ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দেশি ই-টেন্ডার বিদেশি ব্যবস্থাপনায়!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১২
দেশি ই-টেন্ডার বিদেশি ব্যবস্থাপনায়!

বাংলাদেশের ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনায়ি কাজ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এবিসি প্রোকিউর। এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে (www.abcprocure.com) এ দাবি জানিয়েছে।

এটি বাংলাদেশের ই-গর্ভমেন্টের কেনাকাটা (ই-জিপি) সংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালার পরিপন্থী।

ভারতীয় এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে বরাতে দাবী করে তারাই বাংলাদেশ সরকারের ই-টেন্ডারের জন্য সিপিটিইউ ওয়েবসাইটসহ সব প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করেছে।

সিপিটিউয়ের মহাপরিচালক অমূল্য কুমার দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, এবিসি প্রোকিউর ই-জিপির সাইটের সাব কনসালটেন্ট হিসেবে কিছু কাজ করেছে। তাদের অযৌক্তিক দাবির বিষয়টি জানার পর তাদের সাইটের এ লাইনটি ঠিক করতে বললে তারা তা পরিবর্তন করে দেয়।

তবে বাংলাদেশ সরকারের চাহিদা অনুযায়ী তারা সব কিছু তৈরি করছে এমন কথা সঠিক নয় বলেও জানান সিপিটিউয়ের মহাপরিচালক অমূল্য কুমার দেবনাথ। আবার এবিসি প্রোকিউরয়ের ওয়েবসাইটে গ্রাহক হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের লোগোটি ব্যবহার করা হয়েছে। এ (www.abcprocure.com/corporate/FeaturedMicroEprocurement.jsp) সাইটে ক্লিক করলে ই-জিপির সাইটটি দৃশ্যমান হয়। এখানে বাংলাদেশের লোগো দেওয়া আছে।

এ ব্যাপারে অমূল্য সরকার বাংলানিউজকে জানান, তিনি দ্রুত এ ভুল সংশোধনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু আইন এড়িয়ে কিভাবে সিপিটিইউ ভারতীয় এ প্রতিষ্ঠানটি এবিসি প্রোকিউরকে তাদের সমস্যা সমাধানের কথা বলেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞেরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলেকট্রনিক টেন্ডার বিষয়ে এবিসি প্রোকিউরয়ের তেমন কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। তাই তাদের সঙ্গে এমন চুক্তি করার প্রশ্নই আসে না।

এদিকে দেশের জাতীয় ই-গর্ভমেন্ট প্রোকিউর (ই-জিপি) পোর্টালেরই যেখানে উন্নত অনলাইন ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেখানে ভারতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের দাবি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দেশের স্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ তাদের সরকারি কেনাকাটা সংক্রান্ত নীতিমালার ব্যাপক সংস্কার করেছে। এ ছাড়া সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আইনের সঙ্গে একটি অবকাঠামোও গড়ে তুলেছে। বিভিন্ন কেনাকাটায় সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ, অর্থের উৎস ও প্রতিযোগিতার অনেক বড় ক্ষেত্র।      

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুরু থেকেই ইলেকট্রনিক প্রোকিউরমেন্ট বা ই-জিপির দেশে গ্রহণযোগ্যতা আছে। আর বাংলাদেশ দক্ষতার সঙ্গেই এর পরিচয় তুলে ধরতে পারছে। এ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পোর্টালটি চালু করলেও এখনও পুরো কার্যক্রমে যেতে পারেনি।

‘পাবলিক প্রোকিওরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট টু’ এর আওতায় বিশ্বব্যাংক এ ই-জিপি সিস্টেম উন্নয়নে অর্থায়ন করেছে। এটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আইএমইডি বাস্তবায়ন করছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এ চুক্তিটা আগে আমেরিকার ‘জিএসএস আমেরিকা ইনফোটেক লিমিটেড’ এর সঙ্গে করা হয়েছিল।

অন্যদিকে এবিসি প্রোকিউরয়ের ৩ রিংওয়ালা লোগোটা দেখতে বাংলাদেশের ই-প্রোকিউরয়ের লোগোর মতই। ফলে তা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারিদেরকে ভুল দিকনিদের্শনা দিতে পারে।

বাংলাদেশ সময় ২০৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১২

সম্পাদনা: সুমন মজুমদার, আবুল কালাম আজাদ, নিউজরুম এডিটর/সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।