ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সচেতন বাড়ানো জরুরি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সচেতন বাড়ানো জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশেষজ্ঞরা। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে অসংক্রামক রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধে দেশব্যাপী সামাজিক সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি সারা দেশে তিন মাসব্যাপী একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানান।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারে স্থানীয় একটি হোটেলে এ প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এখন বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগের মতো অসংক্রামক রোগসমূহ মহামারি আকার ধারন করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ডায়াবেটিস ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগসমূহ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উদ্বেগের বিষয় হলো, বাংলাদেশের সীমিত স্বাস্থ্য বাজেট দিয়ে ভবিষ্যতে এই বিপুল পরিমাণ অসংক্রামক রোগসমূহে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সত্যিকার অর্থে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ইতোমধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অসংক্রামক রোগসমূহ বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ এ আক্রান্তের হার ও এর প্রকৃত কারণগুলো নিয়ে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করা হলেও কিশোর ও তরুণদের মধ্যে অসংক্রামক রোগসমূহে আক্রান্তের হার ও এর প্রকৃত কারণ নিয়ে দেশব্যাপী কোন বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়নি।

বাংলাদেশে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে অসংক্রামক রোগ বিশেষ করে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, রক্তে চর্বির আধিক্যতে আক্রান্তের হার ও এর প্রকৃত কারণসমূহ খুঁজে দেখার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালে নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি তিন মাসব্যাপী একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। দেশের ৮ বিভাগের ১০ জেলায় একটি করে শহর ও একটি করে গ্রামে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যগুলো ভবিষ্যতে অসংক্রামক রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধে দেশব্যাপী সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মোট সংখ্যা ২৪৬৮ শহর ও গ্রামে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা যথাক্রমে- ১৩২০ (৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ) ও ১১৪৮ (৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ) পুরুষ ও নারী অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা যথাক্রমে- ১১৯৩ (৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ) ও ১২৭৫ (৫১ দশমিক ৭ শতাংশ) ডায়াবেটিস আক্রান্তের হার ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, শহর (৮ দশমিক শূন্য শতাংশ), নারী (৭ দশমিক ৮ শতাংশ) এবং ৩০ ও ৩০ উর্দ্ধদের (২১ দশমিক ৩ শতাংশ) মধ্যে ভায়াবেটিস আক্রান্তের হার বেশি পাওয়া গেছে। ৬১ শতাংশের মধ্যে ডায়াবেটিসের কোন উপসর্গ ছিল না।

উচ্চ রক্তচাপ এ আক্রান্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ, গ্রাম (১৪ দশমিক ২ শতাংশ), পুরুষ (১৭ দশমিক ৬ শতাংশ) এবং ৩০ ও ৩০ উদ্ভদের (২২ দশমিক ৫ শতাংশ) মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ এ আক্রান্তের হার বেশি পাওয়া গেছে। ৬৮ দশমিক ১ শতাংতের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের কোন উপসর্গ ছিল না।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সাধারণ স্থূলতার (বি.এম.আই ২২৫ কেজি/মি) হার ছিল ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কেন্দ্রীয় স্থূলতার (কোমরের মাপঃ পুরুষ ২৯০ সেমি ও মহিলা ২৮০ সেমি) হার ছিল ২৬ দশমিক ১ শতাংশ।   শহর ও পুরুষদের মধ্যে সাধারণ স্থূলতার হার ও নারী ও শহুরেদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্থূলতার হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। স্থূলত ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, মেটাবলিক সিনড্রোমের হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। আক্রান্তের মধ্যে মেটাবলিক সিনড্রোমের হার ছিল ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্তদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল। শহর ও পুরুষদের মধ্যে মেটাবলিক সিনড্রোমের হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ডায়াবেটি অ্যাসোসিয়েশন বারডেমের প্রেসিডেন্ট জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা আকতার হোসেন,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, কক্সবাজার ডায়াবেটি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।