বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সুপরিশ অনুযায়ী একটি নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে করণীয়, উপসর্গ থাকলে করণীয় এবং করোনা পজিটিভ হলে করণীয়; এই তিন ভাগে নির্দেশনায় বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে করণীয়:
এই অবস্থায় অন্য সাধারণ মানুষ যে সব ব্যবস্থা করোনা প্রতিরোধে নিয়ে থাকেন, সেগুলোই করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশ ফেরত কারো সংস্পর্শে না যাওয়া, বাইরে না যাওয়া, গেলেও সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাঁশির শিষ্টাচার মেনে, মাস্ক ব্যবহার করা, শাক-সবজি-ফলমূল ভালো করে ধুয়ে নেওয়া ইত্যাদি। এছাড়া পরিবারের কারো সর্দি-জ্বর থাকলে তার সংস্পর্শে যেতে না মানা করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হলে ঘরে থেকেই অনলাইনে বা ফোনে নিতে হবে। কেবলমাত্র জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলেই হাসপাতালে যাবেন, সেটাও নির্দিষ্ট হাসপাতালে।
উপসর্গ দেখা দিলে করণীয়:
গর্ভবতী নারীর মাঝে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন। জলপট্টি দিতে হবে। হাঁচি-কাঁশির জন্য এন্টি-হিস্টাসিন খাওয়া যেতে পারে। তবে প্রচুর পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। লক্ষণ-উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আইসোলেশন কাল (১৪ দিন) সময় অতিক্রান্ত না হয়। তবে করোনা ভাইরাস সন্দেহ হলে বাসাতেও ডেলিভারি করানো যাবে না। প্রসব বেদনা উঠলে দ্রুত নির্দিষ্ট হাসপাতালে নিতে হবে। এছাড়া তীব্র উপসর্গ (জ্বর, গলাব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, পেশীতে ব্যথা, পাতলা পায়খানা) থাকলেও দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
করোনা পজিটিভ হলে করণীয়:
গর্ভবর্তী মা কোনোভাবে করোনায় আক্রান্ত হলে তবে প্রসূতি ইউনিটকে অবহিত করতে হবে। তীব্র মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, যোনীপথে রক্তপাত, পেটে ব্যাথা, উচ্চ জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বাচ্চা নড়াচড়া কমে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। ডেলিভারির পূর্বে মা সুস্থ হয়ে গেলে নিতে হবে মাতৃকালীন সেবা দানকারী নিকটস্থ হাসপাতালে।
শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে হলে মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে। ভালভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। এছাড়া জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে মায়ের সংস্পর্শে থাকা আসবাবপত্র। শিশুর পরিচর্যাও মা নিজে করার প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছে নির্দেশনায়।
আইইডিসিআর বলছে, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ৩১৩ জনের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৪৮২ জন। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০ জন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২০
ইইউডি/এজে