ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

চুরি গেলে ফোনটা, চলে না যন্ত্রটা!

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৩
চুরি গেলে ফোনটা, চলে না যন্ত্রটা!

হঠাৎ খোয়া গেছে মোবাইল ফোন। কিংবা চুরি বা ছিনতাই।

দুষ্টচক্রের মোবাইল ফোন চুরি আর তা সস্তা দরে চোরাই বাজারে বিক্রি করে দেওয়া দিন শেষ। এখন চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন কিনলেই পড়তে হবে বিপাকে। এমনকি আইনি বেড়াজাল থেকেও রেহাই মিলবে না।

যত দূরত্বে আর যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন আর সচল থাকবে না। শুধু তাই নয়, অপরাধীকেও শনাক্ত করা যাবে যখন-তখন। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।

এখন মোবাইল ফোন চুরি কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। এ প্রবণতা রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই নতুন কিংবা পুরোনো যেমন মোবাইল ফোনই আপনার থাকুক না কেন, মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বরটি অবশ্যই চট করে কোথাও লিখে রাখুন।

এ নম্বরের মাধ্যমেই দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আপনাকে দ্রুত সহায়তা করতে পারবে। কারণ বিপদে পড়লে মোবাইল ফোন শনাক্ত কিংবা নিস্ক্রিয় করতে (IMEI) নম্বরই হবে আপনার রক্ষাকবচ।

এ ঘটনা শুধু মোবাইল ফোনের জন্য প্রযোজ্য তা নয়। বরং ট্যাবলেট ছাড়াও যেকোনো তারহীন প্রযুক্তিপণ্যের জন্যই প্রযোজ্য। চুরি কিংবা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন দ্রুতই ব্ল্যাকলিস্ট হয়ে যাবে এখন থেকে। আর তা থেকেই অকার্যকর করা হবে নির্দিষ্ট মোবাইল হ্যান্ডসেটকে। এমন ঘোষণাই দিয়েছে কানাডা।

এ মুহূর্তে দেশটির ওয়্যারলেস টেলিকমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশন (সিডব্লিউটিএ) সূত্র জানিয়েছে, বাজারে আসা নতুন এবং পুরোনো যেকোনো মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর এখন থেকে সুনির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত থাকবে।

কোনো প্রকৃত গ্রাহক চুরি যাওয়া হ্যান্ডসেটের এ নম্বরটি ব্ল্যাকলিস্ট করলেও তাৎক্ষণিক সেটটিকে সেলফোন নেটওয়ার্কে ব্যবহার অযোগ্য করে ফেলা হবে। অর্থাৎ হ্যান্ডসেট চুরি হলেও তা আর ব্যবহার উপযোগী থাকবে না। ফলে হ্যান্ডসেট চোরদের দুর্দিন আসছে।

প্রসঙ্গত, আইএমইআই একটি আন্তর্জাতিক কোডিং পদ্ধতি। এটি জিএসএম, এইচএসপিএ, এইচএসপিএ+ এবং এলটিই নেটওয়ার্কে খুব সহজেই শনাক্তযোগ্য। বিশ্বের অধিকাংশ মোবাইল ফোনই এ নেটওয়ার্কে পরিচালিত হয়। আর এ সবগুলো নেটওয়ার্কে ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি নাম্বারস (আইএমইআই) শনাক্ত করা সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে সিডব্লিউটিএ সংগঠনের সভাপতি বারনার্ড লর্ড বলেন, হারিয়ে যাওয়া হ্যান্ডসেটগুলোকে তাৎক্ষণিক ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে। আর দ্রুতই তা নিস্ক্রিয় করে ব্যবহার অযোগ্য পদ্ধতি কার্যকর করা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

অপরাধী কিংবা চোর চক্রের এ ধরনের চোরাই কার্যক্রম আর বেশিদিন টেকসই হবে না। কারণ চুরি হওয়া মোবাইল ফোন কিংবা অন্য প্রযুক্তিপণ্যগুলো যদি ব্যবহার না করা যায় বা ক্রেতা না পাওয়া যায় তাহলে চুরিটা হবে শুধুই শখের।
    
এরই মধ্যে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের কালো তালিকা প্রস্তুতে (ProtectYourData.ca) এ সাইটে তথ্য নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন কানাডার নাগরিকেরা। অচিরেই এ উদ্যোগে পরিসর এবং নিবন্ধন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ এগিয়ে চলেছে।

সিডব্লিউটিএ সংগঠনের মুখপাত্র অ্যাসলি স্মিথ এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, চুরি কিংবা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের অবস্থান শনাক্ত এখন কোনো জটিল কাজ নয়। বরং খুবই সাধারণ একটি কাজ।

এ প্রযুক্তি যেকোনো অপরাধ শনাক্তে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এবং কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। প্রশ্ন এখন এর ব্যাপকতা আর দ্রুততা নিয়ে। আর তা নিশ্চিত করতেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। গ্রাহকদের নতুন কিংবা পুরোনো যেমন হ্যান্ডসেটই হোক না কেন তা এখন আর অধরা থাকবে না।

এটি এ ধরনের স্বেচ্ছাশ্রম ঘরানার কার্যক্রম। ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে এ কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হলেও এখন তা পুরোপুরি কাজ করছে। এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনায় ২ কোটি ডলার ব্যয় হলেও ভুক্তভোগীরা এখানে সেবা পাবেন একেবারেই বিনামূল্যে।

এ উদ্যোগের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত কিংবা নিবন্ধিত নয় এমন সদস্যদেরও এ সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। ফলে পুরো প্রক্রিয়াই একটি আন্তর্জাতিক তথ্য কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কাজ করবে। তাই এ সেবার ধারাবাহিকতা নিয়ে কোনো সংশয়েরই অবকাশ নেই।

বাংলাদেশ সময় ১০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।