ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ব্লু হোয়েলের পর এলো মৃত্যুখেলা ‘মোমো’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৮
ব্লু হোয়েলের পর এলো মৃত্যুখেলা ‘মোমো’ সুইসাইডাল গেম মোমো

কলকাতা: ব্লু হোয়েলের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই নেটে হাজির আরও এক নতুন ত্রাস। ব্লু হোয়েলের মতোই এটি একটি সুইসাইডাল গেম, নাম ‘মোমো’। মূলত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গেমটি ছড়াচ্ছে। আর্জেন্টিনায় এক কিশোরীর আত্মহত্যার পর সামনে এসেছে বিষয়টি। 

গেমটি ভারতে ঢুকেছে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন বলে জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কর্মকর্তা ও সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তাদের বক্তব্য, কিছু একটা না ঘটলে এর সন্ধান পাওয়া মুশকিল।

তবে সতর্ক থাকা উচিত। সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে জানানো প্রয়োজন।

বুয়েন্স আয়ার্স টাইমসে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, কিশোরীটি মারা যাওয়ার আগে একটি ভিডিওতে মা-বাবাকে মোমো থেকে সাবধানে থাকতে বলে গেছে। ১৮ বছরের একটি ছেলের সঙ্গে ওই কিশোরী হোয়াটসঅ্যাপে লিংক দেওয়া-নেওয়া করেছিল বলে পুলিশ জেনেছে। পুলিশের ধারণা, চ্যালেঞ্জের অংশ হিসেবে ওই কিশোরীকে আত্মহত্যা করতে বলা হয়েছিল। হয়তো ভিডিও করে মা-বাবাকে বার্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়।

আর্জেন্টিনার কিশোরীটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার জন্যই অন্তিম ভিডিওটি বানিয়েছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান। কেননা, ভিডিওতে তাকে আত্মহত্যার জন্য ‘কৃতিত্ব’ দিতে দেখা গেছে মোমোকে।

শুধু দক্ষিণ আমেরিকায় গেমটি সীমাবদ্ধ নেই। মোমোর দেখা মিলেছে মেক্সিকো, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশগুলিতে। গেমটি প্রথমে ছড়াতে শুরু করে ফেসবুকের মাধ্যমে। তবে এখন ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ।

কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা সুমন ঘরাই বলেন, জানা নেই ভারতে এই গেম ছড়িয়েছে কিনা। তবে ভারতে ছড়ালে মুম্বইয়ের পর কলকাতায় তার ইফেক্ট এসে পড়ে। এই মুহূর্তে সতর্কতাই একমাত্র রাস্তা।  

অভিভাবকদের মোবাইল নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। দেখতে হবে, সন্তানরা কী গেম খেলছে। মোমোর ধরন এমন যে, শিশু ভয় পেয়ে যাবে। অস্বাভাবিক আচরণ দেখলেই সতর্ক হতে হবে, কথা বলতে হবে সন্তানের সঙ্গে। সে রকম কিছু পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে। অভিভাবকদের মনে রাখতে এর আগে ব্লু হোয়েল কোপে শুধু পশ্চিমবঙ্গে আট সন্তানের প্রাণ গিয়েছিল।

ইন্ডিয়ান স্কুল অব অ্যান্টি হ্যাকিংয়ের সভাপতি সন্দীপ সেনগুপ্তর বলেন, মোমো ভারতে তথা রাজ্যে ঢুকেছে কিনা বলা কঠিন। যতক্ষণ না কিছু একটা ঘটছে, ততক্ষণ টের পাওয়া মুশকিল। সোশ্যাল সাইটে বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপে একটি লিংক পাঠানো হচ্ছে। অল্পবয়সীরা না বুঝে এবং আগ্রহের বশে সেটিতে ক্লিক করলেই মোবাইলে স্পাইওয়্যার ইনস্টল হচ্ছে। এর ফলে মোবাইলের উপরে নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে কালপ্রিট মোমো। ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন অন হয়ে যাচ্ছে নিজে থেকেই। ফলে, কেউ মোবাইল নিয়ে কোথায় যাচ্ছে বা কার সঙ্গে কী কথা বলছে, সব তথ্যই চলে যাচ্ছে আড়ালে থাকা মোমোর কাছে। তার পরে শুরু হচ্ছে ব্ল্যাকমেল করা।

জানা যায়, মোমোর লিংক খুললেই ভেসে ওঠে ভয়ঙ্কর একটি মুখ। যাবতীয় কথাবার্তা সেই বলে। এই মুখ দেখে শিশুরা ভয়ে কাঁপবে, সেটাই স্বাভাবিক। শুরুতেই বলা হয় হয় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ কর, নইলে সশরীরে বাড়ি এসে অভিশাপ দেওয়া হবে। করা হবে বাবা-মাকে খুন। হাজির হবে ভয়াল চেহারার কেউ।  

যে ভয়াল চেহারাটি ভেসে উঠছে, তা জাপানি শিল্পী মিদোরি হায়াশির একটি শিল্পকর্ম থেকে নেওয়া। লিংক ফ্যাক্টরি নামে জাপানের একটি স্পেশাল ইফেক্ট সংস্থা ‘মোমো’ নামে একটি পাখি তৈরি করে। সেই পাখির ভয়াল চেহারাটিই নেওয়া হয়েছে মোমো গেমে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৮
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।