ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) সহায়তায় টেকনাফের শামলাপুরে এ সেন্টারটি তৈরি করা হয়েছে।
রোববার (২১ জুন) দুপুরে সেন্টারটি উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার।
আইআরসি কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তার শুরু হলে বাংলাদেশ সরকারকে করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি। গত এপ্রিল মাস থেকেই আইআরসির ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি চিকিৎসক দল কক্সবাজার জেলার রামু সরকারি আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় টেকনাফের শামলাপুরে ৬০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন এবং ট্রিটমেন্ট সেন্টার নির্মাণ করলো প্রতিষ্ঠানটি। এখানে এক সঙ্গে ৬০ জন করোনা সন্দেহভাজন বা আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে পারবেন।
এ চিকিৎসাকেন্দ্রে ৬০ জনের একটি দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর দল ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা দেবেন। রোগীদের জন্য প্রতিটি বেডের সঙ্গে রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা, নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা ওয়ার্ড, সন্দেহভাজন এবং আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পৃথক ওয়ার্ড, তিন বেলা খাবার এবং ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা, করোনা আক্রান্ত প্রসূতি মায়েদের জন্য বিশেষ সেবা ও ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। এছাড়াও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে এখানে রয়েছে ডব্লিউএইচও নির্দেশনা অনুয়ায়ী জীবাণুমুক্তকরণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এটা টেকনাফের প্রথম আইসোলেশন সেন্টার যা টেকনাফবাসীর জন্য একটা বিশেষ মুহুর্ত। আশা করি, এ চিকিৎসাকেন্দ্রের মাধ্যমে টেকনাফের স্থানীয় অধিবাসী এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জন্য করোনা চিকিৎসা সহজলভ্য হবে ও বেশ কিছু জীবন বাঁচবে।
এ প্রসঙ্গে আইআরসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মানীষ কুমার আগরাওয়াল বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ এক কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তাই সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এর মোকাবিলা কঠিন। সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এ আইসোলেশন ও ট্রিটমেন্ট সেন্টারটি এরকম অনেকগুলো উদ্যোগের একটি। আমাদের বিশ্বাস আমরা বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিতে পারবো।
আইআরসি বাংলাদেশের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর শাহ মুনতামিন মুজতবা বলেন, গত মার্চ মাসের শুরু থেকেই আইআরসির মেডিক্যাল ও অন্যান্য দল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এ সময়ও আমাদের অন্যান্য হাসপাতালে প্রাথমিক এবং মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে এসেছি। এছাড়াও করোনা সংক্রমণ রোধে সচেতনতা বাড়ানো, সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ, মানসিক সমস্যার পরামর্শ দেওয়া ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আমরা ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে করোনার ঝুঁকি থেকে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
এসবি/আরআইএস/