ঢাকা: ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুল রাজধানীর গ্রিন রোডের কমফোর্ট হাসপাতালে নাকের সমস্যাজনিত কারণে অস্ত্রোপাচারের সময় মারা গেছেন। পরিবারের দাবি, হাসপাতালের চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে সামসুদ্দোহার ভাগ্নে আদনান সাকিব রিয়াদ মোবাইলে ফোনে বাংলানিউজের কাছে এ অভিযোগ করেন। পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আদনান সাকিব রিয়াদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল (২০ আগস্ট) সাড়ে ৩টার দিকে মামা সামসুদ্দোহা নাকের ভেতরে সমস্যাজনিত কারণে কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে নাকের সেফটি প্লাস্টিক সার্জারি করার জন্য চিকিৎসক প্রফেসর ডা. জাহের আল-আমীন তার মামাকে আনুমানিক রাত ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি) নিয়ে যান। সামান্য একটি অপারেশন, নাকের ভেতরে মাংসপিণ্ড বেড়ে গেছে; অথচ মামাকে ওটিতে নেওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা অপেক্ষা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সেই চিকিৎসকের কাছে জানতে চাওয়া হয় মামার বিষয়, চিকিৎসক অনেকক্ষণ পরে জানান, একটি ভুল হয়ে গেছে। পরে মামার মৃত্যুর সংবাদ দেন।
আদনান সাকিব রিয়াদ আরও বলেন, অস্ত্রোপাচারের পর মামা হার্ট অ্যাটাক করেন বলে সেই চিকিৎসক যা ইচ্ছা তাই বলতে থাকেন আমাদের। পরে আমরা আত্মীয়-স্বজনরা তার অচেতন নিথর দেহ সেই কমফোর্ট হাসপাতাল থেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনি। এখানে আজ ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সামসুদ্দোহার ভাগ্নে বলেন, শুনেছি এই ডাক্তারের আগেও ভুল চিকিৎসার কারণে লাইসেন্স বাতিল হয়েছিল। আমার মামা সেই চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে মারা গেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কমফোর্ট হাসপাতালের মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও কারও সাড়া মেলেনি।
কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির জানান, সামসুদ্দোহার পরিবার থেকে একটি এজাহার দিয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। কমফোর্ট হাসপাতালের অভিযুক্ত চিকিৎসকও পুলিশ হেফাজতে আছেন।
ঢামেক হাসপাতাল মর্গে সামসুদ্দোহা শিমুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপে শোকের ছায়া
এদিকে সামসুদ্দোহা শিমুলের মৃত্যুতে তার পরিবারসহ মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের সব সদস্য ও তার পরিবার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ওই ডাক্তারসহ দোষী সবাইকে আইনের আওতায় এনে অতি দ্রুত বিচার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনুসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী গভীরভাবে শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
এজেডএস/এইচএ/