ঢাকা: রাজধানীর লালমাটিয়ার এশিয়ান কার্ডিয়াক অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার রাতে মাত্র এক ঘণ্টায় তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে হাসপাতালটিতে গত এক সপ্তাহে ছয় শিশুর মৃত্যু হলো।
চিকিৎসক-নার্সের অভাবে এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতদের স্বজনরা।
এ ঘটনায় শনিবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তিকে ধাওয়া দিয়ে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে তাদের মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। চিকিৎসকের অভাব ও নানা অব্যবস্থাপনায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে অন্য রোগীর অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হয়ে শিশুদের নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা।
ভবনের কেয়ারটেকার আবদুল জলিল বাংলানিউজকে জানান, তিনি শুনেছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে এখানে ছয়জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি।
এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম বাংলিনিউজকে বলেন, লালমাটিয়ার এশিয়ান হাসপাতালের কোনো ভূক্তভোগী এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলেই সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
সামিউল ইসলাম নামের এক ভূক্তভোগী বলেন, রাকিব নামের আমার ছোট্ট ভাগ্নে এ হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। হাসপাতালে ভালো চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে শিশুরা মারা যাচ্ছিলো। এমন পরিস্থিতির কারণে ভাগ্নেকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ভবনের কেয়ারটেকার জলিল বাংলানিউজকে আরো জানান, শুক্রবার (২ অক্টোবর) পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী ভর্তি ছিলো। তার মধ্যে শিশু ছিল ৯ জন।
তিনি জানান, গত বছর এ হাসপাতালে রাজিব নামের এক স্টাফ বিস্ফোরকসহ পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। তিনি এখনো জেলে রয়েছেন। এ কারণে ভবনের মালিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চলে যেতে নোটিশ দেন। এরপরেও তারা বিভিন্ন অযুহাতে এখানে অবস্থান করছিলেন। হাসপাতালে ২৫ থেকে ৩০ জন স্টাফের কাজ করার কথা থাকলেও তারা ঠিকমতো আসতেন না।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর বাংলানিউকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে যায়। রাতে মারা যাওয়া ৩ শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, অভিভাবকরা মরদেহ নিয়ে চলে গেছেন। তবে হাসপাতালের কাগজপত্র ঘেঁটে ৩ শিশুর মারা যাওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৫
এনএইচএফ/ এমএ/জেডএম/এএসআর