ঢাকা, রবিবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

আরেকটি মাইলস্টোন...

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৪
আরেকটি মাইলস্টোন...

মাইলস্টোন...। কথাটি বাংলানিউজের চার বছর দুই মাসের পথ চলায় আরও একবার লেখা হলো।

দুই মিলিয়ন ফেসবুক বন্ধু বাংলানিউজকে আপন করে নিয়েছেন। রোববার দুপুরে এই নতুন মাইলফলকে পৌঁছায় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। অনলাইন মিডিয়ার এই সময়টিতে বাংলানিউজ তার অবস্থানকে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করে তুলছে। পাঠকপ্রিয়তার বিচারে বাংলানিউজই দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির অগ্রসরমান সংবাদমাধ্যম।

ফেসবুকের পরিসংখ্যান বলছে কেবল সামাজিক এই মাধ্যমটি থেকে বাংলানিউজ প্রতি দিন গড়ে ২ হাজার ১১৭ জন করে নতুন পাঠক পাচ্ছে। আর অ্যালেক্সা র‌্যাংকিংয়ের হিসাবে বাংলানিউজের মোট পাঠকের ২১ শতাংশ ফেসবুক থেকে আসে। সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে বাংলানিউজ নতুন পাঠক পাচ্ছে ১০ হাজার ৮০ জন করে।

ফেসবুকের বন্ধুরা দিনে অন্তত একবার ‍অনলাইনে বসলে সে হিসাবে বাংলানিউজ ফেসবুক থেকেই ২৪ ঘণ্টায় পায় ২০ ‍লাখ পাঠক। আর সেই অনুপাতে অন্যান্য পথে বাংলানিউজে প্রতিদিন আরও আসছে ৯৫ লাখ ২৩ হাজার পাঠক। সব মিলিয়ে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় বাংলানিউজের সাইটে ঢুকছেন এক কোটি ১৫ লাখ নিয়মিত পাঠক।

এই অগ্রগতি এবং পরিসংখ্যানের বিচারে ‍বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির অগ্রসরমান সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দৈনিকের অনলাইন সাইট, যার গড়ে প্রতিদিন ফেসবুক ফ্যান বাড়ছে ২০১৭ জন করে। বাংলানিউজের চেয়ে তা ১০০ জন কম। এই মাধ্যমটি পুরোপুরি অনলাইন নয়, দৈনিক সংবাদপত্রের বাই প্রোডাক্ট হিসেবে পরিচালিত হয়। আর এই সংবাদমাধ্যমটির সুনাম দৈনিক সংবাদপত্র হিসেবেই।
Menon_vai_2_
পরিপূর্ণ অনলাইন হিসেবে বাংলানিউজের পরের অবস্থানে যে সংবাদমাধ্যমটি সেটি বয়সে প্রায় তিনগুন বড় হলেও জনপ্রিয়তা অর্জনের দৌড়ে প্রায় অর্ধেক পিছিয়ে। ২০০৯ সালে ১৮ এপ্রিল ফেসবুকে যাত্রা শুরু করে ১৯৭৫ দিনে ওই অনলাইন ফ্যান পেয়েছে ২৩ লাখ ৭ হাজার ৯৯১ জন। প্রতিদিন গড়ে এর ফ্যান বেড়েছে ১১৬৮ জন করে। যা একই সময়ে বাংলানিউজের চেয়ে ৯৪৯ জন কম।

অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বাংলানিউজের পাঠক প্রিয়তা এখন বাড়ছে দ্রুততম গতিতে। রোববারের হিসেবে বর্তমানে প্রতিমিনিটে গড়ে ১০ জন করে নতুন পাঠক বাংলানিউজকে তার সংবাদমাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করছেন।

এই অর্জনের পেছনে বাংলানিউজের প্রতিটি কর্মীর মেধা ও পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। শুরু থেকে যারা যে অবস্থায় বাংলানিউজের হয়ে কাজ করেছেন তাদের তিল তিল অবদানেই আজকের এই মাইলফলক রচনা।

রোববার দুপুরে সে কথাই স্মরণ করলেন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, এই অর্জন বাংলানিউজের প্রতিটি কর্মীর। যারা এখন কাজ করছেন তাদের, যারা অতীতে অবদান রেখে গেছেন তাদেরও।

একটি ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং অনলাইন হিসেবে নাম কুঁড়াতে বাংলানিউজের কর্মীদের যে খাটুনি খাটতে হয় তা এখন সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে সময়ের চাহিদা হিসেবেই মনে করেন আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, এখন যুগটিই এই নিউ মিডিয়ার। যারা অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে তাদের সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার গড়তে পারবে। অনলাইনে যারা পারফর্ম করতে পারবে তারাই হয়ে উঠবে এই সময়ের যোগ্য সাংবাদিক।
Menon_Vai
এডিটর ইন চিফ এই দিনে বিশেষ করে কৃতজ্ঞতা জানান বাংলানিউজের দিকে যারা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের প্রতিও। বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলানিউজের আর্থিক শক্তি যারা দৃঢ় করেছেন তাদের সহায়তার কারণেই বাংলানিউজ পাঠকদের নিরন্তর সেবা দিয়ে যেতে পারছে, বলেন আলমগীর হোসেন।  

