ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বাঁশে তৈরি মোবাইল টাওয়ার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
বাঁশে তৈরি মোবাইল টাওয়ার বাঁশ দিয়ে তৈরি মোবাইল টাওয়ারের উদ্বোধন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: স্টিল বা অন্য কোনো ধাতব পদার্থের পরিবর্তে এবার বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হলো মোবাইল টাওয়ার। খটকা লাগলেও ঘটনা সত্যি। আর এ টাওয়ার কোনোভাবেই টেকসই, পরিবেশবান্ধব বা সাশ্রয়ের দিক থেকে কম নয়।

ইডটকো নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাঁশের তৈরি এ মোবাইল টাওয়ার উদ্ভাবনের পর তা পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপনও করেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) গুলশানের একটি অভিজাত হোটেল বাঁশের তৈরি টাওয়ারটির উদ্বোধনও করেছেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।


 
পরীক্ষামূলকভাবে টাওয়ারটি উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ির ছাদে স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে ইডটকো যৌথভাবে এ টাওয়ার উদ্ভাবন করে। এতে গ্রিন প্রকৌশল বিদ্যাকে কাজে লাগানো হয়েছে।
 
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে একদল গবেষক টেলিযোগাযোগ ‍অবকাঠামোর নকশা ও নির্মাণে গতানুগতিক স্টিলের অবকাঠামোর বিকল্প উপাদান হিসেবে বাঁশের সক্ষমতার ওপর গবেষণা কাজটি পরিচালনা করেন।
 
গবেষণা অনুযায়ী, কাঁচা বাঁশকে নমনীয় ও প্রসারণীয় শক্তি দিয়ে কংক্রিটের ওজন বহন করার উপযোগী করলে এটি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো তৈরিতে সক্ষম উপাদানে পরিণত হয়। যা দিয়ে তৈরি টাওয়ার ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাসে টিকে থাকতে পারে। যার আয়ুষ্কাল হয় ১০ বছর। আর তৈরি করতে সময় লাগে মাত্র ১২ দিন। গতানুগতিক স্টিলের টাওয়ার তৈরির চেয়ে এটি তৈরিতে কম জ্বালানি ব্যয় হয়। এতে একসঙ্গে আটটি অ্যান্টেনা যুক্ত করা সম্ভব, যার প্রতিটিই কার্যকর রাখা যায়।
 
ড. সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে এ ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এদেশের পরিবেশের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাঁশের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা যায়, বৈচিত্র্যময় গঠন ও বৈশিষ্ট্যের কারণে টেলিকম টাওয়ার তৈরির জন্য এটি ভালো উপাদান হতে পারে।
 
ইউটকো’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুরেশ সিধু বলেন, টেকসই প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁশকে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আরও কিছু বাঁশের তৈরি টাওয়ার স্থাপন করা হবে। এছাড়া ২০১৮ সালে যেসব দেশে বাঁশের সহজলভ্যতা রয়েছে, সেসব দেশে এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো হবে ভবিষ্যতে।
 
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বাঁশের তৈরি টাওয়ারের বিষয়টি খবর আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর আশাকরি বাঁশ উৎপাদনে ভিন্নমাত্রা যোগ হবে। উন্নত দেশগুলোতে স্টিলের পরিবর্তে বাঁশ-কাঠের ব্যবহার হয়। আমাদের দেশের প্রযুক্তিও সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হলে বাঁশ দিয়ে মানসম্পন্ন টাওয়ার তৈরি সম্ভব।
 
তিনি বলেন, বর্তমানে ফোরজি প্রযুক্তি এসেছে। এজন্য অনেক টাওয়ার নির্মাণ করতে হচ্ছে। প্রয়োজন হচ্ছে প্রচুর মেটালের, হিউজ ক্যাপিটালের। কিন্তু সে অর্থে বিনিয়োগ কম। তাই টাওয়ার তৈরি বাঁশের ব্যবহার একটি ভিন্নমাত্রা যোগ করবে বলে আশাকরি। কেননা এটি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব।
 
বাঁশের তৈরি টাওয়ার উদ্বোধনের এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ‍বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান, কমিশনার মো. জহুররুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
ইইউডি/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।