গোটা বিশ্বের নজর এখন ভারতের দিকে। আর ভারতের নজর নীতীশ কুমারের দিকে।
গতকাল মঙ্গলবার (৪ জুন) ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর এই নীতীশ হয়ে উঠেছেন ‘কিংমেকার’। তার জনতা দল-ইউনাইটেডের (জেডি-ইউ) পাওয়া ১২টি আসনের ওপর ঝুলে আছে এনডিএ জোটের সরকার গঠনের ভাগ্য।
এক্ষেত্রে প্রায় সমান গুরুত্ব পাচ্ছেন অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও। তার তেলুগু দেশম পার্টি বা টিডিপি পেয়েছে ১৬টি আসন। এই আসনগুলোও বিজেপির জোট এনডিএ সরকার গড়তে পারবে কি পারবে না, তার নির্ধারক হয়ে উঠেছে।
দুজনে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবেন, তা দেখতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে রাজনীতির ময়দানে নীতীশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডু দুজনেই কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিজেপি সরকারের বিরোধী অবস্থানে ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে দুজনেই ভেড়েন ক্ষমতাসীনদের জোটে।
নীতীশ কুমারের জোট ছাড়ার বা বদলের লম্বা ইতিহাস রয়েছে। তিনি গত এক দশকে পাঁচবার জোট বদলেছেন। এমনকি বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের নেতৃত্বে গত বছরের জুলাইয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গড়ার সময় অগ্রভাগে ছিলেন নীতীশ। সেসময় তিনি বিহারে তার দল জেডি-ইউকে বিভক্ত করার চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সেসব ভুলে ফেব্রুয়ারিতে বিজেপির এনডিএতে যোগ দেন নীতীশ।
চন্দ্রবাবু নাইডু এখন এনডিএর অংশ হলেও ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে ওই জোট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। জোট ছাড়ার পর নানা অবিশ্বাস ও অনাস্থার কথা বলেছিলেন তিনি। তবে সবশেষ নির্বাচনের আগে মান ভেঙে আবার যোগ দেন বিজেপির জোটে।
যদিও বিজেপি থেকে বলা হচ্ছে, নীতীশ ও চন্দ্রবাবু দুজনেই সরকার গঠনে এনডিএকে লিখিত সমর্থন দিয়েছেন। তবে রাজনীতি যেহেতু প্রতি মুহূর্তে চিত্রবদলের খেলা, সেজন্য সরকার গঠন পর্যন্ত নীতীশ ও চন্দ্রবাবুর মনোভাব বুঝে চলতে হবে বিজেপিকে।
শুধু তা-ই নয়, নীতীশ ও চন্দ্রবাবুর সমর্থনে বিজেপি জোট সরকার গঠন করলেও প্রতিটি ক্ষণ এ দুজনের মন মানিয়ে চলতে হবে নতুন সরকরকে। কারণ তারা অনাস্থা জানালেই নতুন সরকার সংসদে পর্যাপ্ত আসন সংকটে পড়ে যাবে, যার ফলে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে।
এদিকে, দিল্লির রাজনৈতিক মহলের খবর, ফল ঘোষণার পর থেকেই ইন্ডিয়া ব্লকের নেতারা চন্দ্রবাবু ও নীতীশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা হাল ছাড়ছেন না।
যদিও এ দুই নেতার দল ইন্ডিয়া জোটে ভিড়লে তারা সরকার গঠন করতে পারবে কি না নিশ্চিত নয়। তবু বিজেপিকে আটকানোই তাদের লক্ষ্য বলছেন জোটের নেতারা।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য সমস্ত জোট শরিককে একত্রিত করে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৪
এমএম/এইচএ/