ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে

ঢাকা: স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করলে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত বাড়বে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি-৫) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক গবেষণা উপস্থাপনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

২৬ এপ্রিল বিশ্ব আন্তর্জাতিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি), ব্র্যাক, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও প্রিনিউরল্যাব যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আইসিটিতে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেন। এগুলো হলো- আইসিটি বিষয়টিকে সবার কাছে জনপ্রিয় করা, আইসিটিকে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে মূল্যায়ন করা এবং ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের বার্তা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য ২০৩০ সাল নাগাদ নারী-পুরুষের সমান অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা। তাই গ্রাম-শহরকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সরকার ডিজিটাইলাইজেশনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে।

আইটি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সচেতনতার পাশাপাশি বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে ‘আইটি বৃত্তি’ চালু করা যেতে পারে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রতি বছর ২০ লাখ তরুণ-তরুণী শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এ বিশাল সংখ্যক তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার আইটি খাতে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বছরে ৩ লাখ তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। ২০৩০ সালে এটা হবে বছরে সাত লাখ। পাশাপাশি আইটিতে মেয়েদের উৎসাহিত করতে আমরা প্রশিক্ষণে ২০-৩০ শতাংশ নারী সংরক্ষিত কোটা বরাদ্দ রেখেছে সরকার।

তবে এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে; যার মধ্যে সামাজিক বাধা, পারিবারিক নিষেধাজ্ঞা, প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞানের অভাব, যথাযথ উৎসাহ না থাকা এবং আইসিটি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বলেও তিনি মনে করেন।  

এর আগে,  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক গবেষণা উপস্থাপনায় এ তথ্য উঠে আসে। গবেষণাটি উপস্থাপন করেন বিআইআইডি-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ উদ্দিন আকবর। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৪ জন নারীর মধ্যে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে এটি পরিচালনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির হেড অব চাইল্ড প্রটেকশন তানিয়া নুসরাত জামান। ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেইঞ্জ, টেকনোলজি ও পার্টনারশিপ স্ট্রেংদেনিং ইউনিটের পরিচালক কেএএম মোর্শেদ ও  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হেড অব আইটি রবিউল আলম চৌধুরী নারীদের মধ্যে আইসিটি সহজতর ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন।

গবেষণার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আইসিটির ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ যদি ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮২ শতাংশে উন্নীত করা যায়, তাহলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হতো।  

এতে সরকারের ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা আরও সহজতর হতো।

গবেষণায় নারীদের সাক্ষাতকারভিত্তিক জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে তারা আইসিটি শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধানত তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন এগুলো হচ্ছে- আইসিটি শিক্ষায় মেয়ে ও যুব নারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করা; আইসিটি শিক্ষায় যথাযথ জ্ঞানের অভাব এবং কর্মক্ষেত্রে যৌক্তিক দক্ষতার অভাব।  

অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা নারীদের আইসিটি ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও সমতার সুযোগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য শিক্ষার কারিকুলামে আইসিটি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে আরও আধুনিকায়ন করা; এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নারীদের সক্রিয় অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা ও আইসিটি চাকরির ক্ষেত্রে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা,এপ্রিল ২৫, ২০১৮
আরএম/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।