ঢাকা: রান্নার একটি সহজলভ্য উপকরণ হলুদ। আমরা সাধারণত রান্নায় গুঁড়ো করে বা বেঁটে হলুদ ব্যবহার করে থাকি।
রান্নায় হলুদ ব্যবহারে শুধু তরকারির রঙই পরিবর্তন হয় না, এটি খাবারকে জীবাণুমুক্তও করে। শুধু রান্না কেন, পথ্য ও ত্বকের যত্নেও হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহুকাল আগে থেকে।
আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির একটি জার্নালে বলা হয়েছে, হলুদে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান।
শুধু জীবাণুনাশেই নয়, এটি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানেও পরিপূর্ণ। রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, নিয়াসিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক। এসব উপাদান থাকায় হলুদ ওষুধ হিসেবেও সেবন করা হয়। তবে জেনে নেওয়া যাক হলুদের গুণাগুণগুলো।
হলুদ প্রস্টেট বা মূত্রনালীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। যারা এ ক্যান্সারে আক্রান্ত তারা নিয়মিত হলুদ খেলে উপকার পাবেন। কারণ হলুদ প্রস্টেট ক্যান্সারকে শরীরে বেড়ে উঠতে দেয় না। তেমনি ক্যান্সার সেলগুলোকেও বিনষ্ট করে ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা টিউমারের আকার কমিয়ে আনে। হলুদ লিউকেমিয়া ও কোলন কার্সিনমাসের টিউমার সেলের বৃদ্ধিও প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় এটি বাতের ব্যথা ও ফোলাভাব কমায়। হলুদের মধ্যকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের কোষকে সুরক্ষিত রাখে।
হলুদ রক্তে শর্করা ও ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, পেটে হঠাৎ গ্যাস, ক্ষুধামন্দা ও যকৃতপীড়ার সহজ সমাধান হলুদ।
মাথাব্যথা, ব্রঙ্কাইটিস, সর্দি, জ্বর, ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা ও ফুসফুসে ইনফেকশন সারাতে হলুদের রস খাওয়া যেতে পারে। এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ হলুদ বাটা ও মধু দিয়ে খেতে পারেন। চিবিয়েও খেতে পারেন হলুদ।
এছাড়া মানসিক অবসাদ, আলজেইমার্স ও কিডনির সমস্যা দূর করতেও হলুদের জুড়ি নেই।
হলুদবাটা ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। বিভিন্ন সংক্রামক রোগ বা ত্বকের যেকোনো সমস্য দূর করে। হলুদের কুষ্ঠরোগ সারাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রতিদিন হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে তা শরীরের জন্য খুবই ভালো ফলদায়ক। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন অন্তত দুই চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা খাওয়া উচিত। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে একটু বুঝে খাওয়া উচিত।
যদি শিশুর ওজন ২২ কেজি বা এর আশেপাশে হয়, তাহলে এক থেকে দুই চা চামচ, যদি ৪৪ কেজির আশেপাশে হয় তাহলে এক চা চামচ দেওয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৫