটস্পার। রাতের আরেক খেলার সাউদাম্পটনকে হারিয়ে চারে স্থান করে নিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর বোর্নমাউথ আছে তালিকার ১২তম স্থানে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৯
এমএইচএম/এসআইএস