ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক একজন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক একজন ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক একজন

মানিকগঞ্জ: একজন মাত্র চিকিৎসক দিয়ে চলছে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের বৈকালিক চিকিৎসা সেবা। ফলে বিভিন্ন উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা  রোগিরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।

রোববার (১৪ মে) বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরেজমিন পরিদর্শনকালে এ চিত্র চোখে পড়ে। চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক ব্যক্তি এ ব্যাপারে বাংলানিউজের কাছে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া এলাকার আব্দুর রহিম খানের স্ত্রী চায়না বেগম (৫০) জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন মানিকগঞ্জ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সেখানে কোনো চিকিৎসক না থাকায় সিনিয়র স্টাফ নার্স আনিসুর রহমান তাকে টিকিটের মাধ্যমে বৈকালিক সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন।  

টিকিট কাউন্টারে কোনো লোক না থাকায় ১৫ মিনিট অপেক্ষা শেষে আবারও  জরুরি বিভাগে যান চায়না বেগম। সেখান থেকে তাকে আবারো বৈকালিক সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন সহকারী নার্স সরওয়ার হোসেন। এভাবে আধ ঘণ্টা সময় পার হওয়ার পর তিনি বৈকালিক সেবার টিকিট পান। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা পেতে সময় লাগে আরও প্রায় এক ঘণ্টা- জানান চায়না বেগমের মেয়ে লাভলী খানম।  

সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক লামিয়া নাজনিন হ্যাপী হাসপাতালে ভর্তির জন্যে রোগীকে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বদরুল আলম চায়না বেগমের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।

২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক একজনমানিকগঞ্জের জয়রা থেকে জাহাঙ্গীর আলম তার মামা আব্দুল মান্নানকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে টাকা পয়সা সব হারিয়ে অচেতন অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন আব্দুল মান্নান। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ হাসপাতালে আনার পর পড়তে হয় ভোগান্তিতে।

জাহাঙ্গীর আলম নিজের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা কখনো ভাল হয় না । এখানে আসলেই পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি।  

এদিকে রোববার (১৪ মে) জরুরি বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্টদের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ না করেই অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান সাটুরিয়ার দেলোয়ার হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার এক উচ্চ পদস্থ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালে চারটি বিভাগের চারজন চিকিৎসক বৈকালিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা। কিন্তু চিকিৎসা সেবা দেয় মাত্র একজন চিকিৎসক। তত্ত্বাবধায়কে ম্যানেজ করে অন্যরা চেম্বারে রোগী দেখেন।  এতে করে হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগিরা ভোগান্তিতে পড়েন।  

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স আনিসুর রহমান ও সারোওয়ার হোসেন জানান, জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না থাকার কারণেই চায়না বেগম, মান্নান ও দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রীকে টিকিটের মাধ্যমে বৈকালিক চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

টিকিটের দায়িত্ব নিয়োজিত অফিস সহায়ক নাজমুল হাসান জানান, রুমের ভেতরকার ফ্যানের বাতাস গরম থাকায় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।

হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বৈকালিক চিকিৎসা সেবার বিষয়ে তেমন কোনো দিক নির্দেশনা নেই। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটও রয়েছে। যে কারণে দুই একজন চিকিৎসক দিয়ে কোনো রকম বৈকালিক সেবা চালু রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
কেএসএইচ/এজেড/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।