ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

কমপিউটারের মুখে ব্যথার কথা

আইসিটি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১১
কমপিউটারের মুখে ব্যথার কথা

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার ‘আমার ছেলেবেলা’য় লিখেছিলেন- পড়া ফাঁকি দিতে মায়ের কাছে পেটে ব্যথার মিথ্যা অযুহাত দিলে তাকে নিয়ে যাওয়া হতো পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক মিষ্টি হেসে ক্যাস্টর ওয়েল গিলিয়ে দিতেন।

ওই মিস্টি হাসির মানে ছিলো অভিজ্ঞ চিকিৎসক বুঝতে পারতেন এ ব্যথা সত্যিকারের নাকি পড়া ফাঁকি দেওয়ার অযুহাত। কিন্তু সে ছিলো তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া ধারনা।

পড়া ফাঁকি দিতে যারা এখনো সেই ব্যথার অযুহাত দিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ আরতো ফাঁকিবাজি সম্ভব হবে না! এবার গবেষকরা আবিস্কার করেছেন এমন এক কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা, সত্যিকারের ব্যথা হচ্ছে কী না? কিংবা কতটুকু ব্যথা হচ্ছে তা নির্ধারণ করা যাবে।  

কম্পিউটারটিই দিতে পারবে সেই ব্যথার মাত্রা সংক্রান্ত তথ্য। মার্কিন গবেষকরা বলেছেন এই ক্ষমতাসম্পন্ন করে তুলতে কম্পিউটারটিকে কিছু প্রশিক্ষণ দিতে হবে মাত্র।

ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা কম্পিউটার শিক্ষার সফটওয়্যার-এর সঙ্গে মস্তিষ্ক স্ক্যান করে পাওয়া উপাত্ত মিশিয়ে একটি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেছেন যা থেকে বের করা যাবে এই ব্যথা অনুভববের হিসাব নিকাষ।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিন ইন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ড. শন ম্যাককে বলেন, আমরা একটি মাত্র প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি তা হচ্ছে- কারো ব্যথা অনুভবের তথ্য জানতে নিউরোইমেজিং ব্যবহার করা যায় কী না? এ প্রশ্নের উত্তরটি আমাদের কাছে হ্যাঁবোধক হয়েই এসেছে। এখন পর্যন্ত চিকিৎসকরা একমাত্র রোগীর বক্তব্যের ওপরই নির্ভর করছেন, রোগী যদি বলেন ব্যথা হচ্ছে তাহলেই চিকিৎসক ধরে নেন ব্যথা হচ্ছে। তবে এই সফল গবেষণার পর কম্পিউটারই দেবে এই ব্যথা সংক্রান্ত তথ্য।

চিকিৎসা গবেষকরা এই আবিস্কারকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন; বিশেষত তাদের জন্য, যারা খুব ছোট কিংবা খুব বয়ষ্ক এবং নিজেদের ব্যাথার কথা নিজেরা বলতেও পারে না।

শন ম্যাককে বলেন, একটি ব্যথা নির্ধারণকারী যন্ত্রের জন্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানে দীর্ঘ অপেক্ষা ছিলো। মারাত্মক সব ব্যথার রোগগুলোর সঠিক চিকিৎসা দিতে এ প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেই মনে করেন ম্যাককে।

গবেষণায় আটজনের মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়। এসময় একবার তাদের শরীরে একবার গরম একটি বস্তু ছোঁয়ানো হয় এবং এরপর খুব গরম আরেকটি বস্তু ছুঁইয়ে দেওয়া হয়। এসময় তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রমগুলো নিয়েই পরে তৈরি করা হয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ব্যথা নিরূপণে সক্ষম।

শন ম্যাককে জানান এ পদ্ধতি ব্যথার ক্ষেত্রে অন্তত ৮০ ভাগ নিশ্চিত তথ্য দিতে পারে। এবং কেউ যদি ব্যথা অনুভব না করেও ব্যাথার কথা বলে তা নির্ধারণ করতে পারে।

তবে যেহেতু একটি নিয়ন্ত্রিত ও সীমিত ল্যাবভিত্তিক পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া গেছে তাই এখনই শেষ কথাটি বলে দিতে নারাজ ম্যাককে। কারণ ক্রোনিক ও অ্যাকিউট পেইনের পার্থক্যটি এর মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময় ১৪৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।