ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৮ জনের অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৮ জনের অপারেশন বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে রোগীর বিনামূল্যে চোখের অপারেশন। ছবি: রাজিন চৌধুরী

ঢাকা: বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গরিব ও দুস্থ ৩৮ জন রোগীর বিনামূল্যে চোখের অপারেশন করা হয়েছে। এদের সবারই চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও দোয়ারকাদাস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ অপারেশনের আয়োজন করা হয়েছে।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে এ সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার ও  ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি। এবারের সার্জারিতে ১২ জন পুরুষ ও ২৬ জন নারীসহ মোট ৩৮ জন রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়েছে।

চোখের ছানি অপারেশন করতে আসা ইদ্রিস আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমি ৫-৭ বছর ধরে চোখের সমস্যা নিয়ে ভুগছি। প্রথমে আমি ঝিনাইদহ টার্মিনালে চোখের ডাক্তার দেখাই। তারা আমার কাছে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চেয়েছে। যেহেতু আমার কাছে এতো টাকা নেই তাই আমি অপারেশন করতে পারিনি। এরপর কুষ্টিয়ায় দেখালাম একটা চশমা দিলো। চশমা চোখে দিলে ভালো দেখা যায়। কিন্তু চশমা ছাড়া কাজ করতে পারি না। এরপর আরেক জায়গায় দেখালাম। তারাও বললো টাকা লাগবে। এখন এতো টাকা আমি কই পাবো। তাই ডাক্তার দেখানো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এরপর এরা যখন গেলো তখন সবাই বললো আরেকবার দেখান। এরা দেখে বলে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হোন। আমি বললাম টাকা নেই। তখন ডাক্তার বলেন, কোনো টাকা লাগবে না। একদম বিনা পয়সায় আপনার চোখ ভালো করে দেবো। আমার এখন খুব ভালো লাগছে। আমি মেলা জায়গায় গিয়েছি। কিন্তু এ জায়গার এতো ভালো চিকিত্সা ও সেবা আর কোথাও পাইনি।

একই কথা জানান কুষ্টিয়ার বাসিন্দা সাজেদা খাতুন। তিনি বলেন, আমি দুই বছর ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছি। একবার ডাক্তার দেখাই ছিলাম। দেখানোর পর বলে অপারেশন করতে হবে। আমি বললাম স্যার আমি গরিব মানুষ। টাকা-পয়সা নাই তাই করতে পারছি না। পরে তারা আর কিছু বলেনি। কিছু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। কিছুদিন আগে আমার মেয়ে কলেজ মাঠে নিয়ে যায়। বলে ঢাকা থেকে বড় ডাক্তার এসেছে। কোনো টাকা-পয়সা ছাড়াই তারা অপারেশন করে দেবে। তারপর তো তারাই সবকিছু করলো। আল্লাহ এদের ভালো করুক। এরা যেন সব সময় ভালো থাকে সেই দোয়াই করি।

এবারের অপারেশনের বিষয় জানতে চাইলে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিত্সার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় অনেক আগে থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ৫৫৫ জনের বেশি রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুরে দোয়ারকাদাস আগরওয়ালা মহিলা কলেজ মাঠে চক্ষু চিকিত্সা ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। ওই ক্যাম্পে প্রায় এক হাজার ৫০০ রোগী চিকিত্সা সেবা নেন। এর মধ্যে ৩০০ জনকে চোখের ছানি, নেত্রনালি ও মাংস বাড়ার কারণে অপারেশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তারই ২য় ব্যাচের ৩৮ জন রোগীর অপারেশন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
ইএসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।