ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হাইকোর্টের রুলে ‘থোরাই কেয়ার’ চিকিৎসকদের!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৭
হাইকোর্টের রুলে ‘থোরাই কেয়ার’ চিকিৎসকদের! ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: ডাক্তার ও নার্সদের ধর্মঘট কেনো অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না সে নিয়ে হাইকোর্টের রুল থাকলেও তাতে ‘থোরাই কেয়ার’ করছেন চিকিৎসকরা।

নয় মাস আগে দেওয়া রুলের জবাব এখনো দিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।  উপরন্তু ঠুনকো কারণে কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়ে তা পালন করে চলেছেন ইনটার্ন চিকিৎসকরা।

যা সারা দেশে কঠোরভাবে সমালোচিত হচ্ছে।  
 
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বগুড়া, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মবিরতি করছেন ইনটারন চিকিৎসকরা।  
 
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়ায় হাসপাতালে সিরাজগঞ্জ সদর থেকে যাওয়া এক রোগীর ছেলে ও দুই মেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন। এ ঘটনার কিছুদিন পর ২ মার্চ চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। ছয় মাস পরে তাদের চারজনকে অন্য চারটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করতে বলা হলে তারই প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে যান হাসপাতালের ইন্টার্নরা।  
 
অথচ  প্রায় নয় মাস আগে এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ডাক্তার ও নার্সদের ধর্মঘট ডাকা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

ওই রিট আবেদনকারী, আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন এখনো সে রুলের জবাব হাতে পাননি। ফলে মামলা শুনানির জন্যও তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

চিকিৎসক ও নার্সদের করমবিরতিতে যাওয়া অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ এবং তা অবৈধ ঘোষণা করাই উচিত, এমন মত দিয়ে এই আইনজীবী বলেন, মামলা তৈরি  হলেই শুনানির জন্য আবেদন কারা হবে। আর আদালত যেন এ ধরনের কর্মসূচিকে অবৈধ ঘোষণা করে সে বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করবো।  

আশা করি আদালতের সিদ্ধান্ত দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষেই থাকবে, বলেন তিনি।  

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, এখানে মানুষের জীবনের অধিকার জড়িত। যেখানে মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন সেখানে ধর্মঘট করা হবে আইনি।  

যদি কেউ চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী রয়েছে, তারা বিষয়টি দেখবে। এর জন্য ধর্মঘট ডেকে চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া অনুচিত, সে বিষয়টিই আমাদের রিট আবেদনে বলা হয়েছে, জানান তিনি।

২০১৬ সালের ২৯ মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি দায়ের করেন এই আইনজীবী। রিটে দেশের নাগরিকদের জীবন রক্ষার্থে এবং রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তার ও নার্সদের ধর্মঘট বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ওই সময় মনজিল মোরসেদ জানান, বিভিন্ন সময়ে ডাক্তার/নার্সরা বিভিন্ন কারণে ধর্মঘট ও কর্মবিরতিতে যান। হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের এসব ধর্মঘট ও কর্মবিরতির ফলে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সীমাহীনদূর্ভোগ পোহাতে হয়।  

ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ৩০মে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

রুলে ডাক্তার ও নার্সদের ধর্মঘট ডাকা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ধর্মঘট বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা এবং হাসপাতাল অঙ্গনে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ওপরহামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না,  তাও জানতে চাওয়া  হয় ওই রুলে।  
চার সপ্তাহ অর্থাৎ ৩০ জুনের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। কিন্তু এরপর নয় মাস পার হয়ে গেলেও রুলের কোনও জবাব মেলেনি। আর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেই সুযোগ নিয়ে ঠুনকো কারণে টানা ধর্মঘট করে চলেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
ইএস/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।