ঢাকা: রাজধানীসহ দেশব্যাপী বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তবুও পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে হয়েছে।
অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন ও নিচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বিভাগগুলোতে।
চিকিৎসাকরে বলছেন, রোজার কারণে এমনিতেই রোগীর সংখ্যা কম। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিনগত রাতে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নতুন ভবনের ৬০২ নম্বর ওয়ার্ড গিয়ে দেখা যায় রাজধানীর কামরাঙ্গীচর রনি মার্কেট এলাকার বাসিন্দা আবদুর রশিদ (৭০) ট্রলির উপরে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার ছেলে বারবার বাবাকে প্লাস্টিকের হাত পাখা ঘুরিয়ে বাতাস করে যাচ্ছেন। এসময় রোগী তার ছেলেকে বারবার বলছে, খুব গরম লাগছে, অস্থির লাগছে।
আবদুর রশিদের ছেলে মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, বাবার প্রেশার হাই হয়ে গেছে। পাশাপাশি আগে থেকে ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত। এখানকার চিকিৎসকরা বলছেন, তাকে এখনই চিকিৎসা দিতে হবে, না হলে স্ট্রোকের দিকে যেতে পারে।
তিনি জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে তার বাবার এমন হয়েছে বলে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, রমজানের কারণে এমনিতেই রোগীর সংখ্যা কম আছে। না পারতে কেউ হাসপাতাল মুখী হয় না। তবুও এই প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে ও নিচ্ছে।
জরুরি বিভাগের এক নম্বর রুমের দায়িত্বরত এক নারী চিকিৎসক বলেন, আজকেও অতিরিক্ত গরমের কারণে বেশ কয়েকজন রোগী আমরা পেয়েছি। যারা বাইরে কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ বমি করেছেন। তাদের প্রেসার হাই হয়েছে। দ্রুত সেইসব রোগীদের মেডিসিন ওয়ার্ডে রেফার করা হয়েছে। তবে তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা তেমন বেশি না। রোজার কারণে এমনিতেই রোগীর সংখ্যা কম।
এদিকে হাসপাতালে বহির্বিভাগের মেডিসিন বিভাগের প্রধান আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) শাইখ আব্দুল্লাহ বলেন, বেশ কয়েকদিন যাবত সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত গরম কারণে অসুস্থ হওয়া রোগী পাচ্ছি। এ সমস্যা নিয়ে আসা ঢাকাসহ দেশ দেশব্যাপী মোটামুটি অনেকেই আমাদের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে কারও ডায়রিয়া, কোনো রোগীর মাথাব্যথা, কারও আবার পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এছাড়া গরমে কাজ করার কারণে অনেকেরই প্রেসার হাই হয়ে যায়। এরকম রোগীদের আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে থেকে যাদের ভর্তি করা দরকার দ্রুত ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এবং ওয়ার্ডে গিয়ে তারা চিকিৎসা নিয়েছেন ও স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০২ নম্বর ও ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডের বৃহস্পতিবার ভর্তির নির্দিষ্ট নিয়ম ছিল। সেই দুটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য মেডিসিন রোগীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন গরমে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া পাশাপাশি অন্য রোগেও আক্রান্ত তারা।
এদিকে হাসপাতালে বাউন্ডারির পাশের রাস্তায় কয়েকজন ভ্যানচালককে দেখা যায় অতিরিক্ত গরমের কারণে মাথায় কিছু একটা দিয়ে যার যার ভ্যানে একটু প্রশান্তির জন্য ঘুমিয়ে আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৩
এজেডএস/এসএএইচ