ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বাংলাদেশি-আমেরিকান সাইফুল খন্দকারের ‘ফ্রিবিপে’র ব্যবহার বাড়ছেই

কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১২
বাংলাদেশি-আমেরিকান সাইফুল খন্দকারের ‘ফ্রিবিপে’র ব্যবহার বাড়ছেই

নিউইয়র্ক : বাংলাদেশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ড. সাইফুল খন্দকার উদ্ভাবিত মোবাইল ওয়ালেট ‘ফ্রিবিপে’  তথ্য প্রযুক্তি জগতে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। আটলান্টার বাকহেড পিজা কোম্পানির গ্রাহকরা জানুয়ারি থেকে এ প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন।

 

একই সময়ে আরো ৬০টি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেছে ফ্রিবিপে সার্ভিস। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান ড. সাইফুল খন্দকার উদ্ভাবিত ‘ফ্রিবিপের মাধ্যমে কোন স্টোরে মূল্যহ্রাস দেওয়া হয়েছে তা জানা সম্ভব হচ্ছে এবং মূল্যহ্রাসের কুপন টেলিফোনে সংরক্ষিত হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট স্টোরে গিয়ে ক্যাশিয়ারের স্ক্যান মেশিনে টেলিফোন সেট ধরলেই মূল্যহ্রাসের কুপনের সাহায্যে ক্রেতা যাবতীয় ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন। দাম পরিশোধের জন্যেও ক্রেতাকে নগদ অর্থ কিংবা ক্রেডিট কার্ড বহনের প্রয়োজন হচ্ছে না।

ফ্রিবিপের মাধ্যমেই দাম পরিশোধিত হচ্ছে ক্রেতার অ্যাকাউন্ট থেকে।
আরেকটি বিষয়ে সহায়তা করে এ প্রযুক্তি। অর্থাৎ আগে থেকে জানা না থাকলেও যে স্টোরে এই প্রযুক্তির স্মার্টফোন-গ্রাহক ঢুকবেন- সেখানে মূল্যহ্রাস চলছে কোন কোন পণ্যের-সেটিও তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিচ্ছে।

ফ্রিবিপের অবিস্মরণীয় এ কার্যক্রমের তথ্য উপস্থাপন উপলক্ষে গত ২১ জানুয়ারি নিউইয়র্ক সিটির ঢাকা ক্লাবে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে ফ্রিবিপেতে বিনিয়োগকারীরা ছাড়াও কম্যুনিটির বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার লোকজনের সমাগম ঘটে।

প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে কার্যক্রম চলছে তাকে ত্বরান্বিত করতে ড. সাইফুল খন্দকারের এ উদ্ভাবন ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের মেধা সম্পর্কে প্রযুক্তি জগতের সুস্পষ্ট একটি ধারণা এসেছে।

এ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সৈয়দ কামরুল বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে মোবাইল-পেমেন্টকে বিক্রেতা ও ক্রেতার কাছে দৃশ্যত: করে তোলার মাধ্যমে ফ্রিবিপের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তিনি বলেন, ফ্রিবিপের ডিজাইন ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়াকে ২০১১ সালের সেরা মোবাইল ডিজাইনের অন্যতম হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

গতানুগতিক সফটওয়্যারের পাশাপাশি মৌলিক একটা কিছু উদ্ভাবনের চিন্তাভাবনা থেকে দীর্ঘ গবেষণা, তথ্যানুসন্ধান, নতুন প্রযুক্তির আগমন, ক্রেতার ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি, প্রযুক্তির স্বাভাবিক বিকাশ, সবকিছু বিবেচনা করে ইন্টারনেট, পেমেন্ট প্রসেসিং, স্মার্টফোন, ক্রেতাদের মানবিক চাহিদা, বিক্রেতাদের বৈষয়িক চাহিদার সংমিশ্রনে একটি মোবাইল ওয়ালেট (মানিব্যাগ) তৈরির সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত ফসল হচ্ছে ফ্রিবিপে।

অনুষ্ঠানে ড. সাইফুল বলেন, আমিই প্রথম বাংলাদেশি-  যার কষ্টের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্বের সেরা প্রসেসিং কোম্পানির একাদশতম কোম্পানি। যারা ২ লাখ চেইন স্টোর, এক হাজার ব্যাংকের পেমেন্ট প্রসেস করে। তাদের সঙ্গে ফ্রিবিপের চুক্তি হয়েছে।

সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও বাংলাদেশে ফ্রিবিপের সার্ভিস চালু হচ্ছে জুলাই থেকে। এশিয়ার আরো ৪টি দেশের কয়েকটি বড় কোম্পানির কার্যকর আলোচনা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় জানানো হয় গত দু’বছরের ব্যবধানে স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়েছে ৬৮%। মানুষ ক্রমেই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছেন। এমনি অবস্থায় ফ্রিবিপের ব্যবহার আকাশচুম্বি হতে বাধ্য।

বলা হয়, ফ্রিবিপের উদ্ভাবন করে ড. সাইফুল তথ্য প্রযুক্তি জগতে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচিত করেছেন। ফ্রিবিপের ব্যবহারকে সহজলভ্য করতে বাংলাদেশেও ২৭ তরুণ বিজ্ঞানী-কর্মী কাজ করছেন।

শিগগিরই বুয়েটের আরো ৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ড. সাইফুল জানান, ফ্রিবিপের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর কর্মকর্তার সংখ্যাও বাড়বে এবং তার ফলে বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে।

কারণ এটি হচ্ছে বাংলাদেশিদের মেধার ফসল।

বাংলাদেশ সময় ১২৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।