মিয়ানমারের রাখাইন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) দাবি করেছে জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে অন্তত ১৫টি, প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহর এবং দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর ১৪২টি সামরিক চৌকি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
বুধবার ম্রাউক ইউ শহরের কোয়ে থাউং গির্জার কাছে আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া উত্তর রাখাইনের ম্রাউক ইউ, পাকতাও ও মংডু শহরে এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়াতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ চলছে।
এদিকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের আরও একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। জান্তাবিরোধী জোটের চলমান অপারেশন-১০২৭ এর অংশ হিসেবে শান রাজ্যজুড়ে হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহীরা। জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে হামলা সত্ত্বেও নমশান দখল করেছে টিএনএলএ বিদ্রোহীরা। এ সময় বিমান হামলার পাশাপাশি বিদ্রোহীদের অবস্থানে গোলাবর্ষণও করা হয়। ওই রাজ্যে জান্তা বাহিনীর ২৫০ টিরও বেশি ঘাঁটি দখল করেছে বিদ্রোহীরা।
সেনাবাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর শহরটির বিভিন্ন স্থানে ৬০ জান্তা সৈন্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়াও তাদের পরিবারের ২৯ সদস্যসহ ৩৬ সৈন্য-পুলিশকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির রাজনৈতিক দল এনএলডি নির্বাচনে জয়ের পর ক্ষমতায় তাদের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর ঠিক আগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়েছে দেশটির বেসামরিক জনগণ ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর। সম্প্রতি দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জোট গড়ে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করেছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি জোট গঠন করে গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে হামলা শুরু করে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামলার মুখে শুধু রাখাইন নয় চীন এবং ভারত সীমান্ত ঘেঁষা একাধিক রাজ্যের বেশিরভাগ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সামরিক জান্তা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় স্যাগাইং অঞ্চলের খামপাত শহরের দখলও এখন বিদ্রোহীদের হাতে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এমএম