তাইওয়ানে পেনশনের অর্থের জন্য বাবার মরদেহ লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুযায়ী, ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
গত বছরের নভেম্বরে ওই নারী তার বাড়িতে ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রবেশ করতে না দিলে কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। এ কারণে তাকে ৬০ হাজার নিউ তাইওয়ান ডলার জরিমানা করা হয়।
স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়িতে প্রবেশে ওই নারী ক্রমাগত অস্বীকৃতি জানাতে থাকেন। এতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। পুলিশ কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীর কাছে তার বাবার সম্পর্কে জানতে চান। তিনি প্রাথমিকভাবে দাবি করেন, তার বাবা নার্সিং হোমে রয়েছেন।
পুলিশ ওই নারীকে আরও চাপ দিলে গল্প বদলে ফেলেন এবং দাবি করেন, বাবাকে তার ভাই কাওশিউং শহর থেকে মূল ভূখণ্ড অর্থাৎ চীনে নিয়ে গেছে। পুলিশ তার দাবি তদন্ত করে এবং জানতে পারে, তার ভাই ৫০ বছর আগেই মারা গেছে। আর তার বাবার তাইওয়ান ছাড়ার কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
এরপরও ওই নারী নতুন করে মিথ্যে গল্প শোনান। তিনি বলেন, মূল ভূখণ্ডে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। সেখান থেকে তিনি কোনো মৃত্যুসনদ নিতে পারেননি।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই নারীর বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা, একটি দেহ সাধারণত কঙ্কালের অবশেষে পচে যেতে এক থেকে দুই বছর সময় নেয়।
সামরিক বাহিনীতে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই নারীর বাবা কাজ করেন। পদ ও চাকরি-ইতিবৃত্ত অনুযায়ী তিনি মাসিক পেনশন পেতেন। তাইওয়ানে সামরিক বাহিনী চাকরি করা নাগরিকেরা চাকরি শেষে সাধারণ মাসে গড়ে ৪৯ হাজার ৩৭৯ নিউ তাইওয়ান ডলার পেয়ে থাকেন।
তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান চলছে। কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে যে, ওই নারী তার বাবার মরদেহ লুকিয়ে রাখার বাইরেও গুরুতর কোনো অপরাধ করেছেন কি না।
তাইওয়ানের আইন অনুযায়ী, মরদেহের ক্ষতি করা, ফেলে যাওয়া, অবমাননা করা বা চুরি করার অপরাধে বড় অঙ্কের জরিমানাসহ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সরাসরি আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত থাকলে সাজা দেড়গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
পুলিশি তত্ত্বাবধানে ওই নারী বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২
আরএইচ