অনলাইনবিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানটি ফেসবুকের। নিত্যনতুন আকর্ষণীয় সেবা ক্রমান্বয়ে যুক্ত হওয়ায় ফেসবুকের ভক্ত সংখ্যা বেড়ে চলেছে সাফল্যের সঙ্গে।
অন্যান্য প্রসঙ্গ বাদ দিলেও সম্প্রতি আত্নহত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে বেশ কঠিনভাবেই। আর ফেসবুকও এই সমস্যা নিরসণে নিয়েছে নতুন ব্যবস্থা। ফেসবুক সদস্যদের মধ্যে যারা আত্নহত্যা প্রবণতায় ভুগছেন কিংবা নিজের জীবনের পরিসমাপ্তি করার ভাবনায় আছেন তাদের ভয়ঙ্কর এই পথ থেকে সরিয়ে নিতে ফেসবুক চালু করেছে নতুন একটি পদ্ধতি। বর্তমানে পদ্ধতিটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডিয়ান সদস্যদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে ফেসবুক।
ফেসবুকে যুক্ত এই টুলের কৌশল হচ্ছে ব্যবহারকারীদের করা কমেন্ট ও স্ট্যাটাসের মধ্য থেকে আত্নহত্যা সংক্রান্ত পোষ্টগুলোকে খুজে বের করা। আর অবিলম্ববে ঐসব পোষ্টদাতাদেরকে ইমেইল পাঠানো। যেখানে থাকবে একটি হটলাইন নাম্বার এবং একটি লিংক যার মাধ্যমে সেবাদাতাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করতে প্ররোচিত করা হবে। এছাড়া লিংকে ক্লিক করলে ক্রাইসিস কাউন্সিলের সাথে কথোপকথনের ব্যবস্থা আছে।
ন্যাশনাল সুইসাইড প্রিভেনশন লাইফলাইন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উক্ত সেবাগুলো দেয়া হবে একদম বিনামুল্যে এবং দিনের যে কোন সময়। এছাড়া গোপনীয়তাও রক্ষা করা হবে।
ফেসবুকের প্রধান নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা জো স্যুলিভান এক বার্তায় জানিয়েছেন, মানুষের দু:সময়ে নানাভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে লাইফলাইনের সাথে কাজ করতে পেরে আমরা খুবই গর্বিত বোধ করছি।
তিনি আরো জানান, আত্নহত্যা প্রতিরোধে লাইফলাইন দৃড়প্রতিজ্ঞ। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষকে দ্রুত এবং প্রয়োজনীয় সেবা দিতে প্রস্তুত যখন এটি তাদের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। আর অবিরামভাবে কাজের অগ্রগতি করা যাতে মানুষের জীবন রক্ষার্ কাজে এটি ফলপ্রসু হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সাল থেকে ক্যার্লিফোনিয়াভিত্তিক লাইফলাইনের সঙ্গে ফেসবুক কাজ করছে জানান লাইফলাইনের প্রকল্প পরিচালক জন ড্রপার। লাইফলাইন গড়ে প্রতিমাসে ৭০ হাজার কল পরিচালনা করে। তাই ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মধ্যে অনেকেই ফোনে কথা বলতে পছন্দ করেনা বলেও জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল রেজিনা ব্রেঞ্জামিনের পরিসংখ্যান মতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন প্রায় ১০০ জনের মত লোক আত্নহত্যা করে থাকে আর বছরে এসে সংখ্যাটি দাড়ায় ৩৬ হাজারের মত। তিনি আরো বলেন নতুন এই পদ্ধতিটি খুন ও আত্নহত্যা প্রতিরোধে ভুমিকা রাখবে।
তবে ফেসবুক এবং লাইফলাইনের মহতী এই উদ্যোগ কতোটা কার্যকরী হয় সেটা পরবর্তী বছরের পরিসংখ্যান সুস্পষ্ট করবে।