কলকাতার ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো বলছে, এবারে ভিন রাজ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভ্রমণের চাহিদা বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতেও। বড়দিনের ছুটিতে অনেকেই স্বল্পদিনে ঘোরার জন্য পরিকল্পনা করে থাকেন।
রায় অ্যান্ড ট্রাভেলর্সের ট্যুর অপারেটর মনোজ গাঙ্গুলী বলেন, শীতে স্বল্পদিনের ভ্রমণের জন্যও জেলাগুলোর বুকিংয়ে এবছর ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। দার্জিলিং বাদ দিলে সুন্দরবন, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো জায়গায় ঘোরার বুকিং গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি। অবশ্য খুব বেশি পিছিয়ে নেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার ট্যুরিস্ট স্পটগুলোও। শুধু বেসরকারি নয়, বুকিংয়ে ভালো সাড়া মিলছে সরকারি পর্যটন দপ্তরের অধীনে থাকা ট্যুরিস্ট লজগুলোতেও।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বাংলানিউজকে বলেন, রাজ্য সরকারের প্যাকেজ ট্যুরগুলোতে ভালোই সাড়া পাওয়া গেছে। রাজ্য দপ্তরের অধীনে যেসব জায়গায় থাকার পরিকাঠামো রয়েছে, সেসব জায়গাতেও বুকিং ভালো হয়েছে।
ট্যুর অপারেটরদের বক্তব্য, গত কয়েক বছরে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে এত পর্যটকদের আনাগোনা দেখা যায়নি। এবারে পুরুলিয়া জেলার উপস্থিতি বেশ জোরালো হয়েছে। শুধুমাত্র অযোধ্যা পাহাড়ের আকর্ষণেই বহু পর্যটক এবারের শীতে পুরুলিয়ায় আসছেন।
একই কথা প্রযোজ্য বাঁকুড়া জেলার ক্ষেত্রেও। পাহাড়ের টানে ভিড় বাড়ছে এখানেও। এক সময় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভ্রমণে প্রভাব ফেলেছিলো মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রামে।
পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় শীতে ফের পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে ঝাড়গ্রামে। আবার এ জেলায় সমুদ্র সৈকত দীঘাও ভ্রমণের জন্য পরিচিত। শীতে অনেকেই আবার জঙ্গল ভ্রমণ করতে যান। সেক্ষেত্রে ভিড় বেড়েছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স কিংবা দক্ষিণ ২৪পরগণার সুন্দরবনে। এছাড়া ঐতিহাসিক স্থান মুর্শিদাবাদ তো আছেই।
শীতের ভ্রমণ নিয়ে শর্মিষ্ঠা ট্রাভেলার্সের কর্ণধার দেবাশীষ মিত্র বলেন, স্বল্প দূরত্বের ট্যুরে পর্যটকদের সিট রিজার্ভেশন বা ট্রেনের নিশ্চিত আসনের ওপর নির্ভর করতে হয় না। বাস কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি বা স্বল্প দূরত্বের ট্রেনে সফর করেন। কাজেই স্বল্প দূরত্বে ভ্রমণের চাহিদা সব সময়-ই ভালো থাকে। তবে এবারে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতেও ভ্রমণের ট্রেন্ড লক্ষ্যণীয়।
তবে স্বল্প দূরত্বের পাশাপাশি ভিন রাজ্যে ভ্রমণের চাহিদাও ভালো। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম করপোরেশন লিমিটেডের (আইআরসিটিসি) ইস্ট জোনের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র বলেন, শীতে একশ্রেণীর পর্যটক ঠাণ্ডার জায়গাতেই যেতে চান। এবার শীতে দার্জিলিং-সিকিমে চাহিদাও বেশ ভালোই।
‘এছাড়া শীতে গৌহাটি-শিলং, ভাইজাগ, আন্দামান, গুজরাট, রাজস্থান, এমনকি কাশ্মীরের চাহিদাও ভালো। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্যাকেজ ফুল। ’
কুণ্ডু স্পেশালের কর্ণধার সৌমিত্র কুণ্ডু বাংলানিউজকে বলেন, চারমাস আগে থেকে ভারতে রেলের বুকিং খুলে যাওয়ায় আমাদের শীতের বুকিং অনেক আগেই বুকড হয়ে গেছে।
শীতে রাজস্থান, কেরালা, গুজরাট, মুম্বাই, গোয়া, হায়দ্রাবাদ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, আন্দামান ইত্যাদি মিলিয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ভ্রমণের চাহিদা বেশ ভালো রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩ , ২০১৮
ভিএস/এমএ