ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বেসরকারি খাতকে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্যই আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বেপজা’র উদ্যোগে ‘বেপজা ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টরস্ সামিট ২০১৮’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রফতানি বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।



‘বেপজা দেশের ইপিজেডগুলোকে ইতোমধ্যে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত করেছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। শিল্পের প্রসার, রপ্তানি খাত সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সরকার এ ক্ষেত্রে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ’

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি শিল্প-উৎপাদনের দিকে নজর দেন। তিনি পরিত্যক্ত কলকারখানাগুলো জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুর মাত্র সাড়ে তিন বছর রাষ্ট্র পরিচালনাকালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৭ ভাগের উপরে উঠেছিলো। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর ৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো সেসব কলকারখানা পানির দামে বিক্রি করে দেয়। তারা মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যস্ত ছিল।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আমরা বেসরকারি খাতের উন্নয়নে কাজ শুরু করি। দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আমরাই প্রথম দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বেপজা ইনভেস্টরস্ কনফারেন্স করেছিলাম। সে সময় দেশে চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং স্বল্প পরিসরে ঢাকা ইপিজেড চালু ছিল। পরবর্তীকালে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের সম্প্রসারণ করি এবং কুমিল্লা ইপিজেড স্থাপন করি।

২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বেপজার বিনিয়োগ দ্বিগুণের বেশি এবং রফতানি প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৮টি ইপিজেড মাত্র ২ হাজার ৩০৭ দশমিক ২৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এই ৮টি ইপিজেডে মোট ৪৬৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। প্রায়  ৫ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এদের মধ্যে শতকরা ৬৪ ভাগই নারী। বিগত নয় বছরে ইপিজেডগুলোতে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৬২০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।  

তিনি জানান, বেপজার অধীনে ইপিজেডগুলো দেশের মোট জাতীয় রপ্তানি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ২০ শতাংশ অবদান রাখছে। সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতি, সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং আপনাদের প্রচেষ্টা এই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হয়েছে।  

বিনিয়োগবান্ধব নীতির ফলেই চীন, জাপান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৩৮টি দেশের বিনিয়োগকারীরা ইপিজেডের কারখানায় বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড পণ্য উৎপাদন করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আসুন, সবাই মিলে আমরা বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশ গড়ে তুলি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

এ সময় তিনি বেপজার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে 'বেপজা ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টরস সামিট ২০১৮' উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ে রফতানি প্রক্রীয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেপজার অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মুহম্মদ হাবিবুর রহমান খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এমইউএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।