ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

করোনার মধ্যেও ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সম্ভব: পলক

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২০
করোনার মধ্যেও ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সম্ভব: পলক

ঢাকা: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে স্থবির অর্থনীতি। এর মধ্যেও ২০২৫ সাল নাগাদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সম পরিমাণ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা সরকারের। আর এই সময়ে দেশীয় উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপদের টিকিয়ে রাখতে নেওয়া হবে বিশেষায়িত নানান উদ্যোগ।

করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করার প্রেক্ষাপটে স্টার্টআপ, ই-কমার্স, সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার, আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংসহ দেশীয় আইসিটি খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত সংবাদ প্রকাশ করে বাংলানিউজ।  

আইসিটি খাতের বাজারে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও পেশাজীবীদের ক্যারিয়ারগত ঝুঁকির বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে সেসব প্রতিবেদনে।

এসব বিষয়ে সরকারের অবস্থান এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে টেলিফোনে সাক্ষাৎকার দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে এই ইন্ডাস্ট্রির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইসিটি উপদেষ্টা আর্কিটেকচার সজীব ওয়াজেদ জয় সার্বিকভাবে দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন যেখানে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা সবাই একটি পরিবারের সদস্য। আমরা সবাই মিলে এই পরিস্থিতি সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে মোকাবিলা কবো।
 
পলক বলেন, খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেবা কোনগুলো আমরা সেগুলো চিহ্নিত করছি। সেগুলোকে প্রাধান্য দিতে তাদের অর্থায়ন ও বিনিয়োগ করার কথা ভাবছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন সেখান থেকে সরল সুদে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাংকগুলো কত বেশি দরকারি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে পারে সে বিষয়টি দেখা হবে। আপনারা দেখবেন এই সংকটের মুহূর্তেও দেশব্যাপী পণ্যের সরবরাহ বেশ সফলভাবে অব্যাহত আছে। এরজন্য পিপিপি বিশেষ করে ইকমার্সগুলো কাজ করছে। ফলে ইকমার্সের প্রয়োজনীয়তা আমরা নতুন করে উপলব্ধি করছি। স্থানীয় বাজারে তাদের কীভাবে ম্যাক্সিমাইজ করা যায় সে দিকটিও আমাদের বিবেচনায় আছে।

দেশীয় স্টার্টাপ এবং আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রণোদনা থেকে সহায়তা পেতে আইসিটি খাতকে কীভাবে আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত করা যায় তার জন্য ইতোমধ্যেই আমরা অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। করোনার কারণে যে ক্ষতি হবে তা সম্পূর্ণ হয়তো পুষিয়ে নেওয়া যাবে না, কিন্তু দেশীয় আইসিটি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টাপগুলোকে কীভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে আনতে পারবো বলে আশা রাখছি।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিশ্ব বাজারে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণের রপ্তানি এবং ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি সম্ভব হবে বলেও মনে করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আইসিটি খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনের খুব কাছে আমরা। আমাদের যত কল সেন্টার আছে ৩৩৩ এবং অন্যান্য; এগুলো কিন্তু দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই পরিচালনা করছে। আমাদের যে লক্ষ্য তা অর্জনে একটু বিলম্ব হতে পারে কিন্তু অর্জিত হবেই। ২০২৫ সাল নাগাদ আমরা ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ আইসিটি পণ্য রপ্তানি করতে পারবো। একই সঙ্গে ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি করবো আমরা। করোনার কারণে অনেক পেশা যেমন হুমকিতে তেমনি নতুন নতুন পেশার চাহিদা কিন্তু তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের নতুন চাহিদা মোতাবেক আইসিটি কর্মীদের গড়ে তোলা হবে।

স্টার্টাপগুলোর আর্থিক সহায়তা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, স্টার্টাপ বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে স্টার্টাপদের সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে আমরা ৫০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। আইসিটি বিভাগের নিজস্ব সক্ষমতায় যেমন আইডিয়া প্রকল্প, স্টার্টাপ প্রকল্প, সফটওয়্যার ডিজাইন এবং সার্ভিস ডিজাইনের মতো জায়গাগুলোতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব কাজ পেন্ডিং আছে সেগুলোকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া, নতুন ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া এবং আসছে অর্থবছরেও আরও কত কাজ তাদের দিতে পারি সেগুলো খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে আমাদের এলআইসিটি বিভাগ কাজ করছে। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সারদের একটি পরিচয়পত্র দিয়ে তাদের ব্যাংক লোনের বিষয়টিও আমরা দেখছি। আরও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের উদ্যোক্তায় পরিণত করা এবং নতুন নতুন বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষিত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

দেশীয় আইসিটি খাত সংশ্লিষ্টদের পাশে সরকার সবসময় পাশে আছে বলেও আশ্বস্ত করেন সবশেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

 বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২০
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।