ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

কম খরচে ইন্টারনেট সুবিধা দিতে সাড়ে ৯শ কোটি টাকার প্রকল্প

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৪
কম খরচে ইন্টারনেট সুবিধা দিতে সাড়ে ৯শ কোটি টাকার প্রকল্প

ঢাকা: সবার মধ্যে কম খরচে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে ৯শ ৫৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার অপর একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির(একনেক) চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।



বুধবার পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমেই দেশবাসীর কাছে স্বল্প খরচে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ
টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিঃ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পটির মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ৩শ ৪৪ কোটি ৬৯ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ৬শ ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ হতে জুন, ২০১৭ এর মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সবার জন্য কম খরচে ইন্টারনেট এক্সেস সুবিধা দিতে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন একান্তভাবেই দরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ কাজটি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকার দু’টি স্থানে কোর নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এছাড়া ৭টি বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা শহরে মোট ৬শ ৭০টি বেইজ ট্রান্সসিভার স্টেশন (বিটিএস) নির্মাণসহ ৩শ কি.মি. অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। ‘

দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সেবার পরিধি বৃদ্ধি এবং উচ্চ গতি ও উচ্চ মান সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পেতে
প্রকল্পটি সত্যিকারভাবেই সহায়ক হবে বলেও জানান তিনি।

পল্লী জনগোষ্ঠির মধ্যে বিদ্যুত বিতরণ সমস্যা দূরীকরণে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। একনেক সভায় “পল্লী বিদুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতা বর্ধন” নামক প্রকল্পটি পাস হয়।

এতে ব্যয় হবে ৫ হাজার ১শ ৯৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জিওবি, সংস্থার নিজস্ব এবং বৈদেশিক অর্থায়নে বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্প ব্যয়ের মোট বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে জিওবি ১ হাজার ২শ ৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব ২শ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ৩ হাজার ৭শ ৫ কোটি টাকা।   প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল জুলাই, ২০১৪ হতে জুন, ২০২০ পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

‘পল্লী বিদুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতা বর্ধন’ প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট
বিভাগের ৩৯টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’র বিতরণ নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি ১ হাজার ৮৪০ এমভিএ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের লস বর্তমান হার হতে ২ দশমিক ৫ ভাগ হ্রাস করা
হবে। ”

প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পের আওতায় ৩৩ কেভির ২৭২৮ কি.মি. নতুন লাইন নির্মাণসহ ৮৮৭ কি.মি. লাইন আপগ্রেডেশন করা। ১১ কেভির ২৬৩৪ কি.মি. নতুন নির্মাণ ও আপগ্রেশেন কাজ
সম্পন্ন হবে। এছাড়া, ৩৩/১১ কেভি নতুন ১১০টি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, ৩১টি সুইচিং স্টেশন এবং ৩২ সেট রিভার ক্রসিং টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। ’

‘বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ” এবং ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন’ প্রকল্পও একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রী জানান, একনেকে ৬ হাজার ৩শ ৮৬ কোটি ০৭ লাখ টাকার ৪টি প্রকল্প পাস হয় । মোট প্রকল্প বরাদ্দের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৮শ ৪৩ কোটি  ৪৭ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৩শ ১৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং সংস্থার
নিজস্ব তহবিল ২শ ২৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ৪টি প্রকল্পই নতুন প্রকল্প। ১টি প্রকল্প সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।

“বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ” শীর্ষক ১শ ৯৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়। সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ শিল্প কলা একাডেমি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে অক্টোবর, ২০১৩ হতে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্যেমে জাতীয় সংস্কৃতির উন্নয়ন সমৃদ্ধি ও প্রসারসহ কলাকুশলীদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শন এবং প্রশিক্ষণের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টি হবে।

প্রকল্পের আওতায় ৩টি বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি এবং ৫টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া, সভায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার উত্তরাবাসীর জন্য ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন’ শীর্ষক অপর একটি প্রকল্প পাস হয়।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল,শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।