ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ব্রিটেনের পাউন্ডে বঙ্গসন্তান জগদীশচন্দ্রের ছবি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৮
ব্রিটেনের পাউন্ডে বঙ্গসন্তান জগদীশচন্দ্রের ছবি! বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু, ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: এবার ব্রিটেনের পাউন্ডে দেখা যেতে পারে বঙ্গসন্তান বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর ছবি। তেমন সম্ভাবনাই উজ্জ্বল হয়ে উঠছে দিন দিন।

সম্প্রতি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড একটি জার্নালে জানিয়েছে, ২০২০ সালে ৫০ পাউন্ডের নতুন নোট বাজারে আনবে তারা। তবে ওই নোটে ব্রিটেনের রানি নয়, বসানো হবে কোনো বিজ্ঞানীর মুখ।

আর এর জন্য নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতে দু’টি শর্ত দেওয়া হয়।

প্রথম শর্ত- যার ছবি এ নোটে ছাপা হবে তিনি বিজ্ঞানী হতে হবে। দ্বিতীয়টি হলো- ব্রিটেনের বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণায় তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকতে হবে।

ব্যাংক থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত এক লাখ ৭৪ হাজার ১১২ বিজ্ঞানীর নাম প্রস্তাব হিসেবে এসেছে তাদের কাছে। সেই তালিকায় রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর নামও। আর লম্বা এ তালিকায় তার নামটি অনেকটা এগিয়েও রয়েছে। তবে তার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত চলছে মহাকাশ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এবং টেলিফোনের আবিষ্কারক অ্যালেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। অবশ্য ১৪ ডিসেম্বরের পরই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নাম তিনটি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করবে।

‘গাছেরও প্রাণ আছে, আছে অনুভূতিও’ জগদীশচন্দ্র বসুর এই যুক্তি অকাট্য। কিন্তু এই ধ্রুব সত্যকে তখন উপেক্ষা করেছিলেন পশ্চিমা দুনিয়ারই অনেক বিজ্ঞানী। এমনকি অনেকে তাচ্ছিল্যও করেছিলেন এই আবিষ্কার নিয়ে। পরবর্তীকালে তার সেই আবিষ্কারই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছিল।

আদতে পদার্থবিদ্যার বিজ্ঞানী হলেও বরাবরই অন্যান্য ক্ষেত্রের গবেষণাতেও সমান আগ্রহ ছিল জগদীশচন্দ্র বসুর। সেই আগ্রহবশতই গাছের অনুভূতি রয়েছে কি-না, নিজের বানানো যন্ত্র দিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন সাফল্যও।

১৯২২ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের এক খবর অনুযায়ী, বিশিষ্ট উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল ট্রেম্বলি ম্যাকডুগাল জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে বলেছিলেন, এই বাঙালি বিজ্ঞানী ‘ধাপ্পাবাজ-কল্পনাপ্রসূত’ যে তথ্য দিয়েছেন, তা প্রকৃতিবিদদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও, গাছেদের শারীরবৃত্তীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

১৯২৭ সালে বিশ্বের বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্স’-এ ম্যাকডুগালকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়, গাছেদের হৃদস্পন্দন থাকার যে দাবি জগদীশচন্দ্র করেছেন, তা তার রোমান্টিক ভাবনা থেকে এসেছে এবং যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।  

বিখ্যাত বিজ্ঞানী এজি ইঙ্গালস এক চিঠিতে লিখেছিলেন, বাঙালি বন্ধু জগদীশচন্দ্রের লেখা যাতে কোথাও প্রকাশিত না হয়, সে বিষয়ে তিনি সতর্ক থাকবেন।  

পরে অবশ্য এদের প্রত্যেককেই ঢোক গিলতে বাধ্য হতে হয়েছিল, যখন গোটা দুনিয়া স্বীকার করেছিল, জেসি বোসই (জগদীশচন্দ্র বসু) ঠিক।

এখন প্রায় শত বছর পর আচার্যের প্রতি এক অনন্য শ্রদ্ধা-সম্মান দেখাতে চলেছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তথা ব্রিটিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৮
ভিএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।