দৈনিক সংবাদপত্রগুলো টিকে থাকতে তাদের অনলাইনে জোর দিচ্ছে এটি একটি ভালো দিক। কিন্তু অনলাইনের দৌড়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন হিমশিম খাচ্ছে, সে কথা প্রায়শঃই শোনা যায়।

পরের দিন সকালে কেনো, এখন সকালের খবর দুপুরে আর দুপুরের খবর বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় বাসি হয়ে যায়। আর যে খবর সন্ধ্যায় জেনে গেছেন সেই খবর পরেরদিন সকালে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে পড়বেন তেমন আগ্রহ কারোরই থাকে না। বরং এখন ঘুম ভাঙ্গার পর হ্যান্ডহেল্ডে বিছানা ছাড়তে ছাড়তেই জেনে নিতে পারেন রাতে ঘুমের সময়টিতে কোথায় কি ঘটলো। গভীর রাতের ফুটবল ম্যাচটি যিনি দেখতে পারেননি তিনি আড়মোড়া ভেঙ্গেই জেনে নিতে পারেন ম্যাচের ফল। একটি চব্বিশ ঘণ্টার সংবাদ মাধ্যম হিসেবে বাংলানিউজ তার পাঠকের জন্য দায়িত্বের অংশ হিসেবেই এসব তথ্য দিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর।

আর এটি নিশ্চিত করতে যে কর্মযজ্ঞ তা বাংলানিউজের কার্যালয়ে যে কেউ একবার ঢুকলেই দেখতে পাবেন। চব্বিশ ঘণ্টার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশে কেবলই ‍বাংলানিউজ। গভীর রাত পর্যন্তই কেবল নয় সারারাত ধরেই এর বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা খবর পরিবেশনায় ব্যস্ত থাকেন। সদাসচল বাংলানিউজ পাঠকের প্রতিই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সারা দেশের প্রতিটি জেলায় গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় রয়েছে এর পেশাদার প্রতিনিধি। বিভাগীয় শহরগুলোতে ব্যুরো অফিস। দেশের বাইরে যেখানেই বাংলাদেশি প্রবাসিদের বাস সেখানেই রয়েছে বাংলানিউজের ব্যুরো কার্যালয় ও বিশেষ কার্যক্রম। আর সে কারণে পরিসংখ্যাণ মতে দেশের বাইরের পাঠকের সংখ্যায় বাংলানিউজের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিই নেই।   
Menon_vai_1

কেবল সরাসরি পাঠক নয়, পরোক্ষ পাঠক রয়েছে এর কয়েকগুন বেশি। যেসব সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজের খবর প্রকাশ করছে তাদের প্রতিও রয়েছে বাংলানিউজের কৃতজ্ঞতা। বাংলানিউজের কোনো খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তা শত শত সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রায়শঃই দেখা যায় কোনো কর্মসূচিতে বাংলানিউজের কর্মী একাই খবর সংগ্রহ করছেন। অন্যান্য মাধ্যমগুলো বাংলানিউজে প্রকাশিত খবরটির ওপর নির্ভরশীল থাকছে। বাংলানিউজ থেকে কাট-পেস্ট করে খবরগুলো পরিবেশিত হচ্ছে এসব মাধ্যমে।

ভেতরের খবর হচ্ছে- এই কারণে বিভিন্ন সামনের সারির সংবাদমাধ্যমও তাদের রিপোর্টিং টিম থেকে সদস্য কমিয়ে দিচ্ছে। এডিটিং টিমের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।  

তবে দুঃখের বিষয় কোনো কোনো মাধ্যম খবর প্রকাশ করছে বাংলানিউজের ক্রেডিট ছাড়াই। যা অনেকটাই চৌর্যবৃত্তি ও কপিরাইট আইনবিরোধী।

এ নিয়ে বাংলানিউজের কষ্ট রয়েছে, কর্মীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খবর সংগ্রহ করেন, ঝুকি নিয়ে ছবি তোলেন কিংবা তথ্যের জন্য ছোটেন কিন্তু এক শ্রেণির মিডিয়া কোনো কষ্ট ছাড়াই স্রেফ কপি পেস্ট করছে।

বাংলানিউজ এসব সংবাদমাধ্যমেরও বন্ধু হতে চায়। আর তা একমাত্র সম্ভব বাংলানিউজের ক্রেডিট দিয়ে যখন খবরগুলো পরিবেশিত হবে তখনই। আজ ফেসবুকে এই দুই মিলিয়নের মাইল ফলকের দিনে এটাই প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ সময় ১৮৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।