ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

স্যামসাং সেটে ভোগান্তি, সেবায় হয়রানি

সাইদ আরমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৩
স্যামসাং সেটে ভোগান্তি, সেবায় হয়রানি

ঢাকা: দেশের বাজারে জনপ্রিয়তা পেতে না পেতেই নিম্নমানের মোবাইল হ্যান্ডসেট ছাড়ছে স্যামসাং। স্মার্টফোনে বাংলাদেশে ব্যাপক বাজার দখলের পর এখন যেন হয়রানির অপর নাম হয়ে যাচ্ছে স্যামসাং হ্যান্ডসেট।



মূলত তুলনামূলক কমদামে স্মার্টফোন দিতে গিয়ে মানের সঙ্গে আপস করছে ব্র্যান্ডটি। আর শখ করে স্মার্টফোন নিয়ে ভোগান্তি সয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।

এমনই একজন ক্রেতা রহমান রব ভুঁইয়া। পারিবারিকভাবেই ব্যবসায়ী। গত ৮ ডিসেম্বর অনেকটা শখের বশেই রহমান রব ভুঁইয়া স্যামসাং ব্র্যান্ডের গ্যালাক্সি ট্রেন্ড হ্যান্ড সেটটি কিনেন। যার মডেল ‘এস-৭৩৯২’।

এরপরই গ্রাহকসেবায় ভুক্তভোগী এ ক্রেতা জানান, হ্যান্ডসেটটি তিনি ওই দিন রাতে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের স্যামসাং শাখা থেকে কিনেন।

কেনার সময় সংশ্লিষ্ট স্যামসাং বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ক্যাটাগরি ম্যানেজার আল আমিন তাকে জানান, এ হ্যান্ডসেটের টকটাইম ৮ ঘণ্টা আর প্রসেসর ১.২ গিগাহার্টজ ডুয়্যাল কোর। তবে এসব সত্যতা টেকসই নয়।

ভুক্তভোগী রহমান রব বলেন, বাস্তবে স্মার্টফোন ব্যবহার করে দেখি মাত্র ৫৯ মিনিটেই ২৭ শতাংশ চার্জ ফুরিয়ে গেছে। অর্থাৎ সাড়ে তিন ঘণ্টায় পুরো ব্যাটারি ডাউন। এরপর ৯ ডিসেম্বর রব সাহেব ওই বিক্রয়কেন্দ্রে যান সমস্যা জানাতে।

বিক্রয়কেন্দ্রে থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়, সরাসরি সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করতে। এখন আর তাদের কোনো কাজ নেই। কিন্তু রহমান রব বলেন, কেন আপনারা তো আমাকে বলেছেন, নতুন সেটে কোনো সমস্যা থাকলে সাত দিনের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবেন। আমি এ হ্যান্ডসেট আর নেবো না। অন্য সেট দিতে হবে।

এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্যামসাংয়ের সেবাকেন্দ্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তি তাকে বলেন, বিক্রিত সেট পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব নয়। এক পর্যায়ে তারা সেটটি গ্রহণ করে পরীক্ষা করে দেখার জন্য। এভাবে ৩/৪ দিন চলে যায়।

এরপর ১৫ ডিসেম্বর তাকে ফোন করে জানানো হয়, তার হ্যান্ডসেটটি ঠিক হয়ে গেছে। বিপরীতে রহমান রব জানান, আমি সেটি গ্রহণ করব যদি আপনারা আমাকে লিখিতভাবে জানান ৮ ঘণ্টা টকটাইম থাকবে। প্রত্যুত্তরে বলা হয়, আপনি আরও দুদিন পরে আসেন।

কিন্তু দুদিন পরে যোগাযোগ করলেও সেবাদাতা আল আমিন তার ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে বলেন, আপনি আসেন।

গত বুধবার তিনি যোগযোগে করলে বিক্রয়কেন্দ্রে থেকে জানানো হয়, লিখিত দেওয়া সম্ভব নয়। তখন রব সাহেব বলেন, এ সেট বদলে নতুন কোনো সেট দিতে। তাতেও রাজি হয়নি স্যামসাং। বাড়তি টাকা যোগ করে অন্য মডেল চাইলে তাতেও অপারগতা জানায় স্যামসাং।

রহমান রব বাংলানিউজকে জানিয়ে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে তিনি সেটটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। সবশেষ তথ্য মতে তিনি সেটটি গ্রহণ করেন নি। সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে গ্যালাক্সি নতুন এ সেটটি বাজারে ছেড়েছে। সেরা ব্র্যান্ড স্যামসাং গ্রাহক সেবায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ হন এ ক্রেতা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ট্রেন্ড হ্যান্ডসেটের মনিটর ৪ ইঞ্চি। আর RAM ৫১২ মেগাবাইট। আর বাজারে বর্তমানে এর দাম প্রায় ১১ হাজার টাকা।

রহমান রব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ভালো ব্র্যান্ড মনে করেই স্যামসাং কিনেছিলাম। কিন্তু সেই ভালো মানের স্যামসাং আর নেই। তাছাড়া তাদের বিপণন কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা সত্যিই দুঃখজনক। যেন পণ্য বিক্রিই আসল কাজ। বিক্রয়োত্তর সেবার প্রশ্নে কোনো জবাবদিহিতা নেই। এ বিষয়ে স্যামসাং বাংলাদেশের হেড অব মোবাইল ফোনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

তবে ক্যাটাগরি ম্যানেজার আল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, রহমান রব ভূঁইয়া যে অভিযোগটি এনেছেন তা সত্য। তবে আমাদের সব পণ্যের ক্ষেত্রে এমনটি নয়। তিনি আরও বলেন, আমরা রহমান রবের সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৩
সম্পাদনা: তমাল আবদুল কাইয়ূম, নিউজরুম এডিটর, খুররম জামান, ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাফেয়ার্স এডিটর/সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর/জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।