ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

যক্ষ্মা চিকিৎসায় সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
যক্ষ্মা চিকিৎসায় সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান

ঢাকা: যক্ষ্মা চিকিৎসায় সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।

মঙ্গলবার (৪ জুন) আইসিডিডিআর,বির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে আইসিডিডিআর,বি জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও দ্য স্টপ টিবি পার্টনারশিপের সহযোগিতায় ‘যক্ষ্মা চিকিৎসা ও নির্মূলে পলিসি  অ্যাডভোকেসি ও বেসরকারিখাতের যুক্তকরণ’ শীর্ষক সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

যক্ষ্মা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য সক্ষমতা বাড়ানো ও বেসরকারি খাতকে যুক্ত করার লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় বলা হয়, বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্ণয় এবং চিকিত্সার আওতা বাড়াতে পাবলিক-প্রাইভেট মিক্স (পিপিএম) অপরিহার্য। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আরও বেশি জনগোষ্ঠীর কাছে সময়মত ও কার্যকর যক্ষ্মা চিকিৎসা পৌঁছানোর সুযোগ আছে। পিপিএম কৌশলের মাধ্যমে উন্নত যক্ষ্মা সেবা সবার জন্য দেওয়ার সুযোগ আছে বাংলাদেশে।

আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বাংলাদেশে যক্ষ্মা গবেষণায় আইসিডিডিআর,বির ভূমিকা ও যক্ষ্মা বিষয়ক জাতীয় নীতি ও নির্দেশিকা তৈরিতে ও বাস্তবায়নে আইসিডিডিআর,বির অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যক্ষ্মার ব্যাপ্তি যেরকম সেটি সরকারের একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এবং এক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে এসে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এ কাজটি করতে হবে। এর একটি উদাহরণ হিসেবে আইসিডিডিআর,বি সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক এবং ফার্মেসির মালিকদের একটি নেটওয়ার্ক এর আওতায় নিয়ে আসার কথা বলা যায়। এর মাধ্যমে যেসব রোগীরা অনেকদিন ধরে কাশিতে ভুগছেন তাদের আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত টিবি সেন্টারগুলোতে রেফার করা হয় এবং এখানে অত্যাধুনিক জিনএক্সপার্ট ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে যক্ষ্মা নির্ণয় করা হয়।

জার্নি টু কিউর নামে একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনার মাধ্যমে যক্ষ্মা মোকাবিলায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও সহযোগিতা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপরে বেসরকারি খাতের নানা প্রচেষ্টা তুলে ধরা হয়। ‘বাংলাদেশে পাবলিক-প্রাইভেট মিক্স পলিসি অ্যাডভোকেসি’ বিষয়ে একটি উপস্থাপনায় বিভিন্ন নীতি ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।  

সভায় টিবি পিপিএম স্টেকহোল্ডাররা যক্ষ্মা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের সম্মিলিত কর্তব্য ও পিপিএম উদ্যোগকে শক্তিশালী করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ চিহ্নিত করেন।  

লাইন ডিরেক্টর, টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি ডা. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার বলেন, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে টেকসই সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দেন।

ইউএসএআইডি বাংলাদেশ, ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর, ওপিএইচএন মিরান্ডা বেকম্যান বাংলাদেশের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য ইউএসএআইডির প্রতিশ্রুতি ও বেসরকারি খাতকে জড়িত করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোগের সম্পৃক্ততা নিয়ে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেন, যক্ষ্মা রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। এ সামাজিক আন্দোলনে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবার সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আইসিডিডিআর,বির সহযোগিতায় জাতীয় সংসদের সদস্যদের দ্বারা ইতোমধ্যেই ‘সংসদীয় যক্ষ্মা ককাস’ গঠন করা হয়েছে। এ সংসদীয় প্ল্যাটফর্মটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যক্ষ্মা প্রতিরোধে প্রাসঙ্গিক লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা যক্ষ্মাকে পরাজিত করব।

ডা. সায়েরা বানু, সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও প্রধান, পিইআই, আইডিডি সব অংশগ্রহণকারী, স্টেকহোল্ডার ও যক্ষ্মা আন্দোলনে যুক্ত সব অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূলে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সভায় যক্ষ্মার বিরুদ্ধে দেশে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার জন্য কার্যকর নীতি তৈরি ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। সরকার, এনজিও ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা যক্ষ্মা নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৪
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।