ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

প্রযুক্তি বিনিয়োগে বিল গেটসের আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১২
প্রযুক্তি বিনিয়োগে বিল গেটসের আহ্বান

বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নতুন এবং উপযোগী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি বিল গেটস বিশ্ব নেতাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। এ রকম বিনিয়োগ শুধু কোটি কোটি মানুষের জীবনই বাঁচাবে না, এর মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।



গেটস বলেন, নতুন এমন কোনো উদ্ভাবনীতে বিনিয়োগ করুন যাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। কারণ বিশ্বের নানা প্রান্তে কোটি কোটি মানুষ অনাহারে আছেন।

চিঠিতে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর উন্নতির হারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এ ধরনের প্রচেষ্টাগুলোর সাফল্য বিশ্বের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এনে দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে দরিদ্র জনসংখ্যার আনুপাতিক হার ৪০ ভাগ থেকে কমে গিয়ে ১৫ ভাগ বা ১০০ কোটিতে এসে ঠেকেছে।

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরও উন্নতি করা সম্ভব। তবে তা শুধু উদ্ভাবনী বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে করতে হবে। এ ধরনের বিনিয়োগ ক্ষুদ্র কৃষকদের বেশি খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করে। এভাবেই দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা মেটানো সম্ভব।

তিনি বলেন, আমাদের সামনে বিকল্প উপায় আছে। আপেক্ষিকভাবে কম অর্থ ব্যয় করে দরিদ্র কৃষকদের এবং তাদের পরিবারের খাদ্য সংস্থান করতে সাহায্য করতে পারি। এভাবে আমরা অবশ্যই এমন একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারি, যেখানে সবার বাঁচার অধিকার সমান।

অথচ আমরা এমন একটি জগতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি- যেখানে প্রতি ৭ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন প্রায় অনাহারে থাকছেন। অথচ সামান্য বিনিয়োগের মাধ্যমে গাছের মড়ক, এইডস প্রতিরোধ বা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পোলিও নির্মূলের মতো উদ্যোগ সহজেই বাস্তব করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কট সামগ্রিক সাহায্যের অঙ্গীকারকে প্রভাবিত করছে। তবে এ আর্থিক সাহায্যগুলো মানুষকে স্বনির্ভর করার স্বার্থেই দরকার হবে।

গত নভেম্বরে ফ্রান্সের কান শহরে অনুষ্ঠিত ‘জি-২০’ এর সম্মেলনে উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদনে বিল গেটস নতুন পন্থা ও বিনিয়োগের ওপর বিশেষ জোর দেন। কারণ এ কর্মপন্থাই ব্রাজিল, চীন এবং ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দ্রুতই উন্নত করে তুলছে।

দরিদ্রদের জীবনের উন্নতির জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর ক্রমবর্ধমান ভূমিকার কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। তার মতে, এর মাধ্যমেই দরিদ্র দেশগুলো অর্থ সাহায্যের নির্ভরতা থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পাবে।

তিনি জানান, ২০১২ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বিশেষ জোর দিবে পোলিও নির্মূলকরণ, যথাযথ শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এইডস প্রতিরোধ এবং পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতিসহ প্রভৃতি বিষয়ে।

গেটস ভ্যাকসিন ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডের পুরস্কৃতদের নামও এ চিঠিতে উল্লেখ করেন বিল গেটস। এবারের গেটস ভ্যাকসিন ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশের ডা. এস এম আমজাদ হোসেন। তার অভিনব উদ্ভাবনী কর্মপন্থা এবং বাংলাদেশের দুটি জেলায় গর্ভবতী নারীদের টিকা  প্রদানের হার বৃদ্ধি এবং নিবন্ধন করানোর সাফল্যের ব্যাপক প্রশংসা করেন বিল গেটস।

তিনি জানান, এটি একটি ক্ষুদ্র উদ্ভাবন মনে হতে পারে। কিন্তু কীভাবে একটি পুরোনো সমস্যাকে নতুন করে সমাধান করা সম্ভব, এটি তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।  

বাংলাদেশ সময় ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।