ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

থ্রিজি দ্বন্দ্বে বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়

ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১১
থ্রিজি দ্বন্দ্বে বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইলফোন অপারেটর ‘টেলিটক’কে এককভাবে পরীক্ষামূলক তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইলফোন সেবা (থ্রিজি) চালুর অনুমোদন দেওয়া নিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে।

সম্প্রতি বিটিআরসি তাদের নিয়মিত সভায় টেলিটককে এককভাবে এ লাইসেন্স না দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।



কিন্তু মন্ত্রণালয় টেলিটকে পরীক্ষামূলক থ্রিজি চালু করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আর বিটিআরসি নিয়ম মেনেই পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি চালুর অনুমোদন দিতে চাইছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বারবার থ্রিজি চালুর অনুমোদন দিতে চাপ দিয়ে আসছে।

এ বিষয়ে বিটিআরসি’র মহাপরিচালক (লিগ্যাল এ্যানালাইসিস) শহীদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা টেলিটকে পরীক্ষামূলক থ্রিজি চালুর বিপক্ষে কোনো অবস্থান নেয়নি। শুধু নিয়ম মেনে বেশ কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছি টেলিটকের কাছে। এটি খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। ’

এ বিষয়ে তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।  

তবে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরীক্ষামূলক থ্রিজি চালুর বিষয়ে চাপ থাকলেও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তবে বিটিআরসি এ অনুমোদন দেওয়ার পক্ষে।

এদিকে দেশের অন্য পাঁচ অপারেটর এ বিষয়ে অনেক দিন ধরে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তারা বলছে, সব অপারেটর যেন সমান সুযোগ পায়। তবে বিটিআরসি’র এ সিদ্ধান্ত  ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের সাথে সাংঘর্ষিক। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৬ সেপ্টেম্বর বিটিআরসিকে চিঠি দিয়ে টেলিটককে পরীক্ষামূলক থ্রিজি চালুর অনুমতি দিতে বলেছিল। এর আগেও তারা একবার বলেছিল, সে সময়ও বিটিআরসি এটি নাকচ করেছিল।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।  
 
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, থ্রিজির পরীক্ষামূলক অনুমোদন পাওয়া না গেলে সরকার বিপাকে পড়বে। কারণ, টেলিটকের  দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীন থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে। টেলিটককে থ্রিজি দিয়ে গ্রাহকের কাছে নতুন এ সেবা আগেভাগে উন্মুক্ত করার জন্যই চায়নার এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে।

গত ৩ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ১৯০১ কোটি টাকার এ প্রকল্পের ১৪৭৭ কোটি টাকাই আসছে ঋণ সহায়তা বাবদ। বাকি ৪২৪ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার। চীনের কাছ থেকে নেওয়া এই ঋণের সুদ অত্যন্ত বেশি। তাই সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আগে থ্রিজি চালু করতে না পারলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  

বিটিআরসি চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ বলেছেন, ‘ন্যায়সঙ্গতভাবে তারা এর অনুমোদন দিতে চান। তবে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, এটা  তাদের দ্বিপাক্ষিক বিরোধের জের হিসাবে হচ্ছে। গত বছর সংশোধন হওয়া টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী বিটিআরসির যে কোনো প্রস্তাবনা অনুমোদন দিয়ে থাকে মন্ত্রণালয়। এতে বিটিআরসি মনে করছে, তাদের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১১ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।