ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

ওড়িষায় ট্রেন দুর্ঘটনা: আহত বাংলাদেশি হাবিবুরের সন্ধান মিলেছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
ওড়িষায় ট্রেন দুর্ঘটনা: আহত বাংলাদেশি হাবিবুরের সন্ধান মিলেছে

কলকাতা: ভারতের ওড়িষায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। সরকারি মতে ২৩৮ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এলেও অনেক ক্ষেত্রেই দাবি করা হচ্ছে সংখ্যাটি আড়াইশো পেরিয়ে গেছে।

কিছু সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে মৃত্যুর সংখ্যা ২৮৮ ছাড়িয়েছে। এর পাশাপাশি আহতদের সংখ্যা বেড়ে ইতোমধ্যে হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কয়েকজনের মৃত্যুরও খবর পাওয়া গেছে। ফলে আসলে এ পর্যন্ত কতজন এ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদেরও আশঙ্কা উদ্ধারকাজ যত এগোবে, হতাহতের সংখ্যা ততই বাড়বে।

এরই মধ্যে শনিবার (৩ মে) হাবিবুর রহমান নামে  আহত এক বাংলাদেশির খবর পাওয়া গেছে। তিনি ওড়িষার কটকের সরকারি  ‘সোর’ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা সন্তোষজনক নয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এমন কয়েক জন বাঙালি ভর্তি আছেন যাদের দুই কারণে তাদের চিকিৎসা চালাতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। প্রথমত, ভাষাগত সমস্যা; দ্বিতীয়ত, গুরুতর জখম হওয়ার কারণে তাদের কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের পক্ষে প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) মারেফত তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিনজনের একটি টিম দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা বিভিন্ন হাসাপাতালে খোঁজ নেবেন এবং দুর্ঘটনার স্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন। সেই টিম সবকিছুর দেখার পর জানা যাবে, আসলে কতজন বাংলাদেশি হতাহত হয়েছেন। যদিও স্বস্তির বিষয় হল, এখন পর্য়ন্ত কোনো বাংলাদেশির মৃত্যর খবর পাওয়া যায়নি।

তবে শুক্রবার (২ মে) দুর্ঘটনা কবলিত দুই ট্রেনে বাংলাদেশি যাত্রীরাও ছিলেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ বাংলাদেশি যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রে জানা গেছে। । যদিও কতজন বাংলাদেশি সফর করছিল ভারতীয় রেলের পক্ষে এখন পর্যন্ত তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শুক্রবার রাতে মিনাজ উদ্দিন নামে এক বাংলাদেশি যাত্রী জানিয়েছেন, তিনি করমন্ডল এক্সপ্রেসে ভেলোরে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাচ্ছিলেন। ময়মনসিংহের এই বাসিন্দা দুমড়ে যাওয়া ঠিক আগের বগিতেই ছিলেন।

তিনি বলেন, করমন্ডল এক্সপ্রেসের বি-থ্রি কামরায় ছিলাম। পাশের কামরার যে সব বাংলাদেশি ছিল তাদের খুঁজে পাচ্ছি না। এতবড় রেল দুর্ঘটনা আমার জীবনে কোনোদিন দেখিনি। চারিদিকে মরদেহ আর মরদেহ। প্রায় ১৫ জনের মতো বাংলাদেশি পাশের বগিতে ছিল। তারা কী অবস্থায়, কোথায় আছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানতে পারেনি।

এখনও পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, ওড়িষা সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য একসঙ্গে কাজ করছে। শনিবার (৩ মে) ওড়িষা যাবেন। জানা গেছে, আগে কটকের হাসপাতালে এবং পরে দুর্ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টানায়ক। আর সকালে ঘটনাস্থলে বালেশ্বেরে পৌঁছান ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবসহ রেলের পদস্থ কর্মকর্তারা।

এদিকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পিছু এককালীন ১০ লাখ রুপির ক্ষতিপূরণ দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ভারতীয় রেলমন্ত্রণালয়। পাশপাশি গুরুতর আহতদের এককালীন ২ লাখ রুপি এবং অল্প চোট-আঘাত যারা পেয়েছেন, তাদের এককালীন ৫০ হাজার রুপি করে রেল সহায়তা দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে নিহতদের ২ লাখ এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে। ফলে যথাক্রমে মৃতর পরিবার পাবে ১২ লাখ রুপি এবং আহতরা যথাক্রমে আড়াই লাখ ও এক লাখ রুপি করে পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, ০৩ জুন, ২০২৩
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।