ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

চলছে বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড

সাব্বিন হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১১
চলছে বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড

শুরু হয়েছে এবারের ‘বিসিএসআইসিটিওয়ার্ল্ড২০১১’ প্রদর্শনী। বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) উদ্যোগে ২১ নভেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর পর্দা উঠেছে।

আয়োজক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এবারের প্রদর্শনীর স্লোগান ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল শিক্ষা’। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ, তৃণমূল পর্যায়ে তা পৌঁছানো ও সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়াবাজারে ২১ নভেম্বর বিকেলে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ৫ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীর প্লাটিনাম স্পন্সর বাংলালায়ন কমিউনিকেসন্সের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মান্নান এবং এবারের আহ্বায়ক কাজী আশরাফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

এ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, এ সরকার ডিজিটাল হতে কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে চার হাজার ৫০০টি তথ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভূমিব্যবস্থা ডিজিটাল এবং ই-গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে এসেছে। দেশের সফটওয়্যার শিল্পোন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।

বিশেষ অতিথি বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানান, এরই মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ডিজিটাল হতে শুরু করেছে। গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়েও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষের জীবনমান ও কর্মপ্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এবং বৈচিত্র্য এসেছে।

এখন আর পাসপোর্ট কিংবা ভিসার জন্য আবেদন, বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণ, স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গ্রামের মানুষকে শহর কিংবা ঢাকায় অর্থ ব্যয় করে ছুটে যেতে হয় না। ই-তথ্যসেবা কেন্দ্রই পাওয়া যাবে সবকিছু। এরই মধ্যে সরকার দেশীয় ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ‘দোয়েল’ শিশুদের হাতে তুলে দিয়েছে। অচিরেই দোয়েলের বাণিজ্যিক বিপণন শুরু হবে।

বাংলালায়নের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নান জানান, আগামীতেও বিসিএসের সব কার্যক্রমের সঙ্গে বাংলালায়ন সংযুক্ত থাকবে। এরই মধ্যে ৩৩টি জেলায় বাংলালায়নের নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। অচিরেই এ কার্যক্রম দেশব্যাপী শুরু করা হবে।

এ অনুষ্ঠানে বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার জানান, আজকের এ সময়টি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সাধারণের সেতু বন্ধনের চেষ্টা। এ সময় তিনি দেশের ভূমিব্যবস্থায় ডিজিটাল পদ্ধতি প্রণয়ন, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ডিজিটালাইজেশন, কমপিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য আমদানিতে শুণ্য শুল্ক ও শুণ্য মূসকের ব্যবস্থা এবং আউটসোর্সিং থেকে প্রাপ্ত আয় সহজে গ্রহণের জন্য দেশে পেপল ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।

এ প্রদর্শনীতে সহায়তা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল। সূচনা থেকেই বিসিএসআইসিটিওয়ার্ল্ড দেশব্যাপী প্রযুক্তি বিকাশে কাজ করছে। বিসিএস সৃষ্টির পর হতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কাজ করছে। আর এ লক্ষ্যেই এবারের প্রদর্শনীর শ্লোগান ‘ডিজিটাল শিক্ষা ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি’।

এ প্রদর্শনীতে আগত দর্শকদের শিক্ষাভিত্তিক প্রযুক্তিপণ্যেয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর ফলে দর্শনার্থীরা শিক্ষায় ব্যবহারযোগ্য নিত্যনতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। এবারের প্রদর্শনী হবে দেশের সর্ববৃহৎ আয়োজন। সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

কারণ এবারই প্রথম প্রদর্শনীর সব তথ্য সাইটে পাওয়া যাবে। শুধু তথ্য নয়, প্রদর্শনীতে যাবতীয় পণ্য ক্রয়েরও ব্যবস্থা থাকবে সাইটে। যারা প্রদর্শনীতে আসতে পারবেন না তারা চাইলে ঘরে বসেই প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন। অনলাইনে প্রদর্শনীকে বিস্তৃত করার মাধ্যমে এবারের পরিসর বাড়ানো হবে।

এ প্রদর্শনীর আহ্বায়ক কাজী আশরাফুল আলম জানান, এবারে তথ্যপ্রযুক্তির প্রদর্শনীতে ৫০টি দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। প্রায় ৫০ হাজার বর্গফুটজুড়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে থাকছে ৭০টি স্টল এবং ৩০টি প্যাভিলিয়ন।

২১ নভেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর থেকে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। পরের দিন থেকে তা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।

আয়োজক সূত্র আরও জানিয়েছে, এবারের প্রদর্শনীর সমান্তরালে একটি জমকালো ওয়েব প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্যই প্রদর্শনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিসিএসআইসিটিওয়ার্ল্ড ওয়েব ফেয়ার’।

এতে অংশ নিয়ে প্রতিদিনই থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার জেতার সুযোগ। এবারই প্রথম কোনো প্রদর্শনীতে প্রাঙ্গনের অভ্যন্তরে থাকছে উৎসবমুখর ইভেন্ট কর্নার। আরও থাকছে সেলিব্রেটি শো, গুণীজন সংবর্ধনা, কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রোডাক্ট শো এবং কৌতুক পরিবেশনা।

বাংলাদেশে এবারই প্রথম ‘ডিজিটাল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা’ আয়োজন করা হচ্ছে। থাকছে সেমিনার, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ফ্রি ইন্টারনেট ও গেমিং, র‌্যাফল ড্র ছাড়াও নানা আয়োজন। এ ডিজিটাল প্রদর্শনী আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।

বাংলাদেশ সময় ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।