২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রবিনসনের দেহে স্কিন ক্যান্সার বাসা বাঁধে। কিন্তু তা ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই সত্ত্বেও টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার ও ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
রবিনসনের জন্ম হয়েছিল ইংল্যান্ডের লেস্টারে এক আইরিশ পরিবারে। ১৯৭৫ সালে প্রেস্টন নর্থ এন্ড'র হয়ে যুব ফুটবলে অভিষেক হয় তার। তরুণ বয়সেই তিনি ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেন। কিন্তু নিজের পরবর্তী ঠিকানা ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিওনে খেলার সময় লিভারপুলের নজরে পড়েন তিনি।
লিভারপুল অনেকটা বাধ্য হয়েই রবিনসনকে কিনে নিয়েছিল। কারণ 'অলরেডস'র বিপক্ষে বরাবরই দারুণ খেলতেন তিনি। এমনকি মুখোমুখি হওয়া অধিকাংশ ম্যাচেই তিনি গোল করে বসতেন। তাই ১৯৮৩ সালে তাকে কিনে নেয় লিভারপুল। তবে নতুন ঠিকানায় মূল একাদশে জায়গা পেতে ইয়ান রাশের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে।
অ্যানফিল্ডে দুই মৌসুম কাটিয়েছেন রবিনসন। এর মধ্যে ১৯৮৪ সালে প্রিমিয়ার লিগ, লিগ কাপ এবং ইউরোপিয়ান কাপ জেতার স্বাদ পেয়েছেন। রোমার বিপক্ষে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে তিনি অনেক দেরিতে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন। ওই ম্যাচ প্যানাল্টিতে গড়ায়। কিন্তু তিনি পেনাল্টি শট নেওয়ার আগেই ম্যাচ জিতে যায় লিভারপুল। মজার ব্যাপার হলো, ইউরোপিয়ান কাপের শিরোপা ভুলে রোম এয়ারপোর্টের একটি ডিউটি ফ্রি শপে ফেলে এসেছিলেন রবিনসন। পরে অবশ্য বাড়ি ফেরার আগেই তার মনে পড়ে যায় আর শিরোপা উদ্ধারও হয়।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্পেনে পাড়ি জমান রবিনসন। ১৯৮৬ সালে তিনি স্প্যানিশ ক্লাপ ওসাসুনাতে যোগ দেন। সেখানে খুব দ্রুতই মানিয়ে নেন তিনি। সতীর্থ এবং সমর্থকরাও তাকে বেশ পছন্দ করতেন। কিন্তু টানা হাঁটুর ইনজুরি আগেভাগেই তার ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়। ১৯৮৯ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সেই বুটজোড়া তুলে রাখেন তিনি।
খেলা ছাড়লেও স্পেন ছাড়েননি রবিনসন, কারণ সেখানকার জীবনযাত্রায় তিনি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি নিজেই একবার বলেছিলেন, 'আমি ফুটবল খেলতে এসেছিলাম এবং এখানে এসে স্পেনের প্রেমে পড়ে গেলাম। ' বুটজোড়া তুলে রাখার কয়েক মাস পরেই স্পেনের 'ক্যানাল+' চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। সেখানে ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে নাম কামানোর পর আরও একটি চ্যানেলের হয়ে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।
রবিনসনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে তার তিন সাবেক ক্লাব- লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি ও ওসাসুনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২০
এমএইচএম