ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

প্রিন্ট ভার্সনের বিজ্ঞাপনে ধস, অনলাইনে বাঁচছে নিউইয়র্ক টাইমস!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৪
প্রিন্ট ভার্সনের বিজ্ঞাপনে ধস, অনলাইনে বাঁচছে নিউইয়র্ক টাইমস!

ঢাকা: সার্কুলেশন বাড়লেও বহুমুখী চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস কর্তৃপক্ষের। কারণ, কাগুজে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন বিজ্ঞাপনদাতারা, বিপরীতভাবে তারা অনেক বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন এর অনলাইন ভার্সনে।



যুক্তরাষ্ট্রেরই আরেক প্রভাবশালী বিশ্লেষক সাময়িকী দ্য আটলান্টিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।

সাময়িকীটি বলছে, সম্প্রতি সার্কুলেশনে সর্বোচ্চ উপার্জনের কথা জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। তবে তারা এ-ও জানিয়েছে, কাগুজে নিউইয়র্ক টাইমসে বিজ্ঞাপনের হার কমছে দ্রুতগতিতে, যেটাকে ধসও বলা চলে। অপরদিকে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইন গ্রাহক ও বিজ্ঞাপনদাতার হার।

প্রতিবেদনে জানা যায়, নিউইয়র্ক টাইমস কয়েক মাস পর পর তাদের সার্কুলেশন আয় ও বিজ্ঞাপনের হার নিয়ে বিশ্লেষণে বসে। সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাদের পাঠকরা কাগুজে পত্রিকাকে পছন্দ করছে ঠিকই, কিন্তু এই মাধ্যমটির প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন বিজ্ঞাপনদাতারা। অনলাইন আধিপত্যের যুগে অনেকটা অপছন্দেরই হয়ে পড়ছে কাগুজে নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০০০ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের মালিক টাইমস মিডিয়ার ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সার্কুলেশনের অবদান ছিল ২৬ শতাংশ। গত তিন মাসের হিসাব বলছে, তাদের ব্যবসায় সার্কুলেশনের অবদান দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশ। উপার্জনের এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রধান ভূমিকা রাখছে বিজ্ঞাপন।
 
আটলান্টিকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি সূচক চিত্রে দেখা যায়, ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নিউইয়র্ক টাইমসের সার্কুলেশন বেড়েছে অনেকটা সমান্তরাল গতিতে, বিজ্ঞাপনের হার (প্রিন্ট ভার্সনে) কমেছে নিম্নমুখী গতিতে, আর একেবারে ঊর্ধ্বমুখী ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার (অনলাইন পাঠক) বৃদ্ধির গতি।
 
বলা হচ্ছে, গত দশকেই নিউইয়র্ক টাইমস মিডিয়া গ্রুপের (দ্য টাইমস, দ্য ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, বোস্টন গ্লোব, অ্যাবাউট.কম ইত্যাদি) আয় ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়।
 
কী কারণে এমনটি ঘটছে ঐতিহ্যবাহী এ দৈনিকটির ক্ষেত্রে?

আটলান্টিকের প্রতিবেদন মতে, নিউইয়র্ক টাইমসের বিজ্ঞাপন আয়ের চিত্রকে দৈনিকটির প্রতিবেদনের প্রতিফলন মনে করা উচিত হবে না। কোনো সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনকেন্দ্রিক আয় কমে যাওয়াটা এখনও সর্বব্যাপী হয়ে ওঠেনি। তাছাড়া, নিউইয়র্ক টাইমস অবশ্যই তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে এখনও। তারা ভালো অবস্থানে রয়েছে সেটা বলতে হবে এ কারণে যে, গোটা যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞাপন শিল্পে পত্রিকা ব্যবসা এখন একেবারেই বাজে যাচ্ছে। পত্রিকাটিকে অবশ্য অনলাইনে পড়তে এখনও ৮ লাখ লোক অর্থ খরচ করতে প্রস্তুত।
 
আটলান্টিকের প্রতিবেদন বলছে, কোনো পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের পাঠকদের মতো অনলাইনের পাঠকরা অতোটা গুরুত্বপূর্ণ নন। কিন্তু ডেস্কটপ-স্মার্টফোনের মতো ডিভাইস খুলে পাঠকরা সংশ্লিষ্ট পত্রিকাটির অবস্থান নির্ধারণ করে দিচ্ছেন বলেই এ নিয়ে এখন ভাবতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

যে কারণে ভাত খেতে অর্থ লাগবে সেরকমই পত্রিকার ডিজিটাল বিজ্ঞাপন। তবে, ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গুগল, ফেসবুক, টুইটার ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ হস্তগতকরণের দৃশ্য যে কারোরই দুপুরের খাবারের অর্থ নিয়ে ভাবনার উদ্বেগ ঘটাতে পারে।

প্রতিবেদনটির মতে, মোবাইল-বিজ্ঞাপনের দুই তৃতীয়াংশই ফেসবুক ও গুগলের দখলে থাকছে এবং স্মার্টফোনের বিজ্ঞাপন বাজার ক্রমেই প্রসারিত হওয়ায় অনেক কিছু করার থাকলেও পরিবেশনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে।

আটলান্টিক মনে করে, একটি বিশেষ সাইট কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে খুব বেশি চিন্তার সুযোগ পায় না, কারণ তারা বিশেষ ‍মানের গ্রাহক থেকে বিশেষ মানের বিজ্ঞাপন পাচ্ছে। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের মতো ঐতিহ্যবাহী ও প্রভাবশালী পত্রিকাকেই যখন এতো বড় পরীক্ষায় পড়তে হলো তাহলে কী করণীয় দাঁড়াবে?
যেহেতু প্রতিবছর প্রতি হাজারে একশ’ করে অনলাইন ‍পাঠক বাড়ছে সেহেতু পত্রিকায় বিজ্ঞাপন হ্রাসের হার কমাতে কিংবা রুখে দিতে অনলাইনমুখী কিংবা অনলাইননির্ভর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।