বাসটি অবৈধভাবে ঢোকার পর সীমান্ত পার হওয়ার সুযোগ খুঁজছিল। কিন্তু সে সুযোগ না পেয়ে ঢাকা-বেনাপোল রুটে যাত্রী পরিবহন করছিল বাসটি।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রটোকল অনুযায়ী, কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা রুটে একই রকম একটি বাস বর্তমানে চালাচ্ছে গ্রিনলাইন। এর আগে চালাতো শ্যামলী পরিবহন। বিষয়টি নজরে আসার পর বিআরটিসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। এরপর বাসটি (নম্বর-ডব্লিউবি ২৩ডি৬৮১২) আটক করে কমলাপুর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালে রেখেছিলেন বিআরটিসির কর্মকর্তারা।
এ বাসটি কমলাপুর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালের যেখানে রাখা হয়েছিলো সেখানেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নম্বরপ্লেটে ডব্লিউবি২৩০১২০৩ ও ডব্লিউবি ২৩ডি৬৮১২ দুটি ‘সৌহার্দ্য পরিবহনের দু’টি বাস। এ বাস দু’টি চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশে যাতায়াত করছে।
জানা গেছে, চুক্তিবিহীন বাসটি ঢাকা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী আনা-নেওয়া করছিল তিন সপ্তাহ ধরে। এ রুটে চলাচলের জন্য বাংলাদেশে কোনো ভারতীয় বাসকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
অনুমোদন রয়েছে কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা পর্যন্ত সৌহার্দ্য পরিবহনের একটি বাসের।
বেনপোল কাস্টসম কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এটা অসম্ভব, কীভাবে দু’টি সৌহার্দ্য গাড়ি বাংলাদেশের ভেতরে এক সঙ্গে ঢুকলো?
১০ মে সন্ধ্যায় বেনাপোল কাস্টমস-এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ রকম ঘটনা ঘটার কথা নয়। তারপরও চেক করে দেখছি।
দুই দেশের সরকারি পরিবহনের প্রটোকল স্বাক্ষর অনুযায়ী, কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা রুটে সৌহার্দ্য পরিবহনের একটি বাস চলাচল করার কথা। এর বাইরে বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের কোনো বাসের চলাচল করার কথা নয়। দুই দেশের সরকারকে ফাঁকি দিয়ে সৌহার্দ্য নামে অনুমোদনহীন বাসটি বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। এতে ভারত সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশে বাসটির চলাচল সম্পূর্ণ অবৈধ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়্যারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া জানান, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অবহিত করেছেন। এখন এটা দেখার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের।
তিনি আরও বলেন, দু'দেশের রুটে চলাচলের ক্ষেত্রে ছয় মাস পরপর দ্বিপাক্ষিক রিভিউ মিটিং হয়। কিছুদিন আগে কলকাতায় রিভিউ মিটিংয়ে এ রকম বিষয় তোলা হয়েছিল। প্রটোকলের বাইরে কোনো বাস যেন এসব রুটে না চলে সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।
রিভিউ মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রটোকলের বাইরে গাড়ি চললে তার ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছে বিআরটিসি। চিঠিতে প্রটোকল-স্বাক্ষর অনুযায়ী যেসব বাস চলবে সেসবের নম্বর ও সময়সূচিও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধ বাসটি সরকারি নির্দেশে ঢাকা থেকে বেনাপোল কাস্টমসের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে কাস্টমস বাসটিকে প্রথমে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে মোটা অংকের জরিমানা ও শর্ত সাপেক্ষে মুচলেকা দিয়ে বাসটি ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।
আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় রিভিউ মিটিং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
ভিএস/এসআই/জেএম