দ্য ভিঞ্চি কোড থেকে শুরু আজকের হ্যারি পটার সব কিছুতেই মলাটে বই বা কাগজের বইয়ের জয়জয়কার। কিন্তু এ সময়ে এসে তা সেকেলে হয়ে যাচ্ছে।
আজ থেকে ৮০ বছর আগে পেঙ্গুইন প্রকাশনার হাত ধরে নামিদামি বই সাধারণ পাঠকের ক্রয়সাধ্যের মধ্যে এসেছিল। তাই বইয়ের মোড়কে সাহিত্য, উপন্যাস আর ছোটগল্পের জনপ্রিয়তা আর ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠতে থাকে।
কিন্তু হায়, আজ হালফিল প্রযুক্তির এই শনৈ: শনৈ: যুগে কাগজে ছাপা বই ক্রমেই তার অবস্থান, জনপ্রিয়তা আর গৌরব হারাতে বসেছে। গত ক`বছরে কাগজে ছাপা বইয়ের কাটতি ২৫ ভাগ কমে গেছে। এ মুহূর্তে জ্যেষ্ঠ প্রকাশনা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন মোড়কে বইয়ের মৃত্যুঘণ্টা বেজে চলেছে। আর তাই দিনকে দিন মলাটে-বইয়ের প্রকাশনার দিন ফুরিয়ে আসছে।
এ বছরের গত তিন মাসে পশ্চিমা দুনিয়ায় ১ কোটি ১৩ লাখ মোড়কে উপন্যাস বিক্রি হয়েছে। অথচ সংখ্যাটি গত বছরে ছিল ১ কোটি ৪৯ লাখ। এ হিসাবে ছাপানো বইয়ের কাটতি কমে গেছে শতকরা ২৫ ভাগ ।
এ জন্য বাজারে বিশ্লেষক এবং প্রকাশক মহল ই-রিডার চর্চাকেই অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আর ই-রিডারের মাঠে জমিয়ে রেখেছে অ্যামাজনের কিনডল, সনি রিডার এবং ট্যাবলেট। এর মধ্যে আইপ্যাড হয়ে উঠেছে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।
একটি মাত্র ডিজিটাল বইয়ে ১ হাজার ৪০০ উপন্যাস সংরক্ষণ করা সম্ভব। এটি ওজনে হালকা। ধারণে সহজ। আর পড়তে তো বলাই বাহুল্য। কোনো বাড়তি জায়গারও প্রয়োজন নেই।
সব মিলিয়ে গল্প-উপন্যাস এখন আর বইয়ে নয়, ই-রিডারেই মানিয়ে গেছে। তবে মোড়কে-বইয়ের আকর্ষণ কী আর সহজেই ফুরাবে। অস্তিত্ব লড়াইয়ে এই কঠিন সময়ে এসেও, কাটতির পড়তির মধ্যেও ইতিহাসের ধারক হয়ে সে টিকে থাকবেই। এমনটাই বলছেন এ শিল্পের জ্যেষ্ঠ গবেষকেরা।
বাংলাদেশ সময় ১৫১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১২
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর