গত বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয় কাফির। ছেলের জন্য নেবুলাইজেশনের ব্যবস্থা নিতে ফার্মেসিতে ছোটেন বাবা।
বিষয়টি জানার পর বাংলানিউজের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফার্মেসিগুলোতে খোঁজ নিয়ে ভেন্টলিন সলিউশন নামের ওষুধটির দুষ্প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়।
এই প্রতিবেদক মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি, ২০১৬) রাজধানীর ধানমন্ডি, ফার্মগেট, কলাবাগানের লাজ ফার্মা ও তামান্নার মতো বড় ফার্মেসিগুলোতে ঘুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসব দোকানে বিক্রেতারা জানান, গত তিন মাস ধরেই ভেন্টলিন সলিউশনের সঙ্কট রয়েছে।
ঢাকার মিটফোর্ডসহ দু-একটি ফার্মেসিতে ওষুধটি পাওয়া গেলেও তার দাম চড়া। ফার্মেসির কর্মীরাই জানান, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দাম দিয়েই কিনতে হবে এই ওষুধ।
শীতের সময়ে যখন শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যায় ঠিক তখন এই প্রয়োজনীয় ওষুধটির এমন দুষ্প্রাপ্যতা এবং চড়া দাম কেনো? সে প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
রোগী কিংবা রোগীর অভিভাবকরা এ ক্ষেত্রে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে চড়া দামে এই প্রয়োজনীয় ওষুধটি বিক্রি করার লক্ষ্যেই এমনটা করা হচ্ছে।
বিষয়টি এরই মধ্যে নজরে এসেছে জাতীয় ঔষধ অধিদপ্তরের। সরকারি এই দফতরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নেবুলাইজেশনের জন্যে প্রয়োজনীয় ভেন্টলিন সলিউশন সরবরাহ করে শুধুমাত্র বহুজাতিক কোম্পানি গ্লেক্সোস্মিথ ক্লাইন (জিএসকে)। শীতকালে এই ওষুধের চাহিদা বেড়ে যায়। একই সময়ে ওষুধেরও কৃত্রিম সংকটও তৈরি হয়। যার ফলে বেশি দামে ওষুধ কিনতে হয় রোগীদের।
সূত্রটি নিশ্চিত করে, এমন অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় মঙ্গলবার সকালেই গ্ল্যাক্সোস্মিথকে শোকজ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, একটি খবরের ভিত্তিতে গুলশানের একটি ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়। সেই ফার্মেসিতে ভেন্টলিন সলিউশনের ৪ টি প্যাকেট পাওয়া যায়। যেগুলোতে মূল দামের ওপর বাড়তি দাম লেখা হয়েছে।
ওই ফার্মেসির বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান মহাপরিচালক।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) অথবা বুধবার (১১ জানুয়ারি) মামলা করা হবে বলে বাংলানিউজকে জানান তিনি।
সূত্র নিশ্চিত করেছে এটি গুলশান-১ এর তামান্না ফার্মেসি।
বিষয়টি নিয়ে বিক্রেতাদের দাবি তারা নিজেরাই বেশি দামে ওষুধটি কিনেছেন। বাজারে কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করা হয়েছে।
বিষয়টিতে জিএসকের কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান।
ওষুধটির এই সঙ্কটের কারণ কি? বাজারে কেন পাওয়া যাচ্ছে না? তার ব্যাখ্যা চেয়ে ওষুধটি সরবরাহে কোম্পানিটি ব্যর্থ হলে তাদের অনুমোদন কেন বাতিল করা হবে না? এসবের কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে এই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিটিকে।
এ বিষয়ে জানতে জিএসকে’এর ঢাকা অফিসে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময় ১৬৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬
এমএন/এমএমকে