ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

সরকার নির্ধারিত দরেই চামড়া কিনবেন ট্যানারি মালিকরা

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮
 সরকার নির্ধারিত দরেই চামড়া কিনবেন ট্যানারি মালিকরা

ঢাকা: দেশে কাঁচা চামড়ার প্রধান আড়ত লালবাগের পোস্তায় কোরবানির পশুর চামড়া কেনা বন্ধ রয়েছে গত দুই দিন যাবত। আড়ত ও গুদামগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই না থাকায় ঢাকার বাইরের মোকাম থেকে চামড়া আনছেন না ব্যবসায়ীরা। তাই কিছুটা স্থবির পোস্তার আড়তগুলোর হাঁকডাক।

তবে শুক্রবার (৩১ আগস্ট) থেকে আবারও জমে উঠবে চামড়া কারবারিদের এ পাইকারি বাজার। ট্যানারি মালিকরা আসছে সপ্তাহের শুরু থেকে সরকার নির্ধারিত দরেই পোস্তার আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া কেনা শুরু হবে।

আর তা শুরু হলেই পাল্টে যাবে পরিস্থিতি। এমন অভিমত চামড়া ব্যবসায়ীদের।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাজী মো. টিপু সুলতান বাংলানিউজকে বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে ট্যানারি মালিকরা পোস্তার আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া কেনার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে শুক্রবার থেকে পোস্তার আড়তগুলো আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, চামড়ার দর নিয়ে যে আশংকা সৃষ্টি হয়েছিলো, তা কেটে গেছে। ট্যানারি মালিকরা সরকার নির্ধারিত দরেই চামড়া কিনতে রাজি হয়েছে। তাই আড়তদারদের লোকসানের যে শঙ্কা উঁকি দিয়েছিলো, আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তা কেটে গেছে।

পোস্তার এই কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ী আরও বলেন, বর্তমানে আড়তে বা গুদামগুলোতে তিল ধারণের স্থান নেই। তাই আমরা ঢাকার বাইরের মোকামগুলো থেকে চামড়া পাঠাতে নিষেধ করেছি। আশা করছি শুকবার থেকে মফস্বলের মোকাম থেকে চামড়া আনতে পারবো।

তিনি জানান, বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের হাতে থাকা ৬০ লাখের মতো চামড়া সামনের সপ্তাহ থেকেই ট্যানারিগুলোতে প্রক্রিয়াজাত হতে শুরু করবে। এ ক্ষেত্রে ট্যানারি মালিকরা সরকার নির্ধারিত দরেই পোস্তার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করবে।

চামড়া ব্যবসায়ী আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, গত তিন বছর ধরে পোস্তার ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পুঁজি আটকে রেখেছেন ট্যানারি মালিকরা। তারা পাওনার ৩০ লাখ টাকা কোরবানির আগে ফেরত না দিয়ে চামড়া কিনতে মাত্র এক লাখ টাকা দিয়েছেন। নতুন করে পুঁজি জোগাড় করে চামড়া কিনেছি কোরবানির তিন দিনে।

তিনি জানান, লবণের খরচসহ প্রতিটি চামড়ার দর পড়েছে ১৩০০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দরে এ চামড়া বিক্রি হলে, সামান্য কিছু লাভের আশা ছিল। কিন্তু আকিজ ট্যানারি এই চামড়া দেখে দর বলেছে এক হাজার টাকা প্রতি পিস। এতে সব খরচ বাদ দিলে চামড়ার দাম পড়ে ৮৫০ টাকা। ফলে লোকসানের শঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।

তবে টিপু সুলতান নামের আরেক ব্যবসায়ী জানালেন, ব্যবসায়ীদের সেই শঙ্কা এখন আর নেই। সাধারণত কোরবানির পশুগুলো সারা বছর দেশে জবাইকৃত পশুর চেয়ে উন্নতমানের হয়। ফলে এইসব পশুর চামড়ার গুণগতমানও খুব উঁচুমানের। এই চামড়ার দরে পতন ঘটলে লাখ লাখ ব্যবসায়ী পথে বসবে। এতে মূলত লোকসান হবে ট্যানারি মালিকদেরই। তাই তারা সরকার নির্ধারিত দরেই আড়ত থেকে চামড়া কিনতে রাজি হয়েছেন।

তিনি বলেন, কেবল চামড়া কিনলেই হবে না। আড়ত থেকে চামড়া সংগ্রহের সময় বকেয়া টাকা ফেরতেরও নিশ্চয়তা দিতে হবে ট্যানারি মালিকদের।

উল্লেখ্য, গত ১৯ আগস্ট চামড়া খাতের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় এবারের কোরবানি ঈদে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে এর দাম নির্ধারিত হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

ওই বৈঠকে খাসির চামড়ার দাম নির্ধারিত হয়, ঢাকায় ২০ থেকে ২২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে এই দাম ১৫ থেকে ১৭ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮
আরএম/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।