ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

আরও জনপ্রিয় ইয়াহু

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৪
আরও জনপ্রিয় ইয়াহু

বিনা পয়সায় ইমেইল যোগাযোগে অনেকেরই হাতেখড়ি ইয়াহু দিয়ে। এ সেবা পুরো বিশ্বে মানুষের যোগাযোগের সনাতন ধারণাকেই আমূল পাল্টে দিয়েছে।

শুধু বিদেশে নয়, বাংলাদেশেরও বেশিরভাগ ইমেইল ভক্তদের কাছে ‘ইয়াহু’ নামটিই সর্বজন পরিচিত, জনপ্রিয়ও বটে।

আবারও ইয়াহু চাঙ্গা হচ্ছে। নিজের সব ধরনের সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে ইয়াহু এখন পুরোদমে ভোক্তাবান্ধব। একটি-দুটি কিংবা কয়েকটি নয়, শয়ে শয়ে ফিচার নিয়ে ইয়াহু এখন দাপুটে চরিত্রে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, আইফোন সবখানেই ইয়াহুর সরব উপস্থিতি।

নতুন এ পরিবর্তন কম্পিউটারের সঙ্গে আইফোন, স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটেও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় এক টেরাবাইট জায়গা বিনা মূল্যে ব্যবহারের অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে (www.yahoo.com) ইয়াহু মেইল।

প্রসঙ্গত, ১০২৪ গিগাবাইট মিলে হয় এক টেরাবাইট। অন্যদিকে সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, এক টেরাবাইট স্টোরে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩১টি ছবি সংরক্ষণ করা সম্ভব।

ইমেইল দুনিয়ার শাসক এখন শুধু ইমেইল নয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, গণমাধ্যম, ব্যবসামাধ্যম, সার্চ ইঞ্জিন এমনকি মোবাইলভিত্তিক বিজ্ঞাপনের বাজারেও আধিপত্য বিস্তার করেছে ইয়াহু।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে কিছু দিন আগের পুরোনো ইয়াহু ঠিকানাগুলো বাতিল করে একেবারেই নতুন আদলে ইমেইল সেবার ঘোষণা দেয় ইয়াহু। এতে অনেক ইয়াহু ভক্তই নতুন করে পছন্দসই নাম নিবন্ধনের সুযোগ পেয়েছেন।

একের পর এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কিনে নিজেকে ঢেলে সাজাচ্ছে ইয়াহু। আর তাতে সাড়াও মিলছে ব্যাপক। এ জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় ইয়াহু অনলাইন খাতে ছাড়িয়ে গেছে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, অ্যামাজন এবং ইবে’র মতো প্রতিষ্ঠানকে।

এ মুহূর্তে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ২০ কোটি সক্রিয় ইমেইল গ্রাহক আছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে ইয়াহু। বাংলাদেশের তালিকাতেও সেবাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইয়াহু এখন নিজের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে চলেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ইয়াহুর গ্রাহক আর সেবাভুক্ত গ্রাহকের সংখ্যা।

ভবিষ্যতের হাজারো সেবাকে আমলে নিয়ে এগোচ্ছে ইয়াহু। ভোক্তা সন্তুষ্টিকে এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে ইয়াহু। ঠিক এ কারণেই ঢেলে সাজানো হচ্ছে ইয়াহুকে। এসব কিছুতে নেতৃত্ব দিচ্ছে জিমেইল সেবার অভিজ্ঞ উন্নয়ক মারিসা মায়ার। যিনি এখন ইয়াহুর সিইও পদ সামলাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপনের জগতে ইয়াহু এখন দাপট ছড়াচ্ছে। এ উদ্দেশ্য তারা অ্যাড ম্যানেজার, অ্যাড ম্যানেজার প্লাস এবং অ্যাড এক্সচেঞ্জের মতো শক্তিশালী অনলাইন টুলস উদ্ভাবন করেছে।

এ ছাড়া আইফোন এবং আইপড টাচের জন্য আলাদা ফিচার এবং সেবা তৈরিতে সুদীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াহু। এতে মানোন্নয়ন ছাড়াও ভবিষ্যৎ জনপ্রিয়তায় কয়েক ধাপ এগিয়েছে ইয়াহু।

ইমেইল সেবার চিরচেনা চেহারা ঢেলে সাজিয়েছে ইয়াহু। গত ৮ অক্টোবর জন্মদিনে ইয়াহু নতুন চেহারা নিয়ে বিশ্বের কোটি কোটি গ্রাহক-ভক্তের কাছে নিজের শক্ত প্রতিযোগিতার জানান দেয়।

