ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

ফেসবুকের সহায়তা চাইলেন ৩ মন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
ফেসবুকের সহায়তা চাইলেন ৩ মন্ত্রী

ঢাকা: ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর এবং ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের তিন মন্ত্রী।   তারা হলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এটুআই এর উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, মেটা (ফেসবুক) এবং আইটিইউ আয়োজিত ইনক্লুসিভ একসেস ফর ব্ল্যান্ডেড এডুকেশন ইন বাংলাদেশ শীর্ষক অনলাইনে প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠানে আলোচনাকালে তারা এই আহ্বান জানান বলে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মেটার গ্লোবাল হেড অব কানেক্টিভিটি অ্যান্ড একসেস পলিসি মনিকা দেশাই, আইটিইউয়ের স্পেশাল ইনিসিয়েটিভ গিগা চিফ অ্যালেক্স অং আলোচনায় অংশ নেন। এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটাল শিক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটাল রূপান্তরের বিকল্প নেই। এ জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল ডিভাইসের সহজলভ্যতা। আমাদের মতো দেশের জন্য সবগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এক ধাপে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর করাটা কঠিন বলে আমরা এখন ব্লেন্ডেড শিক্ষার পথ ধরে হাঁটছি। দুর্গম অঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত দ্রুতগতির ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ স্থাপন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দুর্গম ও প্রত্যন্ত চর-দ্বীপ অঞ্চলে সংযোগ প্রদান, ৫জির উদ্বোধন, দেশে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন এবং ডিজিটাল ডিভাইস সহজলভ্য করাসহ প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত কনটেন্ট প্রস্তুত করার ফলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কঠিন হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল সংযোগকে ডিজিটাল বাংলাদেশের ব্যাকবোন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যে সব দুর্গম অঞ্চলে বিশেষ করে দ্বীপ, চর, পার্বত্য অঞ্চল এবং হাওর এলাকা যেখানে অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগ পৌঁছানে সম্ভব নয় সে সব অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। জনগণের হাতের নাগালে ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে ডাকঘরসগুলিকে ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপন করা হয়েছে। দেশব্যাপী প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় আরও ১২ হাজার ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপনের কাজ আমরা শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে পাঠদানের লক্ষ্যে দুর্গম অঞ্চলের ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ক্লাস রুম করা হচ্ছে। কোভিডকালে শিক্ষার্থীদের অনলাইন পাঠ গ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা দেশের প্রায় ৯৮ ভাগ এলাকায় মোবাইল সংযোগ থ্রি-জি থেকে ফোর-জিতে উন্নীত করেছি।

মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট সহজলভ্য করার পাশাপাশি আমরা ডিজিটাল ডিভাইস সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে দেশে স্মার্টফোন কারখানা গড়ে তুলতে বিনিয়োগকারীদের প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করি। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ১৪টি মোবাইল কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা থেকে উৎপাদিত মোবাইল ফোন দেশের চাহিদার প্রায় শতকরা ৬৩ ভাগ পূরণ করছে। এসব যন্ত্র বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, ইন্টারনেটের মাসিক মূল্য সর্বনিম্ন প্রতি এমবিপিএস ২৮৫ টাকায় নামানো হয়েছিল। এখন সেটি এক দেশ, এক রেট ঘোষণার পর একশ টাকারও নিচে নির্ধারণ করা হয়েছে, এর আগে ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের মূল্য ছিলো ২৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে ২০০৮ সালে যেখানে আট লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, সেটি এখন ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে ৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ এর ব্যবহার এখন ৩ হাজার জিবিপিইস এ উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগা প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ ডিজিটাল সংযুক্তি সম্প্রসারণে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। সেই সফলতার পথ বেয়েই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দৃঢ় প্রত্যাশা পূরণে আমরা সফল হবই।

ফাইভজিতে বিস্ময়কর পরিবর্তন: আগামী মাসে (ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ফাইভ-জি প্রযুক্তি যুগে প্রবেশ করছে উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবটিক্স, ব্লকচেইন ইত্যাদি প্রযুক্তির অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে ফাইভ-জি। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প ও বাণিজ্যে বিস্ময়কর পরিবর্তন সূচিত হবে। এর ফলে ঢাকায় বসে চিকিৎসক ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্গম অঞ্চলের রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করতে পারবেন বলে মন্ত্রী দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।

এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বাংলাদেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য মেটা ও আইটিইউকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।

আর তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ফেসবুককে কেবল টেক্সট ব্রাউজিং ফ্রি না করে, ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টও ফ্রি করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০২১
এমআইএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।