ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

এসএমএস-ফেসবুকে কাটতি কম ঈদ কার্ডের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৪
এসএমএস-ফেসবুকে কাটতি কম ঈদ কার্ডের

ঢাকা: কার্ড দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে আনন্দের সঙ্গে যে ভালবাসা মিশ্রিত ছিল; মোবাইল ফোনের এসএমএস, ই-মেইল আর ফেসবুকের যুগে তা আর নেই। ঈদ কার্ডের স্পর্শ আর তার গন্ধটার মাঝেও ছিল আন্তরিকতার ছোঁয়া; এসএমএস কিংবা মেইলে সেই অনুভূতি পাওয়া যায় না।



বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগে তাই কেনাবেচাও কম ঈদ কার্ডের। প্রাতিষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময়ে কার্ডের কদর থাকলেও ব্যক্তিগত পর্যায়ে কার্ড কেনার সংখ্যা একেবারেই কম।

এক যুগেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলানিউজের কাছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন কার্ড সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রোডাক্টসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাজী রেজাউল ইসলাম রেজা।

ঈদের এক সপ্তাহ বাকী থাকতে সোমবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে আজাদ প্রোডাক্টসের ব্রাঞ্চে গিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রেতাও চোখে পড়েনি।

চৌদ্দ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে থেকে বর্তমানে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করা রেজাউল ইসলাম বলেন, তিন-চার বছর ধরে কার্ড কেনাবেচার পরিমাণ কমে গেছে। শুধু অফিসিয়াল শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বেচাকেনা চলছে।

মোবাইল ফোনের এসএমএস, ফেসবুক, ই-মেইল ব্যবহারে ডিজিটাল যুগে শুভেচ্ছা বিনিময়ে কার্ডের কদর কমে গেছে, বলে মনে করেন রেজাউল।

পাঁচ-সাত বছর আগে ক্রেতার ভিড় সামলাতে একদল বের করে দিয়ে আরেক দল প্রবেশ করানো হত জানালেও দুপুরের ওই সময়টায় অলস সময় কাটাতে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানের স্টাফদের।

এই প্রতিষ্ঠানে কার্ড কিনতে আসা রাজধানীর আজিমপুরের গৃহিনী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, ছোটবেলায় আমরা যেভাবে ঈদের আগে কার্ড কিনে বন্ধুদের মাঝে শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম, এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে তা নেই। সবাই ফেসবুক আর এসএমএসে শুভেচ্ছা বিনিময় করে, তাদের মাঝে আমাদের মত সেই আনন্দটাও নেই।

ছোটবেলার দিনগুলোতে বন্ধু-বান্ধবীসহ প্রিয়জনদের কার্ড দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করার স্মৃতি হাতড়ে কথা বলেন ফারজানা।

স্পট, ফয়েল, অ্যাম্বুশ, জরি এবং কাটিং- এই পাঁচ ধরনের কাগজে এবার ঈদ কার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে বলেন জানান আজাদ প্রোডাক্টসের কর্মকর্তা রেজাউল।

এবারও ২০ সেট (প্রতি সেটে ৬-৯টি পর্যন্ত) কার্ড বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে। পাইকারি দরে স্পট প্রতিটি ১০০টির মূল্য এক হাজার ২০০ টাকা, ফয়েল দুই হাজার টাকা, অ্যাম্বুশ দেড় হাজার টাকা, জরি দুই হাজার টাকা এবং কাটিং আড়াই হাজার টাকা মূল্য ধরা হয়েছে।

পুরানা পল্টন, বাংলা মোটর ও বনানী ছাড়াও সারা দেশে ১১টি শো-রুমে তাদের নিজস্ব পণ্য বিক্রি করা হয় বলে জানান আজাদ প্রোডাক্টসের এই কর্মকর্তা।

পাইকারি ঈদ কার্ড কিনতে আসা মোহাম্মদপুরের একটি স্টেশনারি দোকানদার আনোয়ারুল কবির বলেন, তিন-চার বছর আগে কার্ডের যেমন চাহিদা ছিল এখন তা নেই।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতাসহ মন্ত্রী-এমপিরা কার্ডে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করলেও সাধারণ মানুষের মাঝে কার্ড কেনার চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রযুক্তিকেই দায়ী করেন তিনি।

তবে আশার কথা শোনান আজাদ প্রোডাক্টসের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম।

তিনি বলেন, দু’দিন বছর ধরে এক শ্রেণির তরুণ-তরুণীর কার্ড কেনার প্রতি বেশি ঝোঁক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কিছু আকর্ষণীয় কার্ড আনা হয়েছে। তরুণ-তরুণীদের এই সংখ্যাটা এবারও বাড়বে বলে মনে করেন রেজাউল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।