এরই মধ্যে ইয়াহু মেইলে কয়েক দফা পরিবর্তন এসেছে। জিমেইলের মতো করেই সাজানো হয়েছে ইয়াহু মেইল। ইয়াহুতে নতুন প্রধান নির্বাহী মারিসা মায়ার যোগ দেওয়ার পর ধাপে ধাপে পরিবর্তন এসেছে। গুগলে থাকার সময় জিমেইল সেবায় পরিবর্তন আনেন মারিসা।

ইয়াহুতে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে থিম এবং নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য। এরই মধ্যে ইয়াহু ইমেইলের নতুন চেহারা দেখতে পেয়েছেন গ্রাহকেরা। গুগল প্রোফাইলের মতো করে যাতে ইয়াহুর ব্যবহারকারীরাও নিজেদের আলাদা প্রোফাইল তৈরি করতে পারেন সে সুবিধাও যোগ করা হয়েছে।

অনলাইনে ব্যক্তিতথ্যের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্বজুড়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। একদিকে হ্যাকিংয়ের হুমকি, অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর সরাসরি নজরদারি। এসব কিছুকে এড়িয়ে বিশ্বের কোটি কোটি গ্রাহকের তথ্যকে সুরক্ষিত রাখতে বহুমুখি উদ্যোগই নিয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।

গেল অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করে দেওয়া একটি নথি হাফিংটন পোস্টে ছাপা হলে ইয়াহু ডাটা সেন্টারের মূল কমিউনিকেশন লিঙ্কে মার্কিন সরকারের অ্যাকসেসের বিষয়টি জনসমক্ষে চলে আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইয়াহু-গ্রাহকের তথ্যকে সুরক্ষিত করতে অ্যাকাউন্টের সব ধরনের তথ্য এনক্রিপশন করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়।

এ বছরের জানুয়ারি থেকেই ইয়াহু সব ইমেইল অ্যাকাউন্টের এনক্রিপশন করবে। ইয়াহুর টাম্বলার ব্লগে মারিসা মায়ার জানান, আগেও জানিয়েছি, আবারও বলছি, ইয়াহু কখনোই ডাটা সেন্টারে এনএসএ কিংবা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাকসেসের অনুমতি দেয় না।

কারণ গ্রাহকের ব্যক্তিতথ্যের গোপনীয়তাই সব সময় অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে। আর তা নিশ্চিত করতেই সব ধরনের গ্রাহকের তথ্য এনক্রিপশন করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের আস্থা ও তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।

ইয়াহুর এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বসেরা প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। আর এনক্রিপশনের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব জটিল পদ্ধতি বেছে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই ধরনের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে গোপনীয়তার স্বার্থে এনক্রিপশনের প্রতি আগ্রহী করে তুলতেও কাজ করছে ইয়াহু।

অনলাইনে স্মার্ট টিভি প্ল্যাটফর্ম এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। ইন্টারনেটের বদৌলতে যেকোনো স্মার্ট পণ্যতেই টিভি চ্যানেল উপভোগ করা যাচ্ছে। এ সুবিধাকে আরও সহজ করতে ইয়াহু তাদের স্মার্ট টিভির প্ল্যাটফর্মের মানোন্নয়ন করেছে।

তা ছাড়া বিভিন্ন অ্যাপ সার্ভিসকে গ্রাহকবান্ধব করে তুলতে ইয়াহুর একটি বড় ধরনের গবেষণাদল কাজ করছে। জীবনের প্রতি মুহূর্তের ছন্দে অ্যাপের বর্ণিল উপস্থিতিকে যতটা সাবলীল করা যায় তাতে কোনো ধরনের কার্পণ্যই রাখছে না ইয়াহু।

ন্যূনতম ইন্টারনেট সুবিধায় ইমেইল এবং অন্যানা সুবিধা নিশ্চিত করা ছাড়াও ওয়াইফাই এবং জিপিএস নেটওয়ার্কে সর্বোচ্চ সেবামান পৌঁছতে ইয়াহু এখন অবিরাম কাজ করে চলেছে। শুধু ইমেইল, নিউজ নেটওয়ার্ক, ফিচার, অ্যাপ, আইপিটিভি নয়, সার্চ ইঞ্জিনকেও পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ইয়াহুর সুদক্ষ কারিগরি দল।

বাংলাদেশ সময় ১৬০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৪
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।