ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

এবছরই সব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশন পেপারলেস

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৪
এবছরই সব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশন পেপারলেস ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: ২০১৪ সালের মধ্যে দেশের সব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনকে পেপারলেস করা হচ্ছে। এর ফলে রাজস্ব ও কর্পোরেট কর ফাঁকি রোধ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।



সব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনকে পেপারলেস করার পাশাপাশি সমন্বিত অটোমেশন (মূসক, আয়কর ও শুল্ক) এবছর থেকেই চালু হচ্ছে।

এরই মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ ঘোষণা দিয়েছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব কাস্টমস হাউজকে পেপারলেস করার উদ্যোগ নেয়।

এরই অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে অটোমোটেড সিস্টেম ফর কাস্টমস ডাটা (অ্যাসাইকুডা) ওয়ার্ল্ড প্লাস চালু করে।

পরে কাস্টমস হাউজ ঢাকা, কমলাপুর (আইসিডি) কাস্টমস হাউজে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড প্লাস চালু করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

এর আগে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে শুধু অ্যাসাইকুডা সেবা দিয়ে আসছে। তবে এ সফটওয়্যারের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হতো।

আরো জানা গেছে, বিশ্বের সব উন্নত দেশের কাস্টমস হাউজ পেপারলেস (কাগজবিহীন)। প্রায় ৯০টির বেশি দেশ আসাইকুডা প্লাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে আসছে।

জানা গেছে, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড প্লাস ব্যবহারের ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকা কাস্টমস হাউজে রাজস্ব গতিশীলতা, হয়রানি হ্রাস ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর ফলে এবছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মংলা, বেনাপোল,  নবগঠিত পানগাঁও কাস্টমস হাউজে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড প্লাস স্থাপন করবে।

একই সঙ্গে আখাউড়া, ভোমরা, টেকনাফ, সাতক্ষীরা, হিলি, বুড়িমারি, সোনা মসজিদ, আখাউড়া, বাংলাবান্ধাসহ ১৫টি শুল্ক স্টেশন এবং ৩৯টি এলসি স্টেশনকেও পেপারলেস করবে।

আরও জানা গেছে, রাজস্ব বাড়াতে দেশের ১৩টি নিষ্ক্রিয় শুল্ক স্টেশন (স্থল বন্দর) সচল করা হচ্ছে। এগুলো কাগজে কলমে থাকলেও অনেকটা স্থবির।

এগুলো হলো- তামাবিল, বিরল, দর্শনা, বিবিরবাজার, বিলোনিয়া, গোবড়াকুড়া ও কড়ইতলী, নাকুগাঁও, রামগড়, সোনাহাট, টেগামুখ, চিলাহাটি ও দৌলতগঞ্জ।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, একটি কাস্টমস হাউজে দৈনিক ৩০-৪০ কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি হয়। এতে দৈনিক গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার নথিতে কাগজ ব্যবহৃত হয়।

এভাবে বছরে প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচশ টন কাগজ ব্যবহৃত হচ্ছে। ৬টি কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনে একইভাবে কাগজ ব্যবহৃত হয়।

অনেক সময় এসব নথিতে রাজস্ব ফাঁকি ও নথি খুঁজে পাওয়া যায় না। অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড প্লাসের মাধ্যমে পণ্য শুল্কায়নের ফলে এসব কাগজ বেঁচে যাবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গ্রিন কাস্টমস পরিকল্পনা, সময় বাঁচানো ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে পেপারলেস কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, যেসব কাস্টমস হাউজকে পেপারলেস করা হয়েছে তাতে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে।   এতে আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কাস্টমসের হয়রানি নিয়ে এখন আর কথা শোনা যায় না।

তিনি বলেন, এবছরের মধ্যে বাকি কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশন পেপারলেস হয়ে যাবে। তখন কাস্টমস কাজের গতি ও আরো স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেন, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড ব্যবহারের ফলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। এখন আর চট্টগ্রাম ও ঢাকা কাস্টমস হাউজ নিয়ে তেমন অভিযোগ পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, পেপারলেস হয়ে গেলে কাস্টমস সম্পর্কে অবাধে তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া তিনটি উইং (মূসক, শুল্ক, আয়কর) সমন্বিত করে অটোমেশন করা হচ্ছে। এনবিআর এবছর পুরোপুরি অটোমেশনে চলে আসবে।

ফলে কেন্দ্রে বসে সব তথ্য নিশ্চিত করা যাবে। এতে কাজের গতি বাড়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

এবছরের মধ্যে সব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশন পেপারলেস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা,  জুন ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।