ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

মেলা শুধু বিকিকিনি নয়, তরুণদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
মেলা শুধু বিকিকিনি নয়, তরুণদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও ছবি: কাশেম হারুণ- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ল্যাপটপ মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: গ্যাজেট গ্যাং সেভেন’র প্যাভিলিয়নে দর্শনার্থীদের একের পর এক নতুন নতুন পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরছেন তরুণ কর্মীরা। দেখে মনে হবে সবাই যেন প্রতিষ্ঠানের দক্ষ কর্মী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। তারা ক্ষণস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
 
শুধু এ প্যাভিলিয়নে নয় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চলমান ‘সামার ল্যাপটপ ফেয়ার ২০১৬’ এর প্রতিটি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও আয়োজকদের স্বেচ্ছাসেবক দলের অধিকাংশ কর্মীই শিক্ষার্থী। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) এ মেলায় প্রবেশ করলে এসব ক্ষণস্থায়ী কর্মীদের ব্যবহার আর সেবায় মুগ্ধ হয়ে যাবেন যে কেউ।
 
এসব ক্ষণস্থায়ী কর্মীদের দিন তিনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগও বলে দিচ্ছে মেলা শুধু বিকিকিনি, উপহার, মূল্যছাড়, নতুন-পুরান পণ্যের সমাহার নয়। তরুণদের সাময়িক কর্মসংস্থানের সুযোগও বটে।
 
প্রায় পাঁচ বছর ধরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থী স্বপ্ননীল ইসলাম বিভিন্ন মেলায় স্বেচ্ছাসেবক ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষণস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ তরুণ শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, অল্প সময় হলেও বেশ পরিশ্রম করতে হয়। আর পারিশ্রমিকও ভালো। এতে হাত খরচের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাজের অভাবটাও মেটানো যায়।
 
স্বপ্ননীল জানান, মেলায় কাজ করার সুযোগ দিলেই সেখানে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও ভালো ব্যবহার করা হয়। ফলে কাজ করতে গিয়ে তেমন কোনো সমস্যায় পরতে হয় না।
 
তবে নানা সমস্যা আর প্রতিবন্ধকতায়ও পড়তে হয় তরুণ এসব শিক্ষার্থীদের। তারা জানালেন, অনেকেই সরাসরি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। এক্ষেত্রে যে মিডিয়া বা ব্যক্তির মাধ্যমে কাজের সুযোগ পান সে মাধ্যম বা ব্যক্তি বেশি টাকা নিয়ে যায়। তারা কঠোর পরিশ্রম করেও সঠিক পারিশ্রমিক পান না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী ইয়াসিন মজুমদার জানান, তিনি প্রায় তিন বছর ধরে বিভিন্ন মেলায় কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। মেলা আসলে তাই মনটাও ভালো হয়। অনেক সময়ে দেখা যায়, এ মেলার আয় দিয়ে পড়াশোনার নানা খরচ মেটানো সম্ভব হয়।
 
এসময় তিনি তাদের মতো কর্মীদের কাজের একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমের দাবি জানান। যেমন-হতে পারে গ্রুপভিত্তিক ফেসবুক বা মেলা আয়োজন করা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ঠিকানা। যেখানে তারা বায়োডাটা জমা দিয়ে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। তাহলে তাদের আয়ের অংশটা বেশ ভারি হবে।
 
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এসব তরুণ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই তারা মেলায় পার্টটাইমার হিসেবে কাজ করেন। সব শ্রেণির মানুষদের বোঝাতে হয় তাদের। সবমিলিয়ে বিষয়গুলোকে বেশ উপভোগই করেন।
 
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু কর্মী জানান, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে বেশ খারাপ ও রুঢ় আচরণ করা হয়। অনেক সময়ে তারা বাজে বাজে মন্তব্য করেন। তবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেই বেশ গতির সঙ্গেই কাজ করে যান তারা।
 
তিনদিনব্যাপী চলা এ মেলার আয়োজনে রয়েছে এক্সপো মেকার। এক্সপো মেকারের পরিচলন বিভাগের প্রধান ও এ মেলার সম্বয়ক নাহিদ হাসনাইন সিদ্দিকী বাংলানিউজকে বলেন, মেলা উপলক্ষে তাদের এক্সপো মেকারের অধীনেই প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী এ ক্ষণস্থায়ী কাজ করছেন।
 
মেলা উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের এমন ক্ষণস্থায়ী কাজের সুযোগকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, তাদের কাছে প্রায় সময়ই শিক্ষার্থীরা বায়োডাটা দিয়ে যোগাযোগ করেন। এবং সুযোগ থাকলে তারাও কাজে লাগিয়ে দেন। এবারের মেলায় প্রায় ৪০০ এর অধিক শিক্ষার্থী এভাবে ক্ষণস্থায়ী কাজ করছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
একে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।