ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প

কৃষকের স্বপ্ন তলিয়েছে বানের পানিতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
কৃষকের স্বপ্ন তলিয়েছে বানের পানিতে ৪৫ হাজার হেক্টর জমির আমনের চারা তলিয়েছে বন্যার পানিতে। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: টানা প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যায় দিনাজপুর জেলায় তলিয়ে আছে ৪৫ হাজার একর (হেক্টর) জমির সদ্য রোপন করা আমনের চারা। ফলে ভেঙে গেছে চলতি মৌসুমে আমন চাষ নিয়ে দেখা হাজারো কৃষকের স্বপ্নও।

যে সকল কৃষক বিভিন্ন এনজিও ও অন্যান্য সংস্থার ঋণের টাকায় আমনের চারা রোপন করেছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সে ঋণ পরিশোধ নিয়ে তারাই বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

আমনচাষিরা জানান, পানির স্রোতে উপড়ে গেছে সদ্য রোপন করা বেশিরভাগ চারা।

যেগুলো জমিতে টিকে রয়েছে, সেগুলোও পানি নামার পর গোড়া পচন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ডুবে আছে রাস্তা, পাশের ফসলের মাঠও।                                          ছবি: বাংলানিউজতাই চলতি মৌসুমের আমন ধানের চাষাবাদ পড়ে গেছে চরম হুমকির মুখে। ধানচাষে ব্যর্থ হলে দেশে খাদ্য সংকটের আশঙ্কাও করছেন তারা।

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি আমন মৌসুমে দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৫৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করে ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫১ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনেও দেখা গেছে, জেলার ৯৮ শতাংশ ফসলি জমিতে আমনের চারা রোপন করে ফেলেছিলেন কৃষকেরা। যার অনেকটাই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সঠিকভাবে উৎপাদন হয়নি। ফলে লোকসান গুণতে হয়েছে। এবার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সদ্য রোপন করা আমনের চারাও। বন্যার পানি যদিও দু’একদিনেই কমে যাবে, তারপরও জমির সকল চারা পচে নষ্টের উপক্রম। ভালো থাকা চারাগুলোও পানি কমলে পচন রোগে নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে’।

‘বন্যার পানি কমলে তাই নতুন করে চারা রোপন করতে হবে। কিন্তু জেলার অধিকাংশ এলাকায় চারার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সরকার যদি চলতি মৌসুমের সঠিক চারা কৃষকদের সরবরাহ করে, তবেই আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব’।

তিনি বলেন, ফের চাষাবাদ সম্ভব হলেও ঋণগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতির মুখে চরম বিপদে পড়েছেন। ফলে পুনরায় আমন চাষ করা নিয়ে তারা রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।

বন্যায় চরম বিপাকে দিনাজপুরবাসী।  ছবি: বাংলানিউজ  দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা জানান, তলিয়ে থাকা ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে পানি কমার পর নতুন চারা রোপন করে চাষাবাদ সম্ভব। বন্যা শেষে কৃষি ও বীজ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে আমনের চারা সরবরাহ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।