ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রাহকের অজান্তে মোবাইলে টাকা কাটা রোধে ‘এক্সটার্নাল আইটি অডিট’ চান পলক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৪
গ্রাহকের অজান্তে মোবাইলে টাকা কাটা রোধে ‘এক্সটার্নাল আইটি অডিট’ চান পলক

ঢাকা: গ্রাহকের অজান্তে মোবাইলের টোকা কেটে নেওয়া বা ইন্টারনেট অপচয় রোধে লাইসেন্সে প্রতিশ্রুত সেবা নিশ্চিত এবং তথ্য-উপাত্ত চুরি বা সাইবার নিরাপত্তায় বিটিআরসিতে একটি ‘এক্সটার্নাল আইটি অডিট’ টিম গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বুধবার (৮ মে) আগারগাঁওয়ে বিটিআরসির প্রধান সম্মেলনকক্ষে টেলিযোগাযোগ সেবা সম্পর্কিত বিটিআরসির গণশুনানিতে গ্রাহকদের প্রশ্ন-পরামর্শের জবাবে তিনি এ নির্দেশনার কথা জানান।


বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের মহাপরিচালকরা, কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আজকে এখানে ইন্টারনেটের প্যাকেজ কীভাবে আরও সুলভ করতে পারি, গ্রাহকদের অর্থ সাশ্রয় করতে পারি, প্রাইভেট কোম্পানিগুলো প্রতারিত করতে না পারে, এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে।

বিটিআরসি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে দেশের নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। বেসরকারিখাতে কিংবা দেশি-বিদেশি কোম্পানিকে এমন একটা নিয়ন্ত্রণ পরিবেশের মধ্যে রাখা, যা একদিকে তাদের ব্যবসা করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে, কিন্তু আমাদের নাগিরক ও দেশের স্বার্থটা আগে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

সাইবার সুরক্ষা নিয়ে পলক বলেন, সারা পৃথিবীর এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমাদের বিদ্যুৎ-জ্বালানি, ব্যাংকিং এবং টেলিকম সেক্টর সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল। আমরা ৩৪টি অবকাঠামোকে ক্রিটিক্যাল ইনফ্রাকটাকচার হিসেবে ঘোষণা করেছি। আজকে কথা আসলো যে, গ্রাহকের টাকা, ব্যালান্স যাতে কোনো মোবাইল অপারেটর বা প্রাইভেট কোম্পানি কেটে না নিতে পারে অথবা তার অব্যবহৃত ইন্টারনেট তার অজান্তে অপচয় না হয়ে যায়, এ বিষয়গুলোর জন্য বিটিআরসিকে দুটি নির্দেশনা দিতে চাই।

আমরা এখন রেগুলারলি ফাইন্যান্সিয়াল অডিটট করছি। এর ফলে মোবাইল অপারেটররা বকেয়া টাকাগুলো দিতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা আদায় করতে পাচ্ছি। কিন্তু এর পাশাপাশি একটা খুব শক্ত এক্সটার্নাল আইটি অডিট টিম আমি চাই যাতে বিটিআরসি ফরম করে। যেখানে আমাদের ইনহাউজ ইন্টারনাল ক্যাপাসিটি ডেভলোপ করতে হবে, পাশাপাশি আউটসোসিংও করতে হবে, থার্ড পার্টিকে ইনভলব করতে হবে যাতে কোনো কোনো মোবাইল অপারেটর বা আইএসপি সার্ভিস প্রোভাইডার বা অন্য কোনো লাইসেন্সি লাইসেন্সের প্রতিশ্রুত সেবা নাগরিকদের পৌঁছে দেয় এবং সেখানে যাতে কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি না থাকে বা সেখানে যে কমিটমেন্ট করেছিল সেটা পূরণ করতে ব্যর্থ না হয়। সেজন্য নিয়মিত একটা এক্সটার্নাল আইটি অডিট হয়। এর পাশাপাশি কোনো সাইবার ক্রিমিনাল কিংবা কোনো হ্যাকার যাতে এই ধরনের কোনো অবৈধ ইকুপমেন্ট দিয়ে আমাদের নেটওয়ার্ককে ক্ষতি করতে না পারে, যাতে আমাদের নাগরিকদের তথ্য বা দেশের তথ্য-উপাত্ত যাতে চুরি করতে না পারে সেজন্য একটা এক্সটার্নাল আইটি অডিট নিয়মিত হওয়া দরকার। ’ 

টেলিযোগাযোগ কমিশনের এখতিয়ার এবং কর্মক্ষেত্র, কর্মপরিধি সংকোচিত হবে কিনা- প্রশ্নে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেলিযোগাযোগ আইন যুযোগপযোগী করে বর্তমান সময়ের চাহিদা এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তাটা মাথায় রেখে আধুনিক ভবিষ্যতমুখী আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। আমরা আইনের সংশোধিত খসড়া উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে উপস্থাপন করেছি। মোবাইল অপারেটরসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামত ও সুপারিশ পেয়েছি, আমি আশ্বস্ত করতে পারি। সবশেষ ২০১০ সালে এ আইনে যেসব কর্মপরিধি এবং যেসব বিষয়গুলো কমিশনের হাতে ছিল সেগুলো থাকবে। বরং আমরা একটা জায়গায় নজর দিচ্ছি রেগুলোটরি কমিশনকে একটা ফ্যাসিলেটেট রোলে যাতে সুযোগ করে দেওয়া যায়। যাতে বিভিন্ন সেবার মধ্য দিয়ে আয় বাড়াতে।  

পলক আরও বলেন, আমি আজকে শুনলাম যে আমাদের কিছু আন-ইউজড স্পেকট্রাম আছে। সে ব্যাপারে আমার নির্দেশনা থাকবে, ফাইভজির জন্য যে স্পেকট্রামগুলো অন্যান্য নেটওয়ার্ক অপারেটর নিয়েছে, সেটা যদি প্রযুক্তিগতভাবে ফোরজির গুণগতমান উন্নয়নের জন্য ব্যবহারের সুযোগ থাকে তাহলে অবশ্য। যেন সেটা ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি আমাদের ফাইভজি রোল আউটের ব্যাপরটাও আমরা চিন্তু করছি যে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউজ কেস হিসেবে কত টুকু ব্যবহার করা যায়। যেমন আমাদের কিছু শিল্পাঞ্চল, কিছু এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং বাংলাদেশের কিছু এরিয়া আছে যেখানে হাই-এন্ডের মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার হয়। যেমন আমাদের বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট, কিংবা গুলশান-বানীন-বারিধারা অথবা সচিবালয় এলাকা বা এয়ারপোর্ট, সিপোর্ট, ইপিজেড- এসব জায়গায় অনেক উচ্চ গতির ইন্টারনেটের প্রয়োজন। সেখানে ফাইভজির একটা ডিমান্ড আছে। আমি বিটিআরসিকে অনুরোধ করবো, ফাইভজি রোল আউটের একটা প্ল্যান করি যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের জন্য বোঝা হয়ে না পড়ে আবার নাগরিক যাদের চাহিদা আছে তারাও যেন ফাইভজি ব্যবহার করতে পারে।

তিনি বলেন, টেলিটককে অন্যান্য মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের প্রতিদ্বন্দী না হয়ে তাদের সহযোগী হিসেবে, এবং বিটিসিএলের অবকাঠামো বেসরকারি খাতের প্রয়োজনে ব্যবহার করাসহ আমরা প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের ভিত্তিতে কাজ করতে চাই। অল্প সম্পদ ব্যবহার করে বেশি সুবিধা পাওয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যে টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন বাস্তবায়ন করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৪
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।