ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

ভারত

মোদির উদ্বোধন করা ট্রেনে হামলায় রাজ্যজুড়ে সমালোচনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
মোদির উদ্বোধন করা ট্রেনে হামলায় রাজ্যজুড়ে সমালোচনা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট। সেই ভোটে এবার কি ইস্যু হতে চলেছে মোদির উদ্বোধন হওয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস! বারবার আক্রান্ত হচ্ছে ট্রেনটি।

দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়া এই সেমি-হাইস্পিড ট্রেনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয়বার পাথর হামলা।  

ভাঙল কাচ, ট্রেনের দরজা। এ নিয়ে রেলকর্তারা মুখে কুলুপ আঁটলেও, রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এর এই হামলায় রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজ্যের শাসক দল বাদে মুখেছে সব রাজনৈতিক দলগুলো।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমরা এই সেমি বুলেট ট্রেন তৈরি করেছি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কি সেটা নেওয়ার জন্য তৈরি নয়? কী তাদের মানসিকতা? এই মানসিকতা নিয়ে আমরা কি বাকি দেশ-দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারব? যারা করছে, তাদের কিছু লোক উৎসাহ দিচ্ছে। আমাদের রাজ্যের বদনাম করছে। রাজ্য সরকারের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।

এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দিলীপ বলেন, জয় শ্রীরামের বদলার পরিপ্রেক্ষিতে পাথর ছোড়া হচ্ছে না তো? কাশ্মিরে পাথর ছুড়ে মারা হত। এখানেও রাষ্ট্রের সম্পত্তি বন্দে ভারতে পাথর মারা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, বাংলার মানুষ এই ট্রেনকে আন্তরিকভাবে নিয়েছে। এতে মুখ্যমন্ত্রী বোধহয় খুব কষ্ট পেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গকে পিছন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, জনতাকেও এগোতে দিচ্ছেন না। যারা এগোতে চাইছে, তাদের পাথর মারছে।

একইভাবে মুখ খুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এমপি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ট্রেনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, যারা করছে, তারা অন্যায় করছে। ভারতের সম্পত্তিতে এরকম হামলা রাজ্যের পক্ষে অপমানজনক। এটা আমাদের দেশের সম্পত্তি। হঠাৎ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অসুবিধা হবে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা করছি। যারা করছে, তাদের চিহ্নিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শাস্তি দিক। এটাই আমরা চাই। পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসকের যে দুরবস্থা এটিই তার প্রমাণ।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ইট বৃষ্টি হচ্ছে। সবই কেন্দ্রীয় সরকার দেখবে, এটি কোনো কথা না। রাজ্য সরকার চুপ থাকলেও রেলের তো নিজস্ব বাহিনীও আছে। তাদের দেখা উচিত কারা করল, কেন করল, কীভাবে করছে। তারা খতিয়ে দেখছে না কেন?

গত ৩০ ডিসেম্বর, হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি লাইনে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম চালু হয় ভারতের সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। হাওড়া স্টেশনে সবুজ পতাকা নাড়িয়ে ট্রেনের উদ্বোধন করেন মমতা। শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে হঠাৎ তাল কাটে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দর্শকদের একাংশ জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেয়। তাতেই বিরক্ত হয়ে মঞ্চেই ওঠেননি মমতা। হাতজোড় করে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মুখ্যমন্ত্রীকে মঞ্চে ওঠার অনুরোধ করলেও, তাতে রাগ গলেনি নেত্রীর।  

এরপর সোমবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মালদহ জেলার কুমারগঞ্জ এলাকায় পাথর ছুড়ে গেটের কাচ ভাঙে দুষ্কৃতকারীরা। সেই ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) আবারও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছাড়তেই ট্রেনে ইট, পাথর ছুড়ে দুটি কামরার জানালার কাঁচে ভাঙে দুষ্কৃতকারীরা। ঘটনার নিন্দা সর্বত্র হলেও চুপ ